Web bengali.cri.cn   
মুক্তার কথা-১৩ ডিসেম্বর ২০১৪
  2015-02-15 18:56:20  cri


সুপ্রিয় বন্ধুরা, আপনারা শুনছেন সুদূর পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান 'মুক্তার কথা'। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের বন্ধু মুক্তা।

প্রিয় বন্ধুরা, ভারতের একশ যুবকের একটি প্রতিনিধিদল ২৫ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চীন সফর করে গেছেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমি প্রথমে আপনাদেরকে এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন শোনাবো।

ভারতের একশ যুবকের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধিদলটি চীনের পেইচিং, শানতং ও শাংহাই সফর করে। ভারতীয় যুবকরা স্থানীয় সরকার কার্যালয়, সাংস্কৃতিক ঘাঁটি ও যুবসংস্থার কার্যালয় এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কমিউনিটি পরিদর্শন করে।

সাংস্কৃতিক যোগাযোগ হল দুটি দেশের মৈত্রী ও পারস্পরিক আস্থা জোরদার করার গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। ২০০৬ সাল থেকেই দু'দেশ নিয়মিত বিরতিতে যুবদল বিনিময় করে আসছে। এ ধারা দু'দেশের যুবকদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সমঝোতার সুযোগ সৃষ্টি করছে। গত সেপ্টেম্বরে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভারত সফর করেন। তখন দু'দেশের নেতারা ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর একশ যুবকের একটি করে দল পরস্পরের দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৫ সাল হল ভারতের পর্যটন বর্ষ এবং ২০১৬ সাল হল চীনের পর্যটন বর্ষ।

ভারতীয় যুব প্রতিনিধিদলের প্রধান ও ভারতের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব রাজিব গুপ্তা বললেন,

(রে ১)

'যুবকরা হল দেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ উপাদন। এ ধরণের তত্পরতার মাধ্যমে দু'দেশের যুবকদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়ে, সম্পর্ক উন্নত হয়। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে দু'দেশে অধ্যয়নরত পরস্পরের শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। দু'দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সহযোগিতার ব্যাপক সুযোগও রয়েছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, তার সরকার ভারতে চীনা শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়, যাতে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হয় ও দেশের যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ে। চীন ও ভারত বিশ্বের দুই বড় দেশ হিসেবে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এগুলে বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।'

ভারতের তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ের রাজিথ চান্দ্রন প্রথমবারের মতো চীন সফরে আসেন। তিনি বলেন,

(রে ২)

'চীনে আসার আগে আমি চীনা বৈশিষ্ট্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জেনেছি এবং কনফুসিয়াসের বই পড়েছি। সফরে আমি কনফুসিয়াসের জন্মস্থানও পরিদর্শন করেছি। আমি চীনের ইতিহাস সম্পর্কে জেনেছি এবং গত ত্রিশ বছরে চীনের দ্রুত উন্নয়ন সম্পর্কে জেনেছি। আমি আশা করি, ভারত চীন থেকে অভিজ্ঞতা নেবে।'

প্রতিক্ষা কাশি ভারতীয় প্রতিনিধিদলের একজন সদস্য। তিনি একজন নৃত্যশিল্পী। অবশ্য, এর আগেও তিনি চীন সফর করেছেন। তিনি বললেন,

(রে ৩)

'এ নিয়ে দ্বিতীয়বার আমি চীনের এলাম। এবারের সফর আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সুন্দর। প্রতিবেশী দেশের সংস্কৃতি জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চীনা যুবসমাজের সাথে মিশে আমি অনেককিছু শিখেছি।'

বর্তমানে চীন-ভারত উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ ক্রমান্বয়ে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। রাজনৈতিক ও কৌশলগত পারস্পরিক আস্থাও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। দু'দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সার্বিকভাবে উন্নত হচ্ছে। প্রতিনিধিদলের প্রধান ও ভারতের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এল. কে. গুপ্তা বলেন, যুব সমাজ হচ্ছে দেশের প্রধান অবলম্বন এবং দু'দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বিশেষ দূত। তিনি আরো বলেন,

(রে ৪)

'ভারত ও চীন হল বিশ্বের দু'টি বড় ও প্রাচীন দেশ। দু'দেশের সাংস্কৃতিক ও আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ সুদীর্ঘকালের। দু'দেশের অর্থনীতিও অনেক ক্ষেত্রে পরস্পরের পরিপূরক। একবিংশ শতাব্দী হল এশিয়ার শতাব্দী। আমরা বিশ্বাস করি, দু'দেশ শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে চলে একসাথে উন্নত হবে।'

গান

আচ্ছা, বন্ধুরা, আপনারা শুনছিলেন ভারতীয় যুব প্রতিনিধিদলের চীন সফর সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন। এখন আপনাদের চিঠিপত্রের পালা।

বাংলাদেশের রংপুর জেলার শাহানাজ পারভিন আমাদেরকে চারটি প্রশ্ন করেছেন। তাঁর চারটি প্রশ্ন হল: চীনের শীতলতম স্থান কোনটি? চীনের উষ্ণতম স্থান কোনটি? চীনের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় কোন জায়গায়? চীনে সবচেয়ে বেশি তুষারপাত হয় কোন জায়গায়?

