Web bengali.cri.cn   
সার্বিকভাবে 'এক অঞ্চল এক পথ' বরাবর দেশগুলোর সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে চায় চীন
  2015-04-17 19:15:25  cri

সম্প্রতি চীন সরকার 'এক অঞ্চল এক পথ' দৃষ্টি ও কার্যক্রম প্রকাশ করেছে। এ সম্পর্কে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, মন্ত্রণালয় যথাসাধ্য দেশগুলোর সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদার করার পাশাপাশি পারস্পরিক বাজার উন্মুক্তকরণের প্রচেষ্টা চালাবে। এ সময় কিছু বিলাসদ্রব্যের দাম কমানো সম্পর্কে মন্ত্রণালয় মনে করে, এটা ভোক্তাদের বিদেশে কেনাকাটার অনুকূল হবে। ফলে আরো বেশি অধিবাসী বিদেশে না গিয়েও ন্যায্য দামে বিলাসী পণ্য কিনতে পারবে।

২৮ মার্চ চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে 'যৌথভাবে সিল্ক রোড অর্থনৈতিক পথ এবং ২১ শতকের সামুদ্রিক সিল্ক রোড নির্মাণ জোরদারে দৃষ্টি ও কার্যক্রম' প্রকাশ করেছে। এতে বিস্তারিতভাবে 'এক অঞ্চল এক পথ' নির্মাণের পরিপ্রেক্ষিত, নির্মাণের পদ্ধতি এবং নির্মাণে অর্জিত ফলাফল ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শেন তানইয়াং এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'এক অঞ্চল এক পথ' নির্মাণ সম্পর্কে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪ ক্ষেত্রে কাজ করবে। এর মধ্যে রয়েছে মধ্য-এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে নতুন অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল নিয়ে আলোচনা করা। শেন তানইয়াং বলেন,

সিল্ক রোড সংক্রান্ত দেশগুলোর সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়ানো, পারস্পরিক বাজার উন্মুক্তকরণ ও সম্প্রসারণ, বাণিজ্যিক সুবিধার মান উন্নত করা, নতুন বাণিজ্যিক পয়েন্ট খুঁজে বের করা হবে। সীমান্ত অর্থনীতির সহযোগিতামূলক অঞ্চল, সীমান্তপার অথনৈতিক সহযোগিতামূলক অঞ্চল এবং বৈদিশিক আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতামূলক অঞ্চলসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর করে দ্বিমুখী পুঁজি বিনিয়োগের মাত্রা বাড়ানো হবে। বিভিন্ন রূপে আঞ্চলিক ও উপাঞ্চলিক সহযোগিতা গভীরতর করা, ইতিবাচকভাবে নতুন অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল নির্মাণ নিয়ে আলোচনা করা হবে। যেমন, আমরা মধ্য এশীয় অঞ্চলের সঙ্গে আলোচনা করছি। The joint economic and Trade Commission অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য যৌথ কমিশন ও প্রশাসনিক কমিশনসহ বিভিন্ন সহযোগিতামূলক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে, বরাবর দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করার পাশাপাশি কিছু সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক প্রকল্প ত্বরান্বিত করা হবে, যাতে দ্রুতগতিতে দেশের জনগণ উপকৃত হয়।

'এক অঞ্চল এক পথ' নির্মাণ ছাড়া আঞ্চলিক অর্থনীতির একীকরণ বাইরে মহলের আগ্রহের বিষয়। গত বছর এপেক-এর বিভিন্ন অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর নেতারা 'এপেক এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল পেইচিং রোড ম্যাপ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিতকরণ' অনুমোদন দিয়েছেন। সম্প্রতি শেষ হওয়া বোয়াও এশিয়া ফোরামে অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল প্রথমবারের মতো আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

শেন তান ইয়াং বলেছেন, বিভিন্ন পক্ষ এশিয়া ও প্যাসিফিক অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের নির্মাণকে কেন্দ্র করে অনেক মূল্যবান দৃষ্টিভঙ্গী ও প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। তিনি বলেন,

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এপেকের প্রথম উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সম্মেলন চলাকালে, বিভিন্ন পক্ষ 'এশিয়া ও প্যাসিফিক অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের যৌথ কৌশল গবেষণার পরামর্শ দলিল' গৃহীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে ২১টি অর্থনৈতিক গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত যৌথ কৌশলগত গবেষণা গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়া ও প্যাসিফিক অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের যৌথ কৌশলগত গবেষণা শুরু হয়েছে। এপেকের বিভিন্ন পক্ষ সময়মতো ২০১৬ সালের নেতাদের সম্মেলনের আগে যৌথ কৌশলগত গবেষণা সম্পন্ন করার পাশাপাশি নেতাদের কাছে প্রস্তাব দেয়ার আশা করি আমরা। চীন এপেকের অন্যান্য বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে এশিয়া ও প্যাসিফিক অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল বাস্তবায়ন জোরদারে ভূমিকা রাখতে চায়।

সম্প্রতি ফ্রান্সের শানেলসহ ইউরোপের বিলাসী ব্র্যান্ড একে একে অভ্যন্তরীণে পণ্যদ্রব্যের দাম কমাতে শুরু করেছে। কিছু অঞ্চলে ক্রেতা দীর্ঘ সারিবদ্ধ হয়ে দোকানে পণ্য ক্রয় করার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। শানেল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এবারের দাম কমানোর হার ২০ শতাংশে পৌঁছেছে। এর লক্ষ্য হলো বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে দামের পার্থক্য সমন্বয় করে, চূড়ান্ত পার্থক্য ৫ শতাংশে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এ সম্পর্কে শেন তান ইয়াং বলেন, দেশি-বিদেশি দামের পার্থক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, চীনা বাজারে বিদেশি ব্র্যান্ডের মূল্য নীতি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শ্যনেলের চীনের মূলভূভাগে ইতিবাচক দাম কমানোকে স্বাগত জানায়। শেন তান ইয়াং বলেন,

আমরা বিশ্বাস করি এবং আশা করি বিদেশে পণ্য কেনা আগের চেয়ে সহজ হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অব্যাহতভাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে নীতিগত সমস্যা নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণ করবে। লক্ষ্যবস্তু নীতি ও ব্যবস্থা নিয়ে দেশের অধিবাসীরা দেশের দরজা থেকে বের না হয়ে যুক্তিসঙ্গত দামে উচ্চপর্যায়ের পণ্যদ্রব্য কেনার চেষ্টা চালাবে, যাতে আরো বেশি বিদেশি পণ্য কেনা যায় এবং অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা সম্প্রসারণ করা যায়।

চলতি বছরের দু'টো অধিবেশনে বাণিজ্যমন্ত্রী কাও হু ছেং চীনা পর্যটকের বিদেশে পণ্য কেনার কারণ নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। এতে রয়েছে তুলনামূলকভাবে উঁচু কর, বিশেষ করে পণ্যভোগ কর; অভ্যন্তরীণ উঁচু প্রচলন খরচ ও লজিস্টিক খরচ এবং চীনে বিদেশি ব্র্যান্ডের মূল্য নীতি।

প্রেমা/তৌহিদ

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040