Web bengali.cri.cn   
দা ছেং
  2014-06-03 15:36:20  cri

 

ফোং থাং, লেখালেখি শুরুর আগে তিনি অন্য কাজ করেছেন। যেমন, Mckinsey & Company তে তিনিও কাজ করতেন। এখন শুনুন 'সান সি লিউ তা'র চতুর্থ প্রবন্ধ

আপনি কেমন আছেন?

সময় কত দ্রুত চলে যায়! প্রায় এক বছর ধরে আমি GQ ম্যাগাজিনর জন্য প্রবন্ধ লিখছি। গত বছর আসলেই আমাদের কম যোগাযোগ হয়েছে। প্রতিবার আমরা দেখেছি, আশে পাশে অনেক মানুষ থাকলেও একসঙ্গে পান করা অথবা কথা বলা হয়নি। তাই আজ এক বছর পর তোমাদের কিছু বলতে চাই। আর সেগুলো হলো,

প্রথমত: কাজ

আমার বোন প্রায় ২০ বছর ধরে সান ফ্রান্সিস্কোতে বসবাস করছেন। তার বয়স ৪০ বছর। তাকে সুন বলে ডাকি। তিনি কোন ইংরেজি বলতে পারে না। সিংগুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

২০০৮ সালে, সুন তার স্বামীর সম্মিতি না নিয়েই সান ফ্রান্সিস্কোয় পাঁচটি বাড়ি কিনেছেন। কোন ধরনের অগ্রিম মূল্য না দিয়েই তিনি বাড়ি কিনেছিলেন। এগুলো প্রথম তিন বছর ছিলো সুদমুক্ত। কিন্তু বাড়িগুলো কেনার তিন মাস পর তিনি আর্থিক সংকটে পড়েন।

চাকরি জীবনে প্রথমে ২০০৮, ২০০৯ সালে আমি Mckinsey & Companyতে কাজ করি। আমাদের একজন গ্রাহকের আন্তর্জাতিকভাবে তেলের দাম প্রায় ২'শ মার্কিন ডলার থেকে ৪০ মার্কিন ডলারে নামানোর অভিজ্ঞতা আছে, অন্য একজন গ্রাহকের বাল্টিক সাগরের মাল পরিবহনের সূচক ৯০ শতাংশ কমানোর অভিজ্ঞতা আছে।

২০০৯ সালে, আমি কোম্পানি থেকে কাজ ছেড়ে দেই এবং হং ছৌ কোম্পানিতে যোগ করি। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমি দ্রুত বুঝতে পারি যে, কাজ আগের চেয়ে বেশি, তবে টাকা আগের অর্ধেক। আমি ভেবেছি যে, প্রতিদিন ৭ ঘন্টা ঘুম, ১০ মিনিট দাঁড়ানো, এক হাজার স্টেপ হাঁটা, আর ১০ পাতা বই পড়বো। কাজের চাপে এগুলো স্বপ্নের মত মনে হলেও আমি প্রতিদিন কাজ থেকে কিছু না কিছু শিখেছি। প্রতিদিন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, আগের চেয়ে এখন আমার চিন্তা কম।

দ্বিতীয় পর্ব: লেখা

২০০৯ সালের বসন্ত উত্সবে, আমি নতুন কোম্পানিতে কাজ নেয়ার পর ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কাজ নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকায় প্রবন্ধ লিখতে আমার খুব দেরি হয়। আমার প্রকাশকের সঙ্গে কথা বলা দরকার। আগামী ৩ থেকে ৬ মাস সময় বের করা উচিত, যেনো প্রবন্ধটি সম্পূর্ণ করতে পারি। অবশ্যই তাদের আগে ভাগেই সব কিছু জানাই। প্রকাশক যথেষ্ট দয়ালু ও বিবেচক। সে আমাকে জানায় যে, ওই বছর অর্থাত ২০১০ সালের শেষ দিকে লেখা জমা দিলেই চলবে। একথা শুনে আমি মুগ্ধ হই। আর আসল কথা হলো যে, বই ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভাল মানুষও আছে!

