Web bengali.cri.cn   
সিয়ামেনের সঙ্গে সোদি নাগরিক আল-খালদির প্রণয়বন্ধন
  2014-07-30 15:42:41  cri

আবুলওয়াহাব এ. আল-খালদি হচ্ছেন সৌদি আরবের একটি পেট্রোলিয়াম কোম্পানির সিয়ামেন শাখার প্রধান ব্যবস্থাপক। ২০০৭ সালে তিনি সিয়ামেনে এসে তিন বছর কাজ করেন। তারপর সৌদি আরবের সদর দপ্তরে ফিরে যান। ২০১২ সালে তিনি আবার পরিবার নিয়ে চীনের সিয়ামেনে ফিরে আসেন।

আল-খালদি বলেন, "চীনে তিন বছর কাজ করার পর আমি সৌদি আরবে প্রত্যাবর্তন করি। কিন্তু আমার আর আমার পরিবারের সদস্যদের মন পড়ে থেকে চীনে। আমরা আবার এখানে ফিরে আসতে চাই। আমার স্বদেশবাসীরা চীনে কাজ করার পর সবাই আমার মতো চীনকে ভালোবাসেন।"

চীনের ব্যাপারে ধারণা আর চীনের জীবন প্রসঙ্গে আল-খালদি বলেন, "চীনা জনগণের চিন্তা-ভাবনা খুব উন্মুক্ত। চীন একটি মহত্ দেশ। দেশটির পাঁচ হাজার বছরের সভ্যতার ইতিহাস আছে। চীন ও আরব দেশগুলোর বন্ধুত্বপূর্ণ আদানপ্রদান প্রাচীনকালের সামুদ্রিক রেশমপথ থেকে শুরু হয়। চীনা জনগণও মহান জনগণ। তারা আন্তরিক ও বন্ধুভাবাপন্ন। চীনে আমার অনেক বন্ধু আছেন। আমরা প্রায়শই পারিবারিক পার্টির আয়োজন করি।"

ছয় বছর আগে আল-খালদি যখন প্রথম বার চীনে আসেন, তখন তিনি জীবনযাত্রা ও কর্মক্ষেত্রে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হন। যেমন সিয়ামেনে বসবাসরত আরব মানুষের সংখ্যা চীনের কুয়াংচৌ বা ঈ.উ'র মতো বেশি ছিলো না। সেখানে হালাল রেস্তোঁরা খুব কম। সৌভাগ্যের বিষয় হচ্ছে সিয়ামেন একটি উপকূলীয় শহর। সেখানে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য আছে এবং প্রচুর সুস্বাদু সামুদ্রিক খাবার পাওয়া যায়। তা ছাড়া কোম্পানির চীনা কর্মীরা বিদেশি সহকর্মীদের নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্য একটি দল গঠন করেছে। আল-খালদি ও তাঁর পরিবার চীনা বন্ধুদের সাহায্য ও বন্ধুত্ব পেয়ে সিয়ামেনকে ভালোবেসেছেন। আল-খালদি বলেন, তিনি পেইচিং, শাংহাই, হাংচৌ, কুয়াংচৌ ও শেনচেনসহ চীনের অনেক শহর গিয়েছেন। তবে তিনি সিয়ামেনকে সবচেয়ে পছন্দ করেন।

আল-খালদির সহকর্মী মাদাম গু চিং বলেন, "সিয়ামেন একটি ছোট নগর। তাদের এ জায়গাটি পছন্দ করার প্রধান কারণ হচ্ছে এটা বড় শহরের মতো না; এটা জীবনযাপনের জন্য উপযুক্ত। তবে দুর্বল দিক হলো এখানে পেইচিং বা শাংহাইয়ের মতো বিশাল বাজার নেই। তবুও তারা এখানকার জীবন উপভোগ করতে পারেন। তারা প্রায়শই কফিসড়কে গিয়ে কফি পান করার পাশাপাশি সিয়ামেনের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করেন।"

আল-খালদি সৌদি আরব ও চীনের দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উন্নয়নের ওপর দৃষ্টি রাখেন। ২০০৮ সালে সিছুয়ানের ওয়েনছুয়ানের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর তাঁর কোম্পানি অনতিবিলম্বে ত্রাণকাজের জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়। তিনি বলেন, "চীন ও সৌদি আরবের সম্পর্ক খুব ভালো। চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও দু'বার সৌদি আরব সফর করেছিলেন। সৌদি আরবের বাদশাহ আব্দুল্লাহও চীন সফর করতেন। চীন ও সৌদি আরবের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনবরত বিকশিত হয়েছে। জ্বালানি ক্ষেত্রে চীন ও সৌদি আরবের মধ্যে অনেক সহযোগিতা রয়েছে। চীন সৌদি আরব থেকে তেল আমদানি করে। অন্যদিকে সৌদি আরব চীন থেকে অনেক নিত্যপণ্য আমদানি করে।"

মাদাম গু চিং সংবাদদাতাকে বলেন, এখন সিয়ামেন শাখায় সৌদি আরব থেকে আসা কর্মীর সংখ্যা দশ-বারো জন। তাঁদের সংস্কৃতি উচ্চ। তাদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে। তিনি বলেন, (রেকর্ডিং-৭)

"আল-খালদি একজন আশাবাদী ও ইতিবাচক ব্যক্তি। মানুষের সাথে সবসময় ভালো ব্যবহার করেন। তিনি খুব যত্নবান ব্যক্তি। বলা যায়, আমাদের কোম্পানির সৌদি আরবের কর্মীরা সবাই অমায়িক এবং তাদের সাংস্কৃতিক গুণ অপেক্ষাকৃত উঁচু।"

আল-খালদি তিন সন্তানের জনক। তাঁর বড় মেয়ের বয়স ১৬, মেঝ মেয়ের ১৪ এবং ছোট ছেলের ১৩ বছর। এখন তারা সবাই সিয়ামেনের আন্তর্জাতিক স্কুলে পড়ে। তারা ইংরেজি ক্লাসে যোগদান ছাড়া চীনা ভাষাও শেখে। আল-খালদি সংবাদদাতাকে বলেন, ভবিষ্যতে সৌদি আরবে ফিরে যান বা চীনে থেকে যান – যাই হোক তিনি সন্তানদের পছন্দকে সম্মান করবেন। পরবর্তীতে দীর্ঘকাল তিনি চীনে থাকবেন। কারণ চীনে তার প্রিয় চাকরি, ঘনিষ্ঠ বন্ধু আর অনেক অবিস্মরণীয় জিনিস রয়েছে। (ইয়ু/এসআর)

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040