বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চল্লিশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে চীনের ৩১-সদস্যের একটি সাংস্কৃতিক দল বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এই দল ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের শিল্পকলা একাডেমি এবং আর্মি গলফ ক্লাব অডিটরিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে।
গত বছর চীনে আমার সরকারি সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চল্লিশ বছর পূর্তি যৌথভাবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আমি বিশ্বাস করি, এর মধ্য দিয়ে আগামী দিনগুলোতে দু'দেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে।
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে চমত্কার সৌহার্দ্যপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান। চীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত ও অকৃত্রিম বন্ধু এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নির্ভরযোগ্য অংশীদার।
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্কের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৫ সালে। তবে সুপ্রাচীনকাল থেকেই দু'দেশের জনগণের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে সুসম্পর্ক। ফাইয়েন, হিউয়েন সাং, অ্যাডমিরাল জিং হি, অতিশ দীপঙ্করদের মতো পরিব্রাজক ও জ্ঞানতাপসদের দু'দেশ ভ্রমণের মধ্য দিয়ে এ সম্পর্কের ভিত স্থাপিত হয়।
পঞ্চাশের দশকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গব্ন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফর এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের সফর বর্তমানে আমাদের দু'দেশের সম্পর্ককে আরো নিবিড় করার ক্ষেত্রে তাত্পর্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। আজ আমাদের দু'দেশের মধ্যকার সম্পর্ক সর্বাগ্রে অংশীদারিত্ব কাঠামোর আওতায় সুসংহত রূপ লাভ করেছে। এ সমন্বিত অংশীদারিত্বের সূচনা হয় ১৯৯৬ সালে আমার চীন সফরের মধ্য দিয়ে।
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীন অব্যাহতভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টার, ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি উন্নয়ন প্রকল্প, বড়পুকুরিয়া কয়লাচালিত তাপবিদ্যুতকেন্দ্র, শাহজালাল সার কারখানা প্রকল্পগুলোর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আমাদের দু'দেশের সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক দল বিনিময় কর্মসূচি দু'দেশের জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। এ ছাড়া, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া এবং পর্যটনের ক্ষেত্রেও জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগের বৃদ্ধির সুযোগ পেয়েছে। আমি ভ্রাতৃপ্রতীম চীনের সরকার ও জনুগণকে চীনের নববর্ষ উপলক্ষ্যে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চীরজীবী হোক; বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক।