Web bengali.cri.cn   
বিশ্ব পর্যটন শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যত
  2015-04-27 15:24:50  cri

গত ২০ এপ্রিল স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে শেষ হয় 'বিশ্ব পর্যটন সম্মেলন, ২০১৫'। ৪০টিরও বেশি দেশের সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, বিনিয়োগকারী এবং পর্যটন সংস্থার প্রতিনিধিসহ প্রায় ৭০০ জন এ সম্মেলনে অংশ নেন।

বিশ্ব পর্যটন শিল্প পরিষদ এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল: 'পতন ও পুনর্নির্মাণ'। অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা বিশ্ব পর্যটন শিল্পের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। তাদের আলোচনায় বিশেষভাবে স্থাপন পায় পর্যটন খাতে অবকাঠামো নির্মাণ, জনসম্পদ বিনিয়োগ এবং নীতিমালা।

২০১৪ সালে বিশ্ব পর্যটন খাতে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩.৫ শতাংশ। বিশ্ব পর্যটন শিল্প পরিষদের অনুমান অনুসারে, ২০১৫ সালেও প্রবৃদ্ধির এ ইতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া, চলতি বছর বিশ্বের জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান ৩.৭ শতাংশ বাড়বে। তার মানে, পর্যটন শিল্প অব্যাহতভাবে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাবে।

২০১৫ সালে গোটা বিশ্বের জিডিপিতে পর্যটন শিল্পের আনুমানিক অবদান দাঁড়াবে ৭.৮৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা বৈশ্বিক জিডিপির প্রায় দশ শতাংশ। এ ছাড়া, এ বছর এ খাত ২৮ কোটি ৪০ লাখ নতুন কমসংস্থান সৃষ্টি করবে, যা সব খাতে সৃষ্ট সম্ভাব্য মোট কর্মসংস্থানের ৯.৫ শতাংশ।

সম্মেলনে জাতিসংঘের অধীনস্থ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা জানায়, ২০১৪ সালে সারা বিশ্বে পর্যটকের মোট সংখ্যা ৪.৭ শতাংশ বেড়ে ১১০ কোটিতে দাঁড়ায়। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা ৩ থেকে ৪ শতাংশ বাড়তে পারে। ১৫ মার্চ প্রকাশিত এ সংস্থার উপাত্ত অনুযায়ী, ২০১৪ সালে বিশ্বের পর্যটকরা থাকা, খাওয়া, বিনোদন ও কেনাকাটার ক্ষেত্রে ব্যয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া, পর্যটন খাত থেকে গেল বছর সবচে বেশি মুনাফা করেছে ইউরোপ। এ খাতে অর্জিত মোট বৈশ্বিক আয়ের প্রায় ৪১ শতাংশই গেছে ইউরোপে। এর পরই আছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং আমেরিকার স্থান। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকান দেশগুলো পর্যটন খাত থেকে অপেক্ষাকৃত কম আয় করেছে।

বিশ্ব পর্যটন শিল্প পরিষদ জানায়, ২০১৪ সালে বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের মধ্যে চীনা পর্যটকরা সবচে বেশি অর্থ ব্যয় করেছেন। তাদের ব্যয় আগের বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়ে ১৬,৫০০ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়ায়। এ ক্ষেত্রে চীনাদের পরেই আমেরিকান পর্যটকদের স্থান। গত বছর পর্যটন খাতে তাদের ব্যয় আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বেড়ে ১১,২০০ কোটি মার্কিন ডলার দাঁড়ায়। অন্যদিকে, রুবলের মূল্যহ্রাসের প্রভাবে রুশ পর্যটকদের ব্যয় কমে যায়। তাদের ব্যয় ৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৫০০০ কোটি মার্কিন ডলারে।

বিশ্ব পর্যটন শিল্প পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডেভিড স্কাউসিল (David Scowsill) বলেন,

"বিশ্ব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পর্যটন শিল্পের ভূমিকা লক্ষণীয়। এ খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধি সার্বিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির তুলনায় বেশি এবং এ খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে তুলনামূলকভাবে বেশি। আমাদের বার্ষিক জরিপ অনুসারে, বিগত ২০ বছরের মধ্যে ১৯ বছরই পর্যটন শিল্পে উন্নয়নের প্রবণতা ছিল প্রবল। বিশ্ব অর্থনীতিতে যখন অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছিল, তখনও পর্যটন শিল্প স্থিতিশীলভাবে উন্নত হয়েছে। অবশ্য আগামী দশ বছর সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলো যদি প্রতিভাবান কর্মীদের দ্বারা এ খাত পরিচালনার নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন না-করে, তবে পর্যটন শিল্পে কর্মসংস্থান ১ কোটি ৪০ লাখ হ্রাস পাবে। সে ক্ষেত্রে বৈশ্বিক জিডিপি কমে যাবে ৬১০০০ কোটি মার্কিন ডলার।"

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040