20150122ruby
|
কিভাবে শাশুড়ির সঙ্গে সুন্দর একটি সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়, এ নিয়েই আজকের এ অনুষ্ঠানে আপনাদের বিশেষজ্ঞের কিছু পরামর্শ জানিয়ে দেবো। চলুন তাহলে, মূল আয়োজন শুরু করা যাক।
পরস্পরকে শ্রদ্ধা করা:
অন্যদের শ্রদ্ধা জানানো মানব জীবনের মূলনীতি। শাশুড়ি আপনার চেয়ে অনেক প্রবীণ বলে তাকে আরও বেশি শ্রদ্ধা জানানো প্রয়োজন। সেজন্য কোনো ধরনের অভিনয় নয়, নিজের মন থেকে শাশুড়িকে শ্রদ্ধা করুন। এদিকে শাশুড়িও নিশ্চয় তার পুত্র বধূকে ভালোবাসবে এবং শ্রদ্ধা জানাবে। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সম্পর্কটিই পরস্পরের কাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়ানো। এর ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে একটি সমাজ ও জাতি। ওদিকে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য বউকেও অনেক অসুবিধা ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়। তাই এক্ষেত্রে ঘরের নতুন বউটিকে একই সঙ্গে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আন্তরিকতা দিয়ে গ্রহণ না করলে বিভিন্ন রকম সমস্যার তৈরি হবে।
শশুরবাড়ির পরিবেশ অনুযায়ী কথা বলুন:
এ পরামর্শটি নববধূর জন্য। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি নতুন পরিবেশ, রীতি-নীতি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। তারা কোন বিষয় পছন্দ করেন, কোন বিষয় অপছন্দ করেন, তাদের অভ্যাস কি ধরনের, এসব জানুন বুঝুন, তারপর আপনার ভূমিকা কি হবে তা নির্ধারণ করুন। সবকিছু না জেনে হঠাৎ করেই আপনার যা-তা বলা ঠিক নয়। শাশুড়ির পছন্দ-অপছন্দসহ তাঁর ছোট-খাটো বিভিন্ন বিষয় বুঝে নিন। শাশুড়ি যেটা করতে পছন্দ করলে মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে বসে সেটা করুন বা সেটা নিয়ে আলাপ করুন। এভাবে ধীরে ধীরে সুন্দর একটি সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব।
শুধুমাত্র কাজের লোক হিসেবে পরস্পরকে ব্যবহার না করা
শাশুড়ি প্রবীণ হলেও ঘরের বউকে যখন-তখন আসতে এবং যেটাসেটা করতে বলা ঠিক নয়। নাতি নাতনি হবার পরও বউকে দিয়ে শাশুড়ি সবকিছু করাতে চাইলে তা হবে একটি বড় ভুল। এর অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
পরস্পরকে প্রশংসা করুন
প্রশংসা কে না পছন্দ করে, বলুন ? পরস্পরের ভালো দিকগুলো খুঁজে বের করুন এবং সেগুলোর জন্য পরস্পরের প্রশংসা করতে কোনো রকম দ্বিধা করবেন না। যেমন শাশুড়ি ভালো রান্না করেন, তার ছেলের সামনে তাঁর রান্নার প্রশংসা করুন। তাঁর কাছ থেকে রান্নার কিছু কৌশলও শিখে নেন। মনে রাখবেন, আপনি যদি অন্য মানুষের ভালো দিকগুলোর প্রশংসা করেন, তাহলে তার ভালো দিকগুলো ফুটে উঠবে, ভালো কাজগুলো করার ক্ষেত্রে সে আরো উৎসাহিত হবে। তাই এটা আমাদের সবারই চর্চা করা উচিৎ।
একমত না হলেও বিতর্ক করবেন না
লক্ষ্মী বউ সব শাশুড়িই পছন্দ করে। কিন্তু আপনি যতোই লক্ষ্মী হোন, বিভিন্ন বিষয়ে শাশুড়ির সঙ্গে মতপার্থক্য হতেই পারে। সেক্ষেত্রে সচেতনভাবে বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। মনে রাখবেন, ঝগড়া বা বিতর্ক করে কখনও বিজয়ী হওয়া যায় না। আন্তরিকতা, ভালোবাসা আর সহযোগিতার মাধ্যমে আপনি যে বিজয় অর্জন করবেন, তা চিরস্থায়ী হবে। তাই বিতর্ক না করে, তার কথার প্রতি গুরুত্ব দিন, তার কথা বোঝার চেষ্টা করুন। পরবর্তীতে কোনো এক সময় শাশুড়িকে আপনার কথা বোঝানোর চেষ্টা করুন এবং ধৈর্য ধরে ইতিবাচকভাবে আপনার চেষ্টা চালিয়ে যান।
দূরে থাকলেও টেলিফোনে যোগাযোগ রাখুন
প্রিয় শ্রোতা, অনেক সময়ই কাজের জন্য আপনাকে শাশুড়ির কাছ থেকে দূরে থাকতে হয়। তাই সে সময় আপনাকে পারিবারিক সুসম্পর্ক ধরে রাখতে বাড়তি যত্নবান হতে হবে। আপনাকে অবশ্যই সময় করে শাশুড়ির সঙ্গে ফোনে কথা বলতে হবে। তার বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে হবে। এভাবে দুজনের সম্পর্ক অনেক সুন্দর ও স্বাভাবিক থাকবে।
মনোযোগ দিয়ে পরস্পরের পরামর্শ শুনুন
কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে শ্বশুর-শাশুড়ির পরামর্শ শুনুন এবং তাদের পরামর্শ নিন। তারা আপনার ভালো অভিভাবক, তাই তাদের পরামর্শকে গুরুত্ব দিন। এমনটি করলে তারা অনেক খুশি হবেন। তারা বুঝতে পারবেন, বয়স হয়ে গেলেও সন্তানের জীবনে আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বন্দ্ব থাকলেও অন্যের সামনে প্রকাশ না করা
মানুষ সামাজিক জীব। আর সমাজবদ্ধ মানুষ একসঙ্গে থাকার কারণে নানা ধরনের দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে। তাই সে মতবিরোধ বা দ্বন্দ্বের বিষয়গুলোকেও সামলে রাখা উচিত। যখন তখন, যেখানে সেখানে এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা উচিত নয়। আর, অন্য মানুষের সামনে আপনি যখন আপনার শাশুড়িকে সম্মান করবেন তখন তিনিও আপনাকে সম্মান করবেন। এটাই তো স্বাভাবিক, তাই নয়কি বন্ধুরা ?
স্বামীর সঙ্গে ভালো আচরণ করুন
প্রত্যেক বাবা-মা তাঁদের সন্তানকে সুখী দেখতে চান। শ্বশুর-শাশুড়ির সামনে যদি আপনি তাদের সন্তানের সঙ্গে অর্থাৎ আপনার স্বামীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, তাহলে তারা মনে কষ্ট পাবে। তাই শ্বশুর-শাশুড়ির সামনে আপনার স্বামীর সঙ্গে ভালো আচরণ করুন, তারা আপনার প্রতি অনেক সন্তুষ্ট থাকবেন।