আচ্ছা, বন্ধু শাহানাজ পারভিন, প্রথমে আপনাকে চিঠি লেখা এবং প্রশ্ন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। এখন আমি আপনার প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি। চীনের শীতলতম স্থান হল সিনচিয়াং উইগুর জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কেকেতুহাই (可可托海)। অঞ্চলটি ফুইউন জেলার আর্থাই পাড়ারে অবস্থিত। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২০০ হাজার মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এখনকার গড় তাপমাত্রা মাইনাস ২.১৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আর শীতকালে এখানকার তাপমাত্রা মাইনাস ৩৫ থেকে মাইনাস ৪৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে আসে। একবার এখানকার চাপমাত্রা মাইনাস ৫১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল। আর চীনের উষ্ণতম স্থানও সিনচিয়াংয়ে অবস্থিত। জায়গাটির নাম তুর্ফান। চীনে তুর্ফানকে 'আগুন জেলা' নামে ডাকা হয়। সারা বছরে এখানে বৃষ্টিপাত হয় গড়ে মাত্র ১৬.৭ মিলিমিটার। চীনের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় তাইওয়ান প্রদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত হুও শাওলিয়াও স্থানে। ১৯১২ সালে এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৮৪০৯ মিলিমিটার। প্রতি বছর এখানে গড়ে বৃষ্টিপাত হয় ২১৪ দিন। চীনের সবচেয়ে বেশি তুষারপাত কোথায় হয় নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল। তবে তিনটি জায়গায় তুষারপাত অনেক বেশি হয়। এ তিনটি জায়গা হল: সিনচিয়াং উত্তরাঞ্চলের আর্থাই পাহাড়ি অঞ্চল, থিয়ানশান পশ্চিমাঞ্চল এবং হেলংচিয়াং প্রদেশ ও চিলিন প্রদেশের সংযুক্ত অঞ্চলে অবস্থিত শুয়াংফেং বন। আচ্ছা, বন্ধু শাহানাজ পারভিন, আরেকবার আপনাকে প্রশ্ন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার ইন্টারন্যাশনাল রেডিও ডিএক্স ক্লাবের সভাপতি মানিক মাহমুদ তার চিঠিতে লিখেছেন, ২০১২ সালের নভেম্বরে সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির ১৮তম কংগ্রেসের প্রথম পুর্ণাঙ্গ অধিবেশনের সাধারণ সম্পাদক ও সিপিসির কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান চীনের মহামান্য প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর তাজিকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা এবং ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরের ফলে চীনের সাথে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সম্পর্ক আরো উন্নত হবে বলে আশা করি। সময় উপযোগী সফরের জন্য মহামান্য প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি মুক্তা আপুর কাছে জানতে চাচ্ছি, মহামান্য প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বা চীনের কোনো প্রেসিডেন্ট কি, কোনো দিন পাকিস্তান এবং আফগানিস্থান সফর করেছেন? যদি সফর করে থাকেন, তাহলে দয়া করে বলবেন কত সালে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান সফর করেছেন।

বন্ধু মানিক মাহমুদ, চিঠি লেখার জন্য ধন্যবাদ জানাই। এখন আমি আপনার প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি। পাকিস্তান হল চীনের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র। চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও ২০০৬ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান সফর করেছিলেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়েরও গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান সফর করার কথা ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য সফর স্থগিত করা হয়। আর চীনের কোনো প্রেসিডেন্ট আফগানিস্তান সফর করেননি। আপনাকে প্রশ্ন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

প্রিয় শ্রোতা, এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের

সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনারা আমাদের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও আনন্দ পেয়ে থাকেন, তাহলে মনে করবো আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। আপনাদের জন্যই আমাদের সকল প্রচেষ্টা ও আয়োজন। আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং শুনতে থাকুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। আর হ্যাঁ, আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না।

আমাদের সঙ্গে থাকুন, আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন আর আপনার যে-কোনো মতামত বা প্রশ্ন পাঠিয়ে দিন চিঠি বা ই-মেইলের মাধ্যমে। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা হচ্ছে ben@cri.com.cn এবং আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানা হল caiyue@cri.com.cn। 'মুক্তার কথা' অনুষ্ঠান সম্পর্কিত ইমেইল আমার নিজস্ব ইমেইল ঠিকানায় পাঠালে ভালো হয়। আজ তাহলে এ পর্যন্তই। আশা করি, আগামী সপ্তাহের একই দিনে, একই সময়ে আবার আপনাদের সঙ্গে কথা হবে। ততোক্ষণ সবাই ভালো থাকুন, আনন্দে থাকুন। (ছাই/আলিম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040