1031yin02
|
তদন্তে দেখা গেছে, খাওয়া-দাওয়া, বসবাস ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমে ভ্রমণকারী চীনাদের ব্যয় হার স্পষ্টভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের ১ থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত, খাওয়া-দাওয়া ও বসবাসের ক্ষেত্রে চীনা পর্যটকদের ব্যয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫.২ শতাংশ বেশি হয়েছে। অবকাশ যাপন ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমে ব্যয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৬.৬ শতাংশ বেড়েছে। একই সময় কেনাকাটার হার শুধু ৩০ শতাংশ।
গ্রীসের ইজিন অবকাশ পর্যটন সংস্থার মহা পরিচালক মাদাম হান জি চুয়ান সাক্ষাত্কার দেয়ার সময় বলেন,
সম্প্রতি চীনের গ্রুপ পর্যটনের প্রকৃতি অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। আমাদের অভ্যর্থনার অভিজ্ঞতা থেকে আমরা থিম পর্যটনের অভ্যর্থনা জানিয়েছে, যেমন এখানে গ্রীসের মদের স্বাদ গ্রহণ করতে আসা। কারণ মদ উত্পাদন করেই ধনী হয়েছে গ্রীস। আরো কিছু চীনা পর্যটক এখানকার বৈশিষ্ট্যময় গল্ফ স্টেডিয়াম দেখতে গভীরতা সফর করেন। আর অনেক মানুষ তাদের বৈদেশিক বিবাহ আয়োজনের জন্য গ্রীসকে বাছাই করে নেন।
সি ওয়াই টি এস-এর মার্কেটিং বিভাগের ম্যানেজার গে লেই বলেন, চীনা নাগরিক বিদেশে পর্যটনের সংখ্যা ও পানশালা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি চীনা পর্যটকের উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। পণ্য ভোগ হোক কিম্বা পর্যটন মানসিকতা হোক না কেন, চীনা পর্যটকদের মান ধীরে ধীরে আরো উন্নত হচ্ছে।
একই সময় কেনাকাটার ক্ষেত্রে চীনের পর্যটকরা অপূর্ণাঙ্গ থেকে পূর্ণাঙ্গতার দিকে এগিয়ে চলেছে। সি ওয়াই টি এস'র ম্যানেজার গে লেই বলেছেন, বিদেশে পর্যটনের ব্যবস্থা করার শুরুতে চীনাদের বিদেশে যাওয়ার সুযোগ কম হওয়ায়, কোন কোন আন্তর্জাতিক বড় ব্র্যান্ড অথবা বিলাসী পণ্য চীনের দামের তুলনায় অনেক পার্থক্য ছিল। তাই বিদেশ গিয়ে চীনা পর্যটকরা অনেক কেনাকাটা করতেন। এ দৃশ্য বিদেশীদের মনের ওপর এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মনে হয়, চীনা মানুষ ভুঁইফোঁড় ব্যক্তির মতো। গে লেই বলেছেন, বর্তমানে এ দৃশ্য পরিবর্তিত হচ্ছে। তিনি বলেন,
আমাদের পর্যটন সংস্থার অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের পণ্য ভোগকারীরা আরো যুক্তিসম্মত হচ্ছেন। এর কারণ হচ্ছে, ধীরে ধীরে কেনাকাটা আরো সুবিধাজনক হয়ে উঠছে। বিদেশে যাওয়া এখন অনেক সহজ হয়েছে। এছাড়া শুল্ক মুক্ত দোকানের সংখ্যা আরো বেশি হয়েছে। বিদেশের পাশাপাশি চীনেও আছে। সবাই আরো সহজে কেনাকাটা করতে পারছে।
বিগত বছরগুলোতে, চীনের বৈদেশিক পর্যটন উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কিছু পর্যটকের অসভ্য আচরণ চীনের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা অনেকবার নাগরিকদের বিদেশে পর্যটনের ক্ষেত্রে সভ্য আচরণের প্রতি জোর দিয়েছে। নিজেদের মান উন্নত করা এবং সুষ্ঠু আচরণ করার প্রতিও জোর আহ্বান জানিয়েছে। অবশেষে তার কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। গ্রীসের ইজিন অবকাশ পর্যটন সংস্থার মহাপরিচালক হান জিচুয়ান জানিয়েছেন, বর্তমানে সামগ্রিক দিক থেকে দেখা যাচ্ছে, চীনা পর্যটকদের নেতিবাচক ভাবমূর্তির পরিবর্তন হয়েছে। তিনি বলেন,
চলতি বছরের শুরু থেকে কয়েকটি পর্যটন মৌসুম পার হয়ে গেলেও চীনা পর্যটকদের ভ্রমণ সম্পর্কে গ্রীসে আমরা কোন হোটেল, গাড়ি ও বিমান চলাচল কোম্পানির কাছ থেকে অভিযোগ পাইনি। মনে হয়, চীনা পর্যটকের সামগ্রিক মান উন্নত হয়েছে। হয়তো চীনাদের বিদেশে ভ্রমণ করার সুযোগ আরো বেশি হয়েছে। সুতরাং প্রথম দিকের খারাপ আচরণগুলো ছেড়ে, এখন সচেতনভাবে বিদেশের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো অনেক সহজ হয়েছে।
গে লেই বলেছেন, পর্যটন শুধু এক ধরনের বিলাসী পণ্যভোগের মানসিকতাই নয়, বরং তা মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ও সভ্যতার সংলাপও বটে। তিনি বলেন,
এক পর্যটক বিদেশে গেলে অন্যরা তাকে কিভাবে দেখে? আসলে আপনার কথা ও আচরণ চীনের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা আপনার মাধ্যমে চীনকে দেখে। সুতরাং, যুক্তিসম্মত, ভদ্র চীনা পর্যটক, যিনি অন্যদের সম্মান করেন, তাকে গোটা বিশ্ব স্বাগত জানাবে। এটা চীনের রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল করবে।
প্রেমা/তৌহিদ