Web bengali.cri.cn   
'এক অঞ্চল এক পথ' প্রকল্পের মাধ্যমে 'বন্ধুবৃত্ত' গড়ে তোলা সম্ভব
  2015-04-23 19:42:51  cri
বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি চীনের উত্থাপিত 'এক অঞ্চল এক পথ' প্রকল্পের মাধ্যমে 'বন্ধুবৃত্ত' গড়ে তোলা সম্ভব। আর এ লক্ষ্যকে সামনেই রেখে খোদ চীনের উদ্যোগে 'এক অঞ্চল এক পথ' সংক্রান্ত চিন্তাধারার মাধ্যমে এক সমৃদ্ধ সামুদিক 'বন্ধুবৃত্ত' গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রশান্ত মহাসাগর থেকে দক্ষিণ চীন সাগর হয়ে ভারত পেরিয়ে ইউরোপ পর্যন্ত এই বিশাল পথের বিস্তৃতি। এই পথের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে উন্নয়নের নতুন সুযোগ আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ চিন্তাধারার উত্থাপন করেছেন। চীন সরকার গত মার্চ মাসে 'এক অঞ্চল এক পথ' ও 'একুশ শতাব্দির সামুদ্রিক সিল্ক রোড' নির্মাণ সংক্রান্ত এই প্রস্তাব নির্ধারণ করে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, একুশ শতাব্দির সামুদ্রিক সিল্ক রোড চীনের ছিন ও হান রাজবংশের সময় থেকেই চালু ছিলো। এ রোড চীন এবং এশিয়া-ইউরোপের বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের মূল উপায় হিসেবে পরিচিত। প্রাচীনকালে এ পথের মাধ্যমেই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের দেশগুলোর সাথে চীনের বানিজ্য পরিচালিত হতো। এ পথেই বিভিন্ন দেশ বানিজ্য করতে সম্পদসমৃদ্ধ চীনে প্রবেশ করতো। বর্তমানের আধুনিক ও বিশ্বায়নের যুগে এ রোডের পরিকল্পনায় নতুন নতুন বিষয় সংযুক্ত হয়েছে। এ রোডকে অত্যাধুনিকভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

সামুদ্রিক সিল্ক রোড বর্তমান যুগে একটি অত্যাধুনিক পরিকল্পনা। সামুদ্রিক সিল্ক রোডটি সমুদ্রের মধ্য দিয়ে বিশ্বের সামুদ্রিক সহযোগিতার সূচনা সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেছেন চীনের জাতীয় সমুদ্র অধিদপ্তরের সামুদ্রিক উন্নয়ন কৌশল একাডেমীর পরিচালক লিউ ইয়ান।

আসলে এ উদ্যোগ উত্থাপনের এক বছরের মধ্যেই সামুদ্রিক বন্ধুবৃত্তের প্রাথমিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে চীন, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও গ্রীসসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে সামুদ্রিক বন্দর নির্মাণ ও অন্যান্য কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়াও চীন প্রতিবেশী রাষ্ট্র থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারত ও শ্রীলংকাসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সামুদ্রিক সহযোগিতা বেশ জোরদার করেছে।

মনে করা হচ্ছে সামুদ্রিক সিল্ক রোডের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবে চীন ও আসিয়ানের সার্বিক সামুদ্রিক সহযোগিতার তাত্পর্য রয়েছে। ২০১৫ সালে চীন-আসিয়ান সামুদ্রিক সহযোগিতা বর্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। চীন আসিয়ানের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সামুদ্রিক অর্থনীতি, সামুদ্রিক যোগাযোগ, প্রযুক্তিগত গবেষণা ও পরিবেশ সুরক্ষা, সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং সামুদ্রিক সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতা চালিয়ে আসছে।

মনে করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন দেশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ বন্ধুবৃত্ত অব্যাহতভাবে বড় থেকে বড় হচ্ছে। সহযোগিতার ক্ষেত্রও আরও বিস্তৃত হয়ে উঠছে।

এই 'বন্ধুবৃত্ত'কে আরো সম্প্রসারিত ও প্রসারিত করতে সম্প্রতি হাইনানা প্রদেশের বোয়া শহরে অনুষ্ঠিত 'বোয়া এশীয় ফোরাম'-এ চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের সদস্য ইয়াং চিয়েছি বলেছেন, সামুদ্রিক অর্থনীতি উন্নয়ন করা এবং সামুদ্রিক অর্থনৈতিক উত্পাদন অঞ্চল নির্মাণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন বন্দরে পাশ্ববর্তী শিল্প অঞ্চল, সামুদ্রিক প্রযুক্তি সহযোগিতা অঞ্চল এবং সামুদ্রিক জনশক্তি প্রশিক্ষণ ঘাটি নির্মাণ করা দরকার। এর ফলে শুধু চীন নয়; সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সামুদ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের সম্ভাবনা থাকে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সামুদ্রিক অর্থনীতির লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ২০১৪ সালে চীনের সামুদ্রিক অর্থনীতির পরিমাণ ছিলো ৫ ট্রিলিয়ন ৯ শ ৯৩ বিলিয়ান ৬ শ মিলিয়ন ইউয়ান। এই অংক আগের বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। সামুদ্রিক অর্থনীতির পরিমাণ জিডিপি'র ৯ দশমিক ৪ শতাংশ।

আসলে সামুদ্রিক বন্ধুবৃত্ত শুধু চীনের জন্য অনুকূল নয়, বরং এ পথ সংশ্লিষ্ট দেশগুলো জন্যও ব্যাপক সুযোগ বয়ে আনবে। এ প্রসঙ্গে চীনের শাংহাই সমুদ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক হান সিং ইয়ো বলেন, ২১ শতাব্দির সামুদ্রিক সিল্ক রোড নির্মাণ করার জন্য প্রথমত সামুদ্রিক ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসা জরুরী। এর পর পথটির সংশ্লিষ্ট চীনা ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ দেশ ও বিদেশে এই পথকে সংযুক্ত করার সুবিধাগুলো কাজে লাগাবেন। তাতে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সীমাহীন সুযোগ চলে আসবে বলে তিনি মনে করেন। (ওয়াং তান হোং/মান্না)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040