এদিন নিরাপত্তা পরিষদের সম্মেলনে তিনি বলেছেন, সিরীয় শরণার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি সাহায্য দেয়া আন্তর্জাতিক সমাজের জরুরি দায়িত্ব। তিনি বলেন,
ধনী দেশগুলোর দরজার সামনে হাজার হাজার শরণার্থীকে মৃত দেখতে পাওয়া খুব দুঃখের ব্যাপার। চূড়ান্ত বিপজ্জনক না হলে, কেউ নিজেদের বাচ্চাদের এ ধরনের সংকটে ফেলে না। যদি আমরা প্রকৃতপক্ষেই সংঘর্ষ দমন করতে না পারি, তাহলে অন্তত নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে, শরণার্থীদের জন্য সাহায্য করা এবং বৈধ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা উচিত।
জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দুই লাখ বিশ হাজারেরও বেশি মানুষ সিরিয়ার সংঘর্ষে নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ১০ লাখ। পাশাপাশি প্রায় ৭৬ লাখ লোক গৃহহারা হয়েছে এবং প্রায় ৪০ লাখ লোক বিদেশে পালিয়ে গেছে। সিরিয়ায় বর্তমানে ৪ লাখ ৪০ হাজার মানুষ সংঘর্ষ কবলিত অঞ্চলে আটকা পড়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার চরমপন্থি 'আইএস' এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যদের সরাসরি সঠিক খবর পাওয়ার জন্য সিরিয়ার শরণার্থী অঞ্চলে সফর করার আহ্বান জানিয়েছেন জোলি। তিনি বলেন,
আমি নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সিরিয়ার শরণার্থী শিবির পরিদর্শন এবং শরণার্থী সমস্যা দেখার আহ্বান জানাই। শরণার্থীরা নিরাপত্তা পরিষদে আসতে পারে না। সুতরাং তাদের কাছে আপনারা যান।
জোলি বলেছেন, তিনি ইরাক, জর্ডান, লেবানন, তুরস্ক ও মাল্টাসহ ১১টি সিরীয় শরণার্থী অঞ্চলে গিয়েছেন। এর আগে, প্রায় ১০ বছর ধরে জোলি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই-কমিশনের শুভেচ্ছা দূত ছিলেন। ২০১২ সাল থেকে বিশেষ দূত হিসেবে কাজ করছেন।
এদিন নিরাপত্তা পরিষদের সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক উপ-মহাসচিব ভ্যালেরি আমোস বলেছেন, সিরিয়ার মানবিক সংকট দিন দিন গভীর হচ্ছে। সংঘর্ষে হতাহত এবং গৃহহারা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তিনি বলেন,
নিরাপত্তা পরিষদের কাছে সিরিয়ার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে দেয়া রিপোর্টে আমি যেটা উল্লেখ করেছি সেটা হলো, একের পর এক সহিংসতা। জাতিসংঘ প্রস্তাবকে পদদলিত করে একের পর এক সহিংসতা হচ্ছে। যদিও নিরাপত্তা পরিষদে সিরিয়া সংক্রান্ত ৩টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, তবুও সংঘর্ষের ওপর কেউ এখনও মনোযোগ দেয়নি। নিরীহ বেসামরিক নাগরিক হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।
এদিন এক চেয়ারম্যান বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়া সংঘর্ষ কবলিত বিভিন্ন পক্ষকে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে, সিরিয়ার সংঘর্ষ আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য বর্তমানে সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা। এটি আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর বিরাট হুমকি ডেকে এনেছে।
নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, সিরিয়া সংঘর্ষ বন্ধের জন্য বিভিন্ন পক্ষের উচিত অবিলম্বে গত বছরের তিনটি প্রস্তাব কার্যকর করার পাশাপাশি মানবিক ত্রাণ বাড়ানো, জরুরি প্রয়োজনীয় মানবিক সাহায্য দূরবর্তী ও সংঘর্ষ কবলিত অঞ্চলে পাঠানো।