0525jiankang
|
ঊর্মি: গত ৪ মে 'স্বাস্থ্য ও জীবন' অনুষ্ঠানে ডায়াবেটিস সম্পর্কে কিছু কথা প্রচারের, আমাদের অনেক শ্রোতা ডায়াবেটিক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছেন। তাই আমরা আজকের অনুষ্ঠানে 'ডায়াবেটিস' নিয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। হ্যা, সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইটে ডায়াবেটিস মোকাবেলার ৭টি পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাহলে, তৌহিদ ভাইয়া, আমরা তাড়াতাড়ি শুরু করি আজকের মূল আলোচনা।
তৌহিদ: হ্যাঁ, ঊর্মি। আমি প্রথমেই আজকের প্রথম পরামর্শ সম্পর্কে বলছি। আর সেটি হল, শরীরের সার্বিক পরীক্ষা বা হেলথ চেকআপে করা।
প্রিয় শ্রোতা, আপনি কি বছরে অন্তত একবার শরীর পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন? আমাদের শরীরের সুস্থতার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। এর মাধ্যমে আমরা শরীরের অবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে পারি। কিন্তু, অনেকেই অলসতা করে হাসপাতালে যান না। এক্ষেত্রে, বিশেষভাবে বলতে চাই যে, ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য শরীরের সার্বিক পরীক্ষা জরুরি। আপনি যদি কোথাও বেড়াতে যেতে চান, তাহলে তার আগে শরীরের অবস্থা সুষ্ঠুভাবে জানা প্রয়োজন। হ্যাঁ, হাসপাতালে যান, শরীর পরীক্ষা করুন। এর মধ্যে, গুরুত্বপূর্ণ হলো, ECG, খাওয়ার আগে ও খাওয়ার পরে ব্লাড-সুগার মাপা এবং ইউরিন টেস্ট ইত্যাদি।
ঊর্মি: আচ্ছা, তৌহিদ ভাইকে ধন্যবাদ। আমি ও আমার শ্রোতারা হাসপাতালে শরীরের সার্বিক পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করবো। এখন আমি দুই নম্বর পরামর্শটি সম্পর্কে বলবো।
এটি হলো, ব্লাড-সুগার কমানোর ওষুধ হাতের কাছে রাখা
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডায়াবেটিসের জন্য হাতের কাছে সবসময় ব্লাড-সুগার কমানোর ওষুধ রাখা দরকার। বেড়াতে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখা হলো, পর্যটন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার এক গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। ওরাল ওষুধ অথবা ইনসুলিন হলে, তা প্রতিদিনের তুলনায় দ্বিগণ পরিমাণ নেয়া উচিত। এছাড়া, ইনসুলিন পাইপ, গ্লুকোজ পরিমাপক গ্লুকোজ টেস্টারটিও কাছে রাখা যেতে পারে।
তৌহিদ: পর্যাপ্ত ওষুধের পাশাপাশি, পর্যাপ্ত পানি ও খাবারও খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানালেন বিশেষজ্ঞ। আর এটি হচ্ছে আজকের তিন নম্বর পরামর্শ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যাপ্ত পানি ও খাবার সঙ্গে রাখতে।
ডায়াবেটিসের জন্য সব সময় হালকা খাবার যেমন, বিস্কুট , মিছ্রি ও রুটি রাখা দরকার। কারণ ব্লাড-সুগার অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলে এসব খেতে হয়। ডায়াবেটিস হলে প্রতিদিন নিয়মিত সময় খাবার খাওয়া উচিত। যদি কাজের চাপে নিয়মিত খেতে না পারেন, তাহলে হাতের কাছে পর্যাপ্ত পানি ও খাবার রাখবেন। এটি আমাদের হাইপোগ্লাইসিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।
ঊর্মি: তৌহিদ ভাই, আপনি সুন্দর কথা বলেছেন। এখন আমি শ্রোতাবন্ধুদের সঙ্গে যে বিষয়টি আলোচনা করবো সেটি হলো, শরীর চর্চা।
প্রিয় শ্রোতা, শরীর চর্চা খুবই ভালো অভ্যাস। এটি কিন্তু, নিয়মিত ও পরিমিত করা উচিত। শরীর চর্চা বেশি হলে, তা আমাদের দেহে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমাদের সঠিক মাত্রায় শরীর চর্চা করা উচিত। আর, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ। শ্রোতারা বুঝতেই পারছেন, এটিই আমাদের আজকের চার নম্বর পরামর্শ: নিয়মিত শরীর চর্চা করা।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি পরিমাণ শরীর চর্চা করতে নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তা নাহলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও রক্তনালীর রোগে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি থাকে। আরেকটি কথা বলা দরকার যে, শরীর চর্চার সময় ঢিলে-ঢালা ও আরামদায়ক জুতা-মোজা পরা উচিত। এতে আমাদের পায়ে আরাম লাগবে।
