Web bengali.cri.cn   
দীর্ঘায়ু লাভ করার উপায়
  2015-01-29 18:37:50  cri


আপনি কখনও শুনেছেন, মানুষের গড় আয়ু একশত বছরেরও বেশি হতে পারে ! হ্যাঁ, বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের স্বাভাবিক আয়ু ১৫০ বছর হওয়া উচিত। কারণ, জন্মের পর থেকে প্রায় ২৫ বছর পর্যন্ত মানুষের শারীরিক বৃদ্ধি হয় এবং এর প্রায় ছয়গুণ সময় হলো তার স্বাভাবিক আয়ু। কিন্তু এখন ব্যাপারটা ঠিক এভাবে হয় না। মানুষের গড় আয়ু একশ বছরও স্পর্শ করতে পারে না। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি-বিজ্ঞান এগিয়ে যাচ্ছে এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য হাজার হাজার ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু, তারপরও মানুষ দীর্ঘায়ু লাভ করছে না কেনো? এর কারণ কি এবং কি করলে আরও বেশি সময় বাঁচা যায় ? সম্প্রতি এ পরামর্শগুলো দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। চলুন তাহলে শুরু করা যাক আজকের মূল অনুষ্ঠান।

আপনারা হয়তো ভাবছেন, নিশ্চয়ই বেশ কঠিন কিছু বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা নির্দেশনা ও পরামর্শ দেবেন। ব্যাপারটা মোটেও সেরকম নয়। মূল কথায় যাবার আগে আপনাদের জানিয়ে রাখতে চাই যে, আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ পরামর্শগুলো মূলত: স্বাভাবিক জীবনযাপনের সঙ্গে জড়িত অভ্যাসগুলো সম্পর্কে। যা একটু চেষ্টা করলেই সবাই অনায়াসে পালন করতে পারবেন। আর ফলশ্রুতিতে দীর্ঘায়ু লাভের সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি কথা বলা আয়ু কমে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ। অতিরিক্ত কথা বললে স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক শক্তির ক্ষয় হবে। বন্ধুরা আপনি কখনও উপলব্ধি করেছেন কি, বেশি কথা বললে আপনি খানিকটা দুর্বল হয়ে পড়েন এবং আরও বেশি কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাই মাঝে মাঝে কথা বলার পরিমাণ কমিয়ে দিলে আয়ু বাড়ার ক্ষেত্রে তা সহায়ক হবে।

দীর্ঘায়ু প্রতিরোধে 'রাগ' হলো আরো একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারা দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবন লাভের ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক। রাগ মানুষের সুস্বাস্থ্যের সবচেয়ে বড় শত্রু । প্রচণ্ড রাগে শারীরিক শক্তির পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অল্প বয়সে মৃত্যু ঘটতে পারে।

এরপর বিশেষজ্ঞরা যে বিষয়ে বলছেন, তাতে অনেকেরই আতঙ্ক হতে পারে। কারণ, আমাদের অনেকরই রাত জাগার অভ্যাস রয়েছে। অর্থাত রাতে নিয়মিত না ঘুমালে মানবদেহের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয়, শরীরের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। নিয়মিত রাত জাগলে আপনার ফুসফুসের ক্যানসার ও হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এটি মৃত্যুহার বেশি হওয়ার অন্যতম একটি কারণ। এছাড়া প্রতিদিন অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুমানো ভালো। দুপুরে কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট ঘুম বা চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেয়া খুব দরকার। দুপুরের খুব সামান্য ঘুম আপনার জীবনে অনেক ছন্দ বৃদ্ধি করতে পারে যা আয়ু বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক কার্যকরী।

আলসেমি করতে কার না ভালো লাগে! স্বাভাবিকভাবেই যারা আলসেমি করেন তারা সচেতনভাবেই পরিশ্রম থেকে দূরে থাকেন। তারা অবসর সময় শুয়ে বা বসে থাকতে পছন্দ করেন। কোথাও যেতে চান না, তাদের ঘরে বসে থাকতেই বেশি ভালো লাগে। এরকম মানুষের জন্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অলস হলে মানুষের আয়ু কমে আসে। তাদের পরামর্শ, দীর্ঘায়ু চাইলে নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে তিনবার জিমে বা খোলা জায়গায় এবং এক ঘণ্টা করে নিয়মিত শরীর চর্চা করুন। প্রতিদিন বাড়িতে বসে থাকা ঠিক নয়। বাসার বাইরে বের হোন এবং সুর্যালোকে হাঁটুন। মানুষের আয়ু বাড়াতে সহায়তা করে সূর্য। উজ্জ্বল সূর্যালোক শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের যোগান দেয়।

ওজন বেশি হওয়া দীর্ঘায়ু হওয়ার বড় শত্রু । আপনি হয়ত জিজ্ঞাস করবেন, ওজন কত থাকা স্বাভাবিক? আন্তর্জাতিকভাবে একটি সহজ হিসেব আছে, সেটা হলো সেন্টিমিটারে উচ্চতা বের করে ১০০ বিয়োগ করলে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে, সেটি হবে আপনার সঠিক ওজন। আর আপনার পেটের সীমা অবশ্যই উচ্চতার অর্ধেকের কম হতে হবে। সেজন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়? খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন শাকসবজি থাকতে হবে বেশি। এক দিনে অন্তত পাঁচ রঙের সবজি ও ফল খাবেন। ভাজা-পোড়া খাবারে ক্ষতিকর চর্বি থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। চর্বিযুক্ত মাংসের চেয়ে মাছ অনেক ভালো এবং চিনির চেয়ে গুড় ভালো।

সিগারেট ও মদ পানের অভ্যাস ছেড়ে দেয়া অনেক ভালো। যারা ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ পানে অভ্যস্ত, তারা এখন থেকে এ অভ্যাস ছেড়ে দিলে ক্যানসারের আশঙ্কা কমে যাবে। ।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040