Web bengali.cri.cn   
দেশে ফিরছেন বিদেশে স্নাতক চীনারা
  2014-07-16 18:34:57  cri

বিদেশি বিশেষজ্ঞ বিষয়ক চীনের রাষ্ট্রীয় প্রশাসন এবং শেনচেন পৌর সরকারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দ্বাদশ চীন আন্তর্জাতিক প্রতিভা বিনিময় সম্মেলন সম্প্রতি শেনচেনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের সংবাদদাতা লক্ষ্য করেছেন, বিদেশে স্নাতক চীনের উচ্চপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা অধিক থেকে অধিকতর সংখ্যায় দেশে ফিরে আসছেন এবং গবেষণা খাত থেকে ফলিত বিজ্ঞান দলে যোগ দিচ্ছেন। এখন শুনুন এ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন।

'বিদেশ থেকে ফিরে আসা প্রতিভা সংক্রান্ত প্রতিবেদন-২০১৩' শীর্ষক নীলপত্রে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে ফিরে আসা প্রতিভাবান ব্যক্তিদের ৮৬ শতাংশই এখন ছয় মাসের মধ্যে চাকরি পেয়ে যান। তাঁরা মূলত পেইচিং, শাংহাই, কুয়াংতোং ও চিয়াংসুসহ শিল্পোন্নত বড় মহানগর বা প্রদেশে যেতে পছন্দ করেন। বিদেশ থেকে ফিরে আসা ৪১.৬ শতাংশ প্রতিভাবান ব্যক্তি পেইচিংয়ে থাকেন। হুয়াআও উপাত্ত প্রযুক্তি কোম্পানি লিমিটেড হচ্ছে ব্রিটেন থেকে ফিরে আসা একদল ছাত্র-প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। এ কোম্পানির উদ্ভাবন বিভাগের ব্যবস্থাপক মাদাম ইয়াও সংবাদদাতাকে বলেন, জনগণের দৈনন্দিন জীবনের সুবিধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তাদের কোম্পানি চীনের উপাত্ত শিল্পায়নের জন্য প্রচেষ্টা চালায়। তিনি বলেন, "আমরা বিদেশেও উপাত্ত শিল্পায়ন কাজ করতে পারি, তবে আমরা তা পরিত্যাগ করেছি। আমরা আশা করি, চীনারা সবচেয়ে উন্নত মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। চীন সরকারের নীতি বিদেশে অধ্যয়নরত উচ্চ পর্যায়ের প্রতিভাবানদের দেশে ফিরে এসে প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য সহায়ক। আমরা ২০১১ সালে দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিই।"

বিদেশ থেকে ফিরে আসা অনেক প্রতিভাবান ব্যক্তি নিজেরা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ছাড়াও চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করেন। তাঁরা শিক্ষাদান করার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নিজেদের গবেষণার বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব বাস্তবে প্রয়োগের চেষ্টা করেন।

সুচৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের বস্তু ও রসায়নবিদ্যা, রাসায়নিক শিল্প বিভাগের অধ্যাপক গু হোং ওয়েই হচ্ছেন তাঁদের মধ্যে একজন। তিনি সংবাদদাতাকে বলেন, প্রতিষ্ঠান স্থাপনে সহায়তা করা হচ্ছে চীন সরকার আন্তর্জাতিক প্রতিভা আকর্ষণের একটি ভালো উপায়। বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুফল চীনে আরো ভালোভাবে প্রয়োগ করার জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকার বিদেশ থেকে ফিরে আসা প্রতিভাবান ব্যক্তিদের স্বদেশে প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সহায়তার মাত্রা জোরদার করেছে। তবে তিনি এ কাজের কয়েকটি বাস্তব সমস্যা উল্লেখ করে বলেন, "ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সময় দু'টি বিষয় উপলব্ধি করতে হবে। প্রথমত, চীনে ভালো সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ফিরে এসে প্রতিষ্ঠান স্থাপন করলেই তা সফল হবে – এমন নয়। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে আপনার জ্ঞান স্থানীয় শিল্পে কাজে লাগানো। দ্বিতীয়, সংশ্লিষ্ট ফলিত ক্ষেত্রের গবেষণা করা। কেবল এক ক্ষেত্রের ওপর মনোযোগ দিলে নিজের ভবিষ্যত উন্নয়ন সীমিত করা হবে। ফলে বিদেশ থেকে লব্ধ উন্নত জ্ঞান চীনে প্রয়োগ করতে পারলে, তা বৈজ্ঞানিক ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্র উন্নয়নের জন্য ভালো হবে।"

বিদেশে অধ্যয়নরত নবীন ছাত্রছাত্রী দেশে ফিরে এসে প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রক্রিয়ায় যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন, সেগুলো সমাধানে সহায়তা দেওয়ার জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ বিষয়ক চীনের রাষ্ট্রীয় প্রশাসন বিদেশি বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানিয়ে চীনা ছাত্রছাত্রীদেরকে সঠিক নির্দেশনা দেয়।

চীনে নেদারল্যান্ডসের ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ সংস্থার প্রতিনিধি থু দা চাও সংবাদদাতাকে বলেন, গত পাঁচ বছরে নেদারল্যান্ডসের অনেক অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ চীনে এসে বিদেশ থেকে ফিরে আসা চীনা ছাত্রছাত্রীদের প্রতিষ্ঠিত কৃষি, পরিবেশ সুরক্ষা, পণ্য পরিবহণ এবং পানি ব্যবস্থাপনাসহ নানা খাতের কোম্পানিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে লক্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

থু দা চাও বলেন, "চীনের অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে নানা প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের বিশেষজ্ঞরা চীনে এসে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। যেমন তাঁরা শানতুং প্রদেশের ওয়েইফাং শহরে নতুন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিখাতের প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে দুগ্ধবতী গাভীর প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানো এবং রোগ প্রতিরোধ করা যায়, সে সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছেন।"

চীন সরকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আয়কর, বিক্রয় কর আর মূল্য সংযোজন কর কমানো এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ নানা উপায়ে বিদেশ থেকে ফিরে আসা প্রতিভাবানদের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন আর নতুন পণ্য গবেষণাকে সমর্থন দিচ্ছে এবং এর মধ্য দিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। (ইয়ু/এসআর)

 

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040