আমার এক বন্ধু মিয়াও উয়েই। সে গত ২০ বছরে প্রতিদিন ৩'হাজার শব্দের প্রবন্ধ লিখেছে। একবার সে একটি উপন্যাস '除非灵魂拍手作歌'---লিখলো। এর অর্থ, আত্মার গেয়ে ওঠা, হাততালি ও গান লেখা।

সে আমাকে বললো যে, তার বইয়ের জন্য একটি ভূমিকা লিখে দিতে। আমি লিখে দিয়েছিলাম। ভূমিকার শেষে আমি লিখেছি: মনের ভেতর রয়েছে ছোট্ট একটি স্বপ্ন-আগুণ। মাটি থেকে খানিকটা ব্যবধানে রয়েছে স্বপ্নের ধারক আমার সে দেহটি। হোক না মহান বা সাধারণ আমার জীবন। আমি শুধু একজন ভাল লেখক হতে চাই।

এরপর, ২০০৯ সালে নভেম্বরে, আমি চীনের চু হাই শহরে 'চীনের অষ্টম তরুণতরুণী লেখক প্রতিযোগিতা' বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। এবারের প্রতিযোগিতা পুরস্কার ছাড়াও কিছু বোনাস রয়েছে। ৫ বছর আগে, যখন আমি সে পুরস্কার পেয়েছিলাম, তখন শুধু একটি সনদপত্র দেয়া হত। সব কিছু যে এগিয়ে যাচ্ছে, এটা তারই প্রমাণ।

এবার প্রতিযোগিতার শিরোনাম হলো 'লেখা--- মতাদর্শে ফিরে আসা'। বর্তমানে, অনেক মানুষ পা নিয়ে, হাত নিয়ে, মেয়ে মানুষ নিয়ে প্রবন্ধ লিখে, অল্প কিছু মানুষ বিবেক বুদ্ধি নিয়ে, মন-মানসিকতা নিয়ে লেখে। আমি সে অনুষ্ঠানে বলি, আসলে তিনটি কারণ, প্রথমত, অনেক তরুণ-তরুণীর লেখার অভ্যাস অনেক আগে একটা নির্দিষ্ট ছাঁচে গড়ে উঠলে তা পরিবর্তন করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাদের মধ্যে অনেকের লেখা ভালো নয়। দ্বিতীয়টি হলো, জীবনের অনেক ইস্যু নিয়ে তারা স্পষ্টভাবে চিন্তা করেনি। এরপর, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হলো, তাদের জীবনে অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। তাদের নিজস্ব কোন অভিজ্ঞতা নেই। সবই অন্য মানুষের জীবন থেকে ধার করা জ্ঞান।

তৃতীয় পর্ব: জীবন

২০০০ সালে আমি একটি কর্মসূচী তৈরি করি। এতে রয়েছে, আন ইয়াং শহরের ইং স্যু জেলায় ১'শ দিন থাকা, ক্ষোদিত দৈববাণী নিয়ে পড়াশোনা করা, দুটো প্রাচীণ চীনা বই পড়া, এক বছরের সন্নাসী হওয়া, ৫টি উপন্যাস লেখা, আমার মা'র সঙ্গে মঙ্গোলিয়ায় যাওয়া, বাবার সঙ্গে মাহজং খেলি; খং ফু লেখক কু লং'র বইগুলো আবারো পড়া...ইত্যাদি। আজ বহু বছর পর মনে হচ্ছে, সে তালিকার অনেকগুলোই বাস্তবায়ন করা হয়নি।

