

0921jiankang
|
হলুদবর্ণ পাকা কলা
• সম্পুর্ণ বীজমুক্ত কলা: যেমন-সবরি, অমৃতসাগর, অগ্নিশ্বর, দুধসর, দুধসাগর প্রভৃতি ।
• দু-একটি বীজযুক্ত কলা: যেমন-চাম্পা, চিনিচাম্পা, কবরী, চন্দন কবরী, জাবকাঠালী ইত্যাদি ।
• বীজযুক্ত কলা: এটেকলা যেমন-বতুর আইটা, গোমা, সাংগী আইটা ইত্যাদি ।
• আনাজী কলাসমুহ: যেমন-ভেড়ার ভোগ, চোয়াল পউশ, বর ভাগনে, বেহুলা, মন্দিরা, বিয়েরবাতি প্রভৃতি
উদ্ভিদ বিজ্ঞানী মালানের মতে ভারতবর্ষ ও চীন কলার জন্মভুমি । কিন্তু আরেক উদ্ভিদ বিজ্ঞানী হিল পাক-ভারত ও মালয়কে কলার উৎপত্তিস্থল বিবেচনা করেছেন।
প্রতি ১০০ গ্রাম কলায় যে খাদ্যগুণ আছে তার বিশ্লেষণ নিম্নরূপ:
পানি------------------ ৭০.১%
প্রোটিন------------------ ১.২%
ফ্যাট/চর্বি---------------- ০.৩%
খনিজ লবণ--------------- ০.৮%
আঁশ-------------------- ০.৪%
শর্করা------------------- ৭.২%
মোট----------------------- ১০০%।
খনিজ লবণ এবং ভিটামিন
ক্যালসিয়াম----------------------- ৮৫ মি.গ্রা.
ফসফরাস------------------------ ৫০ মি.গ্রা.
আয়রন--------------------- ০.৬ মি.গ্রা.
ভিটামিন সি…অল্প পরিমাণে
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স----- ৮ মি.গ্রা.
মোট ক্যালরি----------------------- ১১৬।
আরেকটি কথা। খনার বচনে আছে, "কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড়, তাতেই ভাত"।
গুণ ১: উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় সহায়ক
উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ ও রক্তনালীর রোগীদের শরীরে সাধারণত সোডিয়াম বেশি এবং পটাসিয়াম কম থাকে। অন্যদিকে কলায় প্রচুর পটাসিয়াম রয়েছে। ফলে এ ধরনের রোগী কলা খেলে শরীরে সোডিয়াম ও পটাসিয়ামের ভারসাম্য বজায় থাকে। সুতরাং, এ ধরনের রোগীদের উচিত দিনে ৩ থেকে ৫টি কলা খাওয়া। এটা তাদেরকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
গুণ ২- গ্যাস্ট্রিক আলসারের চিকিৎসায় সহায়ক
কলায় একটি বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ আছে, যা গ্যাস্ট্রিক আলসারের রোগীদের সাহায্য করতে পারে। কলার রাসায়নিক পদার্থ পাকস্থলীর রক্ষাকারী আবরণ সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখে।
গুণ ৩: মদ্যপানের পর Hangover কাটাতে সাহায্য করে
মুসলিমরা মদ্যপান করেন না। সুতরাং তাদের হ্যাংওভার কাটানোর প্রশ্নও নাই। তারপরও জানিয়ে রাখি যে, মদ্যপানের পর হ্যাংওভার কাটাতে কলা সাহায্য করতে পারে। ৬০ গ্রাম কলার খোসা একটি পাত্রে নিয়ে গরম করুন। ২০ মিনিট পর কলার খোসামিশ্রিত গরম পানি খেয়ে নিন। দেখবেন আস্তে আস্তে হ্যাংওভার কেটে যাবে। অবশ্য পেট ব্যাথা বা ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের কলার খোসামিশ্রিত পানি খাওয়া নিষেধ।
গুণ ৪: ওজন কমাতে সাহায্য করে
ওজন কমানোর কথা আগের অনুষ্ঠানগুলোতেও আমরা কয়েকবার বলেছি। ওজন কমানো বর্তমানে একটি ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে বলা যায়। তবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি। হ্যাঁ, যদি আপনার ওজন বেশি হয়ে থাকে, তবে ওজন কমাতে পারেন। আর ওজন কমাতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে কলা। প্রতিদিন পরিমিত পরিমানে কলা খান, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কিন্তু বেশি খেলে কিন্তু মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, কলায় প্রচুর শর্করা জাতীয় উপাদান আছে।
গুণ ৫: মুখের ত্বক মসৃণ করতে কলার ব্যবহার
কলা কচলিয়ে দুধের সাথে মেশান। তারপর সেই মিশ্রণ মুখে মেখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখুন। দেখবেন ত্বক ফ্রেস ও মসৃণ হয়ে উঠবে। আর যাদের মুখে তামাটে দাগ পড়েছে, আশা করা যায় এতে সেই দাগও ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।
গুণ ৬: কাশির চিকিৎসায় সহায়ক
কাশি হলে কলা আপনার কাজে লাগতে পারে। কলা ও চিনি মিশিয়ে পানিতে গরম করুন। তারপর খেয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এক থেকে দু'বার এটি খেতে পারেন। আশা করা যায়, কয়েকদিনের মধ্যেই আপনার কাশি ভালো হয়ে যাবে।
গুণ ৭: বিষন্নতা প্রতিরোধে সহায়ক
কলা বিষন্নতা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। যারা বিষন্নতায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত কলা খান। দেখুন বিশেষজ্ঞদের কথা ঠিক কি না।
সাবধানবাণী ১: কাঁচা কলা খেলে কোষ্ঠবদ্ধতা হতে পারে
কাচা কলা খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হতে হবে। কারণ, কাচা কলা খেলে কোষ্ঠবদ্ধতা হতে পারে।
সাবধানবাণী ২: কলা অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়
অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। কোনো খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। কলার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কলা অতিরিক্ত খেলে শরীরে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে পরিপাকতন্ত্রের ওপরও চাপ সৃষ্টি হয়।
সাবধানবাণী ৩: খালি পেটে কলা খাওয়া ক্ষতিকর
কলা সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু অন্যান্য ফলের মতো এই ফলটিও খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। আরেকটি কথা, অনেকে ফ্রিজে কলা রেখে পরে খান। এটি ঠিক না। ফ্রিজে কলা দ্রুত পচে যায়।
(ওয়াং হাইমান/আলিম)




