বইটিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ডসহ ২০টিরও বেশি দেশের মানুষের গল্প রয়েছে। তাদের মধ্যে চীনে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত গুস্তাভো মার্টিনা (Gustavo Martina), পেইচিং পুরুষ বাস্কেটবল খেলোয়াড় স্টিফন মারবুরি (Stephon Marbury) রয়েছেন। খেলোয়াড়, ছাত্রছাত্রী, ম্যানেজারসহ বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন মানুষের গল্প বইটিতে রয়েছে।
মার্কিন এক মেয়ের চীনা নাম লিউ স্যু ইং। বইটিতে সে বলেছে, ২০০১ সালে সে আরবি ভাষা শিখেছে। তার এক সহপাঠীর জন্মস্থান পেইচিং। তারা একসঙ্গে পেইচিংয়ে গিয়েছে। স্যু ইং'র চীনের প্রথম দিনগুলোতে চীন লন্ঠন উত্সব চলছিলো। স্যু ইং আগে কোন 'ইউয়ান সিয়াও' বা sweet dumplings made of glutinous rice flour খায়নি। সে হাসতে বলে, "আমি ইউয়ান সিয়াও খাইনি, শুনিনি, খুবই গরম, কিন্তু খুবই সুস্বাদ্যু। জানিনা কেন, সে মুহূর্ত থেকে আমি চীনকে ভালোবেসে ফেলি।" তার পর প্রায় দশ বছরের মত পার হয়েছে। স্যু ইং এখন চীনে থাকে। সে চীনের ঐতিহ্যবাহী অপেরা ও নাটক পছন্দ করে। বর্তমানে সে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের জনপ্রিয় উপস্থাপকে পরিণত হয়েছে। নিজের একটি নাট্য থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেছে, ২০১৪ সালের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র 'ই হাও মু পিয়াও'-এ সে অভিনয়ও করেছে।
পোল্যান্ডের এক ছেলে তারও একটি চীনা নাম আছে---ওয়াং উয়েই। ওয়াং উয়েই পেইচিংয়ের ইয়ু ইউয়ান থান পার্কে তার স্ত্রীকে প্রথম দেখেছিলো। তারপরই তাদের মধ্যে ভালবাসা হয়। তখন থেকে দু'বছর পর তারা বিয়ে করেছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের দিন সে একটি কালো ঘোড়ায় চড়ে তার স্ত্রীর বাড়িতে এসে। সে বলে, "পোল্যান্ডে এত মহান বিয়ের অনুষ্ঠান খুব অল্প হয়। চীনের মত এত বেশি প্রথা সেখানে নেই।" বইটিতে ওয়াং উয়েই লিখে যে, সে পেইচিং ভালবাসে, পেইচিংয়ে ছাড়া সে অন্য কোথাও থাকবে না।
বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় মারবুরি লিখেছে, "অনেক দল আমাকে সুযোগ দিলেও, আমি পেইচিংয়ে থাকতে চাই। কারণ আমার দৃষ্টিতে পেইচিং সবচেয়ে সুন্দর, পেইচিং কুও আন ফুটবল দল আমার দৃষ্টিতে সেরা দল।"
বইয়ের সর্বশেষ পর্বে প্রত্যেক লেখক কয়েকটি শব্দ ব্যবহার করে পেইচিং তাদের মনের কী ছাপ ফেলেছে, তারা বর্ণনা দিয়েছেন। যেমন, 'নিরাপত্তা, সুন্দর, বন্ধুত্বপূর্ণ, আধুনিক, মুক্ত' ইত্যাদি। সুপ্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা, আপনাদের ধারণায় পেইচিং কি রকম? আমাকে চিঠি লিখে জানাবেন কিন্তু।