0211edu
|
তো বন্ধুরা, এখন তাহলে শুরু করা যাক শিক্ষা সম্পর্কিত খবর, কেমন?
নতুন পরিস্থিতিতে দরিদ্র অঞ্চলের শিশুদের উন্নয়নে নবজাতকের স্বাস্থ্যের মান উন্নতি করা, শিশুর পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, চিকিত্সা ও স্বাস্থ্য রক্ষা জোরদার করা এবং বিশেষ শিশুদের প্রশিক্ষণ ও যত্নের ওপর গুরুত্ব দেয়াসহ বিভিন্ন কাজে বিশেষ সহায়তা দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে চীন সরকার। চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয় ৩০ জুলাই এ খবর প্রকাশ করে।
সম্প্রতি চীন সরকার 'চীনের দরিদ্র অঞ্চলের শিশু উন্নয়ন কার্যক্রম ২০১৪-২০২০' প্রকাশ করেছে। এ কার্যক্রমে দরিদ্র অঞ্চলের শিশুদের উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে, যাতে সেখানকার শিশুদের জীবনযাপন ও উন্নয়নের অধিকার নিশ্চিত করা যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দরিদ্র অঞ্চলের শিশুদের উন্নয়নে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়। শিশু স্বাস্থ্য খাতে চীন দেশের ৬৮০টি দরিদ্র জেলার গর্ভবতী মায়েদের জন্য বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রকল্প চালু করেছে। আর শিশুদের পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প ৩৪১টি জেলায় চালু করা হয়। গ্রামাঞ্চলের বাধ্যতামূলক শিক্ষা ও পুষ্টি উন্নয়ন পরিকল্পনা মোট ৩.২ কোটি শিক্ষার্থীর জীবনে কল্যাণ বয়ে এনেছে।
শিশু প্রশিক্ষণ প্রকল্পে চীন সরকার ১০ বিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ দিয়ে গ্রামাঞ্চলে মোট ৮৩০০টি বোর্ডিং স্কুল মেরামত ও নির্মাণ করেছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে দরিদ্র অঞ্চলের বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মান জাতীয় মানদণ্ডে পৌঁছানোর জন্য প্রচেষ্টা চালাবে চীন সরকার।
বন্ধুরা, শুনছিলেন শিক্ষা সম্পর্কিত খবর। এখন শুনবেন চীনের ছাংছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তথ্য।
ছাংছুন বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরপূর্ব চীনের চিলিন প্রদেশের রাজধানী ছাংছুন শহরে অবস্থিত। পূর্বে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিলো ছাংছুন অপটিক্স এ্যান্ড প্রিসিশন একাডেমি, যা ১৯৫৮ সালে চীনের বিজ্ঞান প্রযুক্তি একাডেমির উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। চীনের বিখ্যাত বিজ্ঞানী ওয়াং তা হাং ছিলেন এ একাডেমির প্রথম প্রেসিডেন্ট।
২০০২ সালে এই একাডেমি ছাংছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টি ছাংছুন শহরের ছাওইয়াং এলাকায় অবস্থিত। বর্তমানে মোট ২৭ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করছেন। তাদের মধ্যে পিএইচডি ডিগ্রি গবেষণারত ২৩০ জন, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৪১৮৩ জন, স্নাতক পর্যায়ে ১৫ হাজারেরও বেশি এবং বিদেশি শিক্ষার্থী ১৫৭ জন। বিশ্ববিদ্যালয়টি লেজার, অপটিক্যাল, টেলি-যোগাযোগ, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, ন্যানোম্যাটেরিয়ালস ও জৈব প্রকৌশলসহ বিভিন্ন গবেষণার শীর্ষ স্থানে পরিণত হয়েছে।
ছাংছুন বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়া, নরওয়ে ও জাপানসহ বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
২০১০ সালে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০০ জনেরও বেশি শিক্ষককে বিদেশে প্রশিক্ষণ লাভের জন্য পাঠানো হয়। এছাড়া, ৭০টিরও বেশি দেশের হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীদেরকে চীনা ভাষাসহ বিভিন্ন বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
ছাংছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রাশিয়ার বুরিয়াতিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট ও একটি কনফুসিয়াস ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা করে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের ১৯ শতাংশ বিশ্ব ও চীনের ৫০০টি শক্তিশালী শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। ২০১১ সালে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিশ্ববিদ্যালয়কে 'স্নাতক কর্মসংস্থানের দৃষ্টান্ত' বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরস্কারে ভূষিত করে।
বন্ধুরা, এখন আমরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি সম্পর্কিত কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
হ্যাঁ, ছাংছুন বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ বৃত্তি ও আংশিক বৃত্তি প্রদান করে থাকে। সম্পূর্ণ বৃত্তিতে স্নাতকরা প্রতিমাসে ২৫০০ ইউয়ান, স্নাতকোত্তররা প্রতিমাসে ৩০০০ ইউয়ান ও পিএইচডি শিক্ষার্থীরা প্রতিমাসে ৩৫০০ ইউয়ান বৃত্তি পেয়ে থাকেন। সম্পূর্ণ বৃত্তি অর্জনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে বিনা পয়সায় থাকতে পারেন। এর সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্সা বীমাও প্রদান করা হয়।
আবেদনকারীরা প্রতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের শুরু পর্যন্ত অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দিতে পারেন। যাদের বয়স ২৫ বছরের মধ্যে তারা অস্নাতক প্রধান বিষয়ের জন্য আবেদন করতে পারেন। যাদের বয়স ৩৫ বছরের মধ্যে তারা স্নাতকোত্তর করার জন্য আবেদন করতে পারেন আর যাদের বয়স ৪০ বছরের মধ্যে তারা পিএইচডি ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে বিশেষ কিছু প্রশিক্ষণ কোর্সের ক্ষেত্রে বয়স বেশি হলও তা গ্রহণযোগ্য। বিস্তারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারবেন।
স্নতকোত্তর বৃত্তির মেয়াদ ২-৩ বছর এবং পিএইচডি ডিগ্রির বৃত্তির মেয়াদ ৩-৪ বছর। আবেদনকারীদেরকে চীনের সরকারি বৃত্তি সিএসসি'র ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। ছাংছুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড নম্বর ১০১৮৬। সিএসসি শুধু ছাংছুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করবে। যারা নিজস্বভাবে আবেদনপত্র জমা দেবে,তাদের আবেদনপত্র গ্রহণ করবে না।
ছাংছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে আপনারা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় ইন্সটিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তাদের ইমেইল ঠিকানা ieec@cust.edu.cn, ফোন নম্বর ০০৮৬-৪৩১-৮৫৫৮৩২৯১।
আচ্ছা, এতক্ষণ ছাংছুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তথ্য জানলেন।
এখন শুনবেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি ছাত্র শামীম আহমেদের সাক্ষাতকার। এ সাক্ষাতকারের মাধ্যমে আপনারা চীনে শামীমের লেখাপড়ার অভিজ্ঞতা ও গল্প জানতে পারবেন।
(সাক্ষাতকার)
বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি আমরা। আশা করি আমাদের পরিচয় ও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা থেকে আপনারা চীনের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আরো বেশি তথ্য জানতে পারবেন। হ্যাঁ, আপনারা যারা চীনে লেখাপড়া করছেন তারা নিজের বিশ্ববিদ্যালয় ও নিজের লেখাপড়ার গল্প জানাতে চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগের ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn
এবার তাহলে বিদায়। সবাই ভালো থাকুন,সুন্দর থাকুন।আগামী সপ্তাহে আবার কথা হবে। যাই চিয়ান।(সুবর্ণা/টুটুল)