Web bengali.cri.cn   
চীনের বিখ্যাত রক শিল্পী ওয়াং ফেং এবং তার গান
  2015-03-04 18:36:10  cri

 


আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব চীনের বিখ্যাত রক শিল্পী ওয়াং ফেং এবং তার কয়েকটি বিখ্যাত গানের সাথে।

শুরুতেই জানিয়ে রাখি, ওয়াং ফেং বিয়ে করতে যাচ্ছেন। মাস খানেক আগে ওয়াং ফেং চীনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী চাং জি ইকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং মিস চাং প্রস্তাবে রাজি হন।

এবার একটু পেছনে ফিরে তাকাই। ১৯৭১ সালের ২৯ জুন ওয়াং ফেং পেইচিংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তার বেহালার প্রতি ঝোঁক ছিল। স্নাতক হওয়ার পর তিনি চীনের জাতীয় ব্যালে গ্রুপের উপ শীর্ষ বেহালাবাদক হিসেবে কাজ করেন। পরে অবশ্য তিনি বেহালাবাদকের কাজ ছেড়ে দেন এবং কালক্রমে একজন পেশাদার কণ্ঠশিল্পীতে পরিণত হন। তিনি নিজে অনেক সুন্দর সুন্দর গান রচনাও করেছেন।

আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতে শোনাবো 'বসন্তকাল' শীর্ষক তার একটি জনপ্রিয় গান। গানের কথাগুলো বাংলায় অনুবাদ করলে মোটামুটি এমন দাঁড়াবে: অনেক বছর আগের বসন্তকালের কথা মনে পড়ছে/ তখন আমার ক্রেডিটকার্ড ছিল না, ছিল না গরম পানির সরবরাহসমৃদ্ধ নিজের বাসা/ তখন আমার সঙ্গী ছিল কেবলই একটি পুরাতন গিটার, কিন্তু তখন জীবন ছিল আনন্দময়/ রাস্তায়, সেতুর নিচে কিংবা কৃষিক্ষেতে দাঁড়িয়ে নিজের পছন্দের গান গাইতাম/ যদি কোনোদিন বুড়ো হয়ে যাই, নির্ভর করার মতো কেউ না থাকে আমার; তখন আমাকে ওই বসন্তকালের কথা স্মরণ করিয়ে দিও/ আর যখন আমি মারা যাবো, আমাকে সমাহিত করো এই বসন্তকালেই...

এ গানটি চীনে অতি জনপ্রিয় ও বিখ্যাত। যদিও গানের কথা ও সুর করুণধর্মী, কিন্তু শহরে বসবাসকারী অনেকেরই মনের কথা বর্ণনা করা হয়েছে এতে। প্রিয় শ্রোতা, এখন যে গানটি আমরা শুনবো, সেটির শিরোনাম 'পেইচিং, পেইচিং'। পেইচিংয়ে জন্মগ্রহণ করায়, এ শহরটির প্রতি ওয়াং ফেংর একটা বিশেষ টান বরাবরই ছিল। তিনি তার প্রিয় শহরকে নিয়ে গান করেছেন। গানের কথাগুলো এমন: যখন আমি এ শহরের বিভিন্ন রাস্তায় হাঁটি, আমার মন কখনোই স্থির হতে পারে না/ ইঞ্জিংয়ের শব্দ ও আওয়াজ ছাড়াও আমি হয়তো এ শহরের হৃত্স্পন্দন শুনতে পাই/ আমি এখানে হাসি, এখানে কাঁদি; এখানেই বাঁচি, এখানেই মরি/ আমি এখানে প্রার্থনা করি; এখানেই খুঁজি, এখানেই হারাই/ পেইচিং, পেইচিং, যেদিন আমি মারা যাবো, আশা করি তোমার বুকেই আমার শেষ ঠিকানা হবে/ তোমার বুকে আমি নিজেকে অনুভব করতে পারি, তোমার বুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অনেক জিনিস আমি দারুণ ভালোবাসি...

পরের গানটি একটি প্রেমের গান। গানের নাম 'তুমি আমার প্রিয় মেয়ে'।

আচ্ছা, বন্ধুরা, ওয়াং ফেংয়ের গানগুলো শুনতে কেমন লাগছে? তাঁর বিশেষ কন্ঠের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তাই না? তো, পরের গানের নাম 'বেঁচে থাকা'। এটি আমার প্রিয় গানগুলোর অন্যতম। গানের কথা বাংলায় অনুবাদ করলে মোটামুটি এমন হয়: কতো লোক চলাফেরা করে, অথচ তারা অবরুদ্ধ/ কতো লোক বেঁচে আছে মৃতের মতো/ কতো লোক ভালোবাসে, অথচ তারা বিচ্ছিন্ন/ কতো লোক হাসিমুখে চোখের অশ্রু লুকায়/ কে জানে আমরা শেষ পর্যন্ত কোথায় যাবো? কে বুঝতে পারে জীবন কী?/ কোনো অজুহাতে বেঁচে থাকবো, নাকি উড়ে যাবো দুই ডানা মেলে?/ আমি কিভাবে বেঁচে থাকবো?....

পরের গানের নাম 'যখন আমি তোমাকে মিস করি'। বোঝাই যাচ্ছে, এটি একটি প্রেমের গান। ওয়াং ফেংয়ের কন্ঠ ভারী হলেও, গানের কথাগুলো শুনলে বোঝা যায় তিনি অনেক নরম মনের মানুষ। কী আছে এই গানে? অনুবাদ করলে কথাগুলো দাঁড়াবে এমন: সেদিন আমি সূর্যাস্ত উপভোগ করার সময় পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল এক জোড়া প্রেমিক-প্রেমিকা দেখেছি/ তখন হঠাতই মনের গল্প চোখের সামনে ভেঁসে ওঠে; আমার চোখের অশ্রু বৃষ্টির মতো ঝড়ে/ কাল রাতে আমি বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে আবারো ফিরে গেছি অতীতে; আবারো কেঁদেছি/ কমপক্ষে দশ বছর আমি কাঁদিনি; কমপক্ষে ১০টি গান আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছে/ তবে এখন আমি তখনই কাঁদি, যখন তোমাকে মিস করি...

এখন আমরা শুনবো 'সুন্দর দুনিয়ার অনাথ' শীর্ষক একটি গান। এটি একটি দুঃখের গান। গানের কথাগুলো এমন: কেঁদো না প্রিয়তমা, আমি বিশ্বাস করি, দু'জন একসঙ্গেই মারা যাবো/ কেঁদো না গ্রীষ্মের গোলাপ, সবকিছুই অতীত হয়/ ঐ দেখো বাইরে গাড়িগুলো চলছে, দূরের উজ্জ্বল বাতিটা যেন আমাদের স্বপ্ন/ আমার প্রিয় এ রাতে আমরা একসঙ্গে নাচি....

প্রিয় শ্রোতা, গান শুনতে শুনতে সময় ফুরিয়ে এলো। অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে, বন্ধ করতে হবে গানের ঝাঁপি। তবে যাবার আগে শেষ গানটি শুনিয়ে যাই। মিষ্টি এই গানটির শিরোনামও মিষ্টি: 'আমি যে তোমাকে এতো ভালোবাসি'।

প্রিয় শ্রোতা, আপনাদের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা আর শুভ কামনা জানিয়ে আজকের সুরের ধারায় এখানেই শেষ করছি। আবার কথা হবে, শোনা হবে গান। যাইচিয়ান। (সুবর্ণা/আলিম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040