জুলাই ১২: গত ৯ ও ১০ জুলাই পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয় ষষ্ঠ চীন-মার্কিন কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সংলাপ। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বিশেষ প্রতিনিধি, রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার ইয়াং চিয়ে ছি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিশেষ প্রতিনিধি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি যৌথভাবে সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। দু'দেশের সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চম দফা কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সংলাপের কাঠামোতে অর্জিত ফলাফলের কার্যকর অবস্থা পর্যালোচনা, গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে মত বিনিময় করেছে দু'পক্ষ। সংলাপে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ধরণের বড় রাষ্ট্র সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কৌশলগত পারস্পরিক আস্থা গভীর করেছে এবং মতভেদকে গঠনমূলকভাবে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করেছে।
এ দফার কৌশলগত সংলাপে মোট ১১৬টি সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এর প্রধান প্রধান বিষয়গুলো হলো,
১. ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের যোগাযোগ: দু'পক্ষের নেতৃবৃন্দ অব্যাহতভাবে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের সফর, বহুপক্ষীয় সুযোগের সাক্ষাৎ, সংলাপ ও চিঠি বিনিময়সহ নানা পদ্ধতিতে ঘনিষ্ঠ ও নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখবেন।
২. দুটি বাহিনীর সম্পর্ক: চীন ও যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলেছে যে, চীন-মার্কিন নতুন ধরণের সামরিক সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালাবে, জলদস্যু বিরোধী, সমুদ্রে উদ্ধার, মানবিক ত্রাণ কাজ, দুর্যোগ হ্রাস করাসহ দু'পক্ষের অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করা হবে।
৩. চীন-মার্কিন সামরিক তৎপরতা: যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুটি বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযানে পারস্পরকে অবহিত করার ব্যবস্থা এবং সমুদ্রে ও আকাশে প্রয়োজনে যৌথ কার্যকলাপের মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করা হবে।
৪. সন্ত্রাস দমন বিষয়ক আলোচনা: দু'পক্ষ সন্ত্রাস দমন সহযোগিতা আরো জোরদার করবে এবং আগামী ১৫ জুলাই ওয়াশিংটনে চীন-মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সন্ত্রাস দমন বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
৫. আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু: আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে যোগাযোগ ও সমন্বয় আরো জোরদার করা হবে এবং হাতে হাত রেখে যৌথভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা হবে।
৬. কোরীয় উপদ্বীপ সমস্যা: ২০০৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে ছয় পক্ষীয় বৈঠকের লক্ষ্য অর্থাৎ শান্তিপূর্ণ উপায়ে কোরীয় উপদ্বীপ পরমাণু অস্ত্রমুক্তকরণ বাস্তবায়ন এবং উপদ্বীপের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার গুরুত্ব আবারো উল্লেখ করা হয়েছে।
৭. ইরানের পারমাণবিক সমস্যা: কূটনৈতিক উপায়ে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধান করা, মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করার ক্ষেত্রে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন স্বার্থের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতি দমন, শুল্ক বিভাগ, পরিবহন, কনসাল, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংরক্ষণ, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তাসহ ব্যাপক ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে দু'পক্ষ। (ইয়ু/তৌহিদ)
| ||||