0915huanqiu
|
এবার তাহলে আমরা প্রথমেই অবিবাহিত বিত্তশালী পুরুষের মানদণ্ড নিয়ে আলোচনা করবো ।
প্রথম মানদণ্ড নিশ্চয়ই হল "ধনী", তাই না? নিজের যথেষ্ট সম্পদ আছে, অথবা তার পরিবার বিশাল সম্পদের মালিক। দ্বিতীয় মানদণ্ড হল "উচ্চ শিক্ষিত"। এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই বিদেশে লেখাপড়ার প্রেক্ষাপট আছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে কিভাবে বিশ্বে নিজের মানসিকতার উন্নয়ন করা যাবে, তাই না?
আরেকটি মানদণ্ড তা হল তাকে দেখতে 'সুদর্শন' হতে হবে। আর এটি ছাড়া ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও খুব ভালো ধারনা থাকতে হবে।
কল্পনা করো, একজন সুদর্শন পুরুষ, কিন্তু তিনি জানেন না কিভাবে নিজেকে সুন্দর কাপড়ের মাধ্যমে সাজানো যায়? যদি এ বিষয়ে তার কোনো ধারনা না থাকে তাহলে নিশ্চয়ই তাকে সুদর্শন পুরুষ বলা যাবেনা, তাই না? হ্যাঁ, তার চেহারা হয়তো সুন্দর, কিন্তু তাকে সুদর্শন বলা যায় না।
আরেকটি মানদণ্ড তাহলো, দৃঢ়তা ও ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। এমন ব্যক্তিত্বের অধিকারীরা অনেক কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলেও আতঙ্কিত হন না, বরং ঠাণ্ডা মাথায় তা মোকাবিলা করেন।
এছাড়া নিজের কাজ ও জীবনের প্রতিও সক্রিয় মনোভাব পোষণ করতে হবে, সেই সঙ্গে হাসিখুশি লোক হতে হবে।
ফোর্বস সাময়িকীটির সর্বশেষ তালিকায় স্থান পাওয়া বিশ্বের এক হাজার ৬৪৫ জন শীর্ষ ধনকুবেরের মধ্যে কখনোই বিয়ে করতে পারেননি অন্তত ৩ শতাংশ।
তাঁদের মধ্যে ১০ জন শীর্ষ অবিবাহিত ধনীর তালিকা প্রকাশ করেছে সাময়িকীটি। তাঁদের সম্পদের পরিমাণ এখানে তুলে ধরা হলো।
মার্কিন ইন্টারনেট উদ্যোক্তা ড্রিউ হিউসটনের বয়স ৩০। তিনি ড্রপবক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১০২ কোটি মার্কিন ডলার।
জার্মানির অভিজাত পরিবারের সদস্য আলবার্টের বয়স ৩০। ব্যবসা ও উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১০৬ কোটি মার্কিন ডলার।
ব্রাজিলের বংশোদ্ভূত এদুয়ার্দো সেভারিন (৩১) ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা। মোট সম্পদের পরিমাণ ৪০১ কোটি মার্কিন ডলার।
মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইউবিকুইট নেটওয়ার্কসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবার্ট পেরার বয়স ৩৫। তাঁর সম্পদ ২০৭ কোটি ডলার।
ক: ৩৭ বছর বয়সী জাপানের উদ্যোক্তা ইয়োশিকাজু তানাকা 'গ্রি' নামের একটি ইন্টারনেট ব্যবসা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর সম্পদ ১০৬ কোটি মার্কিন ডলার।
টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জ্যাক দোরসির (৩৭) সম্পদ ২২০ কোটি মার্কিন ডলার।
ইউক্রেনে জন্ম নেওয়া ৩৮ বছর বয়সী মার্কিন ইন্টারনেট উদ্যোক্তা ও কম্পিউটার প্রকৌশলী জান কোউমের সম্পদ ৬০৮ কোটি ডলার। তিনি হোয়াটস অ্যাপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও।
মার্কিন উদ্যোক্তা জনাথন অরিংগার (৩৯) 'শাটারস্টক' নামের ফটোগ্রাফি সংস্থার সিইও। তাঁর সম্পদ ১৩৫ কোটি ডলার।
৩৭ বছর বয়সী মার্কিন বিনিয়োগকারী আলেজানদ্রো সান্তো ডোমিগো দাভিলার সম্পদের পরিমাণ ১১১ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির দ্বৈত নাগরিক নিকোলাস বার্গরুয়েন (৫২) একজন বিনিয়োগকারী। তাঁর সম্পদ ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।
খ: বন্ধুরা, এ তালিকা এবং তাদের সম্পদের পরিমাণ শুনে কেমন লাগছে আপনাদের? আমি কিন্তু খুবই অবাক হয়েছি।
হয়তো তারা বিয়ে না করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতবদ্ধ এবং ব্যবসার ব্যস্ততার কারণে উপযোগী মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সময় বা সুযোগ পান না। কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন আছে: এমন অবিবাহিত বিত্তশালী পুরুষ কি সত্যি বিয়ের জন্য উপযোগী? আমরা তাহলে এ বিষয়টি নিয়ে এখন একটু আলাপ করবো, কেমন?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, লোকেরা "বিত্তশালী পুরুষের" তালিকা নির্বাচন করতে আগ্রহী, কিন্তু "বিত্তশালী নারীর" তালিকা খুব কম মানুষই নির্বাচন করেন। এ থেকে বিবাহ এবং প্রেমে পুরুষের সুবিধা বোঝা যায় ।
তবে যদি একজন নারী বা মেয়ের বয়স একটু বেশি হয় এবং তিনি যদি বিয়ে না করেন তাহলে সামাজিকভাবে তার অনেক অসুবিধা হয়। এটা আসলে এক ধরনের বৈষম্য ।
যারা কাজের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যস্ত এবং অনেক ধনসম্পদের মালিক তারা আসলে অধিকাংশ নারীর জন্য উপযুক্ত স্বামী নয়। কারণ এমন পুরুষ নিশ্চয়ই নিজের স্ত্রীর জন্যও খুব উচ্চ মানদণ্ড রাখেন। কিন্তু একজন সাধারণ মেয়ের নিশ্চয়ই এত বিশেষ মানদণ্ড থাকার কথা নয়।
আসলে আমরা তথ্য মাধ্যমের খবর থেকে অনেক সময়ই জানতে পারি যে, যারা বিত্তশালী পুরুষের স্ত্রী, তাদের অনেকেরই জীবন হয়তো মানুষের ধারণার মত সুখী নয়। নিউইয়র্কের একজন লিঙ্গ বিশেষজ্ঞ সুসি বলেন, আমি এমন অনেক নারীকে চিনি এবং এমন অনেক নারী আছেন, যারা আমার কাছ থেকে সাহায্য এবং প্রস্তাব চান। তারা বলেন, আসলে বিত্তশালী পরিবারের জীবন ততটা সহজ নয় এবং তারা জানতে চান কিভাবে নিজের স্বামীর সঙ্গে আরো ভালোভাবে সহাবস্থান করতে পারেন?
অন্য দিকে বিত্তশালী পুরুষের জন্য এমন নাম তালিকা এক ধরনের চাপও বটে। কারণ তাদেরকে এমন সামাজিক মর্যাদা বজায় রাখার জন্য আরো বেশি চেষ্টা করতে হবে। এমন জীবন নিশ্চয়ই আমাদের সাধারণ লোকের চেয়ে অনেক ব্যস্ত এবং কঠিন হবে।