গত মাসে পেইচিংয়ে ক্রোয়েশিয়ার বিশ্ববিখ্যাত পিয়ানোবাদক Maksim Mrvica passion পিয়ানো বাজিয়েছেন। দর্শকরা খুবই আবেগপূর্ণ হয়ে পিয়ানোর মিউজিক উপভোগ করেছে। শীতকালে Maksim Mrvicaর পার্ফমেন্স পেইচিংয়ের ভক্তদের জন্য দারুণ আনন্দদায়ক হয়।
২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছর এশিয়ায় একটি পিয়ানো কনসার্টের আয়োজন করেন ম্যাকসিম। এবারে তিনি তার নতুন পিয়ানো অ্যালবাম 'Mezzo e Mezzo'র প্রচারণা চালান। এবারের কনসার্টগুলো চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত হবে। চীনের কুয়াং চৌ, সাংহাই ও ছেং তুসহ ১০টি শহরে ম্যাকসিম ১০টি কনসার্টের আয়োজন করবেন।
উনিশ পঁচাত্তর সালে ক্রোয়েশিয়া জন্মগ্রহণ করেন ম্যাকসিম। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবা-মার কাছে পিয়ানো শেখার জন্য আবদার জানান তিনি। সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ মারিজা সেকসোর (Marija Sekso) প্রশিক্ষণে বেশ দ্রুত Haydn Cello Concerto in C major বাজানো শিখেন ম্যাকসিম। নয় বছর পর ম্যাকসিম প্রথমবারের মত একটি পিয়ানো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন। তারপর Music Academy in Zagreb-এ পিয়ানো শেখা শুরু করেন ম্যাকসিম। সেখানে তার শিক্ষক ছিলেন গত শতাব্দীর সেরা পিয়ানোবাদক আরতুরো বেনেদেত্তি মিশেলঅ্যাঞ্জেলির (Arturo Benedetti Michelangeli) ছাত্র ভ্লাদিমির কারপান (Vladimir Krpan)।
ম্যাকসিম হাঙ্গেরি ও ফ্রান্সে পিয়ানো শিখেন। ২০০০ সালে তিনি নিজ মাতৃভূমি ক্রোয়েশিয়ায় ফিরে যান এবং প্রথম অ্যালবাম 'Gestures' রেকর্ড করেন। প্রথম অ্যালবামটিই ক্রোয়েশিয়ায় দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এটি ম্যাকসিমের কাছে অনেক আনন্দের বিষয় ছিল।
২০০১ সালে সুরকার টোনসি হুলজিক (Tonči Huljić) বিখ্যাত প্রযোজক মেয়র বুশকে (Mayer Bush) ম্যাকসিমের বিষয়ে সুপারিশ করে বলেন, "আমি প্যারিসের এক হোটেলে ম্যাকসিমের দু'মিনিটের পিয়ানো বাজনা শুনে মুহূর্তের মধ্যে তার সঙ্গে চুক্তি করি।"
ম্যাকসিম তার অতুলনীয় প্রতিভা ও অসাধারণ পিয়ানো বাজানোর কারণে ২০০৩ সালে দ্বিতীয় অ্যালবাম 'Piano Player'র মাধ্যমে চীন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরে স্বর্ণ জয় করেন। তখন থেকে এশিয়ায় তিনি জনপ্রিয় পিয়ানোবাদকে পরিণত হয়।
তার দ্বিতীয় অ্যালবাম 'Piano Player'র Flight of the Bumble-bee সঙ্গীতটি প্রকাশের পর দারুণ জনপ্রিয়তা পান। কিন্তু ম্যাকসিম এ সুরটির মাধ্যমে আরো বেশি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। Flight of the Bumble-bee সুরটি অসাধারণ একটি সুর।
এর পর ম্যাকসিম আরো ৭টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বিশ্বের অনেক দেশে কনাসার্টের আয়োজন করেন।
ম্যাকসিমের জন্য এশিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছর এশিয়ায় তার কনসার্টের খবর প্রকাশের পরপরই সব টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কয়েকদিন থাকেন ম্যাকসিম।
বিখ্যাত হওয়ার পরও ম্যাকসিম কিন্তু অহংকারী নন ম্যাকসিম। প্রতিটি কনসার্ট শেষে প্রত্যেক ভক্তের জন্য সিডিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। ম্যাকসিম সংবাদদাতাদের বলেন যে, "আমি ভক্তদের সঙ্গে বিনিময় করতে পছন্দ করি। তারা খুবই আন্তরিক। অনেক ফ্যানকে আমি গত ১০ বছরে ৬,৭ বার দেখেছি। এতে আমি খুবই মুগ্ধ হই।"