তৌহিদ: ঊর্মি আপনাকে ধন্যবাদ। এখন আমি শ্রোতাদের যে বিষয়টি জানাবো সেটি হলো, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা।
প্রিয় শ্রোতা, আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, ভাল ও সুস্থ শরীরের জন্য প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া দরকার। কিন্তু, বিভিন্ন রকম ব্যস্ততায় এ বিষয়ে অনেকেরই মনোযোগ দেয়া হয় না। এক্ষেত্রে, বিশেষকরে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আরো বেশি সচেতন হওয়া দরকার। যদি আপনার গ্যাসটোএন্টোরাইসিস বা পাকস্থলী ও অন্ত্রে ব্যথা অনুভূত হয়, তাহলে ব্লাড-সুগার কমানোর ওষুধ ও ইনসুলিন বন্ধ করুন। ডাক্তারের কাছে যান, তার পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
ঊর্মি: হ্যাঁ, তৌহিদ ভাই। আপনি আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেন। এবার আমি যে বিষয়টি বলবো, সেটিও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এবারের পরামর্শটি সেই সব ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, যাদের নিয়মিত ভ্রমণ করতে হয়। আর সেটি হল, ভ্রমণকালীন সমস্যার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করা।
প্রিয় শ্রোতা, আমাদের অনেকেরই Motion sickness ও Sea sickness থাকতে পারে। ভ্রমণের সময়ই এটি বেশি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, তীব্র স্টমাক পেইন হতে পারে। বেশি বমি হলে, শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এটা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই, যাদের এ সমস্যাটি রয়েছে, তাদের প্রথমেই উচিত মোশন সিকনেস প্রতিরোধক ওষুধ খেয়ে নেয়া, তারপর ভ্রমণে বের হওয়া। তা নাহলে পথে মাঝে হঠাত অসুস্থ হওয়া খুবই কষ্টকর ও বিব্রতকর।
তৌহিদ: চমৎকার একটি বিষয় আলোচনার জন্য উর্মিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এবার আমি বিশেষজ্ঞদের দেয়া সাত নম্বর পরামর্শ অর্থাৎ আজকের অনুষ্ঠানের সর্বশেষ পরামর্শটি শ্রোতাদের জানাবো।
এটি হলো, ইনসুলিনের সুষ্ঠু সংরক্ষণ
ইনসুলিন ব্যবহারকারীরা হয়তো সবাই জানেন। কিন্তু অসাবধানতা বশত: কেউ কেউ ভুল করে ফেলেন। তাদের জন্যই এ পরামর্শ। সঠিকভাবে ইনসুলিনের সংরক্ষণ নিঃসন্দেহে জরুরি একটি কাজ। ইনসুলিন ফ্রিজে রাখতে হয়। কারণ, তাপমাত্রা কম বা বেশি হলে, ইনসুলিনের উপাদান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ভ্রমণের সময় হাত ব্যাগের ভেতর ইনসুলিন রেখে দিন। ইনসুলিন কখনোই লাগেজে দেবেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ যাত্রার সময়, বিশেষ করে বিমানে বা বাসে চরলে, ইনসুলিনকে হাতের নাগালে রাখুন। এবং তা যত কম সময় রাখা যায়।
ঊর্মি: তো, কথা বলতে বলতে সময় ফুরিয়ে এলো। এবার বিদায় নিতে হবে। সুপ্রিয় শ্রোতা, এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনার মতামত আমাদের জানাতে ভুলবেন না। আপনার সুচিন্তিত ও পর্যালোচনামূলক মতামতের প্রত্যাশায় রইলাম।
আশা করি, আপনি ওয়েবসাইটের মেইল বক্স, ইমেইল বা টেলিফোনে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে তা-ও আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা হলো http://Bengali.Cri.com.cn ইমেইল ঠিকানা হলো ben@cri.com.cn আপনি সরাসরি আমাকে ইমেইল পাঠাতে পারেন। আমার ইমেইল ঠিকানা হলো wanghaiman@cri.com.cn
সবাই ভাল থাকুন, আনন্দে থাকুন। আবার কথা হবে আসছে রোববার একই সময়ে। চাই চিয়ান। (ঊর্মি/তৌহিদ)