গভীর রাত। আমি অনেক ভেবেছি। আকাশের চাঁদ কত বড়, কুকারের চেয়েও বড়, রাস্তায় ঝুলানো বাতির চেয়েও বড়, মানুষের আকাঙ্খার চেয়েও বড়, হয়তো আরো বড়। হয়তো সে কর্মসূচি বা বাকেট লিস্টের কাজ আমি কিছুই সম্পন্ন করিনি, তবে নতুন এ কোম্পানিতে প্রতিদিন আমি অন্য মানুষকে সহায়তা দেবো। আমি নিজের ঘুমের সময়ে কমিয়ে দু'তিন বছরে একটি ভাল উপন্যাস লিখবো, সে উপন্যাসটি হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের জন্য কলাণ্যকর হবে। হ্যাঁ, ওয়াং ফেং, তুমি তোমার ম্যাগাজিন ভালভাবে চলবে, প্রতিটি সংখ্যায় মজার সব তথ্য ও নির্ভুল চিন্তাধারার কথা বলবে, এতে হাজার হাজার মানুষের জীবন আরো সুন্দর হবে।ৱ

সময় কত দ্রুত ফুরিয়ে যায়! এক বছর পুরণ হলো। আরো দীর্ঘ পথ যেতে হবে। তোমার কল্যাণ কামনা করছি।

বন্ধুরা, এবার চীনা কবিতার আসর। প্রথমে চীনা ভাষায় কবিতাটি আপনাদের জন্য পড়ছি।

লি ছিং চাও

 

醉花阴•薄雾浓云愁永昼

薄雾浓云愁永昼,瑞脑销金兽。佳节又重阳,玉枕纱厨,半夜凉初透。

东篱把酒黄昏后,有暗香盈袖。莫道不销魂,帘卷西风,人比黄花瘦。

পো উ নং ইয়ুন ছৌ ইয়ং চৌ, রুই নাও সিয়াও চিন সিও।

চিয়া চিয়ে ইয়ও ছং ইয়াং, ইয়ু চিয়েন সা ছু, পান ইয়ে লিয়াং ছু থৌ।

তুং লি পা চিউ হুয়াং হুন হৌ, ইউও আন সিয়াং ইং সিউ।

মুও দাও পু সিয়াও হুন, লিয়েন চুয়ান সি ফেং, রেন পি হুয়ান হুয়া সৌ।

লি ছিং চাও তার এ কবিতাটিতে তার স্বামীর অভাব বোধ করার কথা তুলে ধরেছেন। কবিতাটির কথাগুলো এরকম।

সারা দিনে আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। রুক্ষ এ আবহাওয়ায় বিষন্ন হয়ে উঠি। আমি শুধু বাড়িতেই বসে থাকি বিশেষ করে নবম উত্সব উপলক্ষে, দিনের সময় কম, রাত হয়ে ওঠে দীর্ঘ। আক্ষেপ করে উঠি রাত কি কখনও শেষ হবে না ?

সময় তা নিজেই খেলা করছে। যখন আমরা সুখে থাকি, সময় কী দ্রুত ফুরিয়ে যায়। যখন আমাদের কষ্টবোধ হয়, সময় হয়ে ওঠে সীমাহীন। একা একা, বিষণ্ণ এ হাওয়ায় আমি হয়ে উঠি স্পর্শকাতর।

এখন আমি একা একা একটু মদ খেয়ে নেই। কিন্তু, তার প্রভাবে মনের হতাশা কমে না। বাড়ির সামনের চন্দ্র মল্লিকার পাশে দাঁড়াই! কি সুন্দর! তবে তোমার সঙ্গে তা উপভোগ করতে পারি না। হায় প্রিয়...

ফিরে আসি ঘরে, খুলে দেই জানালা, বাতাসে ভরে যায় চার দেয়াল...আয়নায় দেখি নিজেকে/ আমি কি বাড়ির সামনের চন্দ্রমল্লিকার চেয়েও পাতলা/ লিকলিকে / হাড়-জিরজিরে /শুকিয়ে যাওয়া কিছু।

বন্ধুরা, লি ছিং চাও একজন নারী কবি, তার কবিতা চীনে বেশ জনপ্রিয়, আজকের কবিতার একটি বাক্য: 人比黄花瘦রেন পি হুয়ান হুয়া সৌ- খুবই জনপ্রিয়। যখন বন্ধুরা কাউকে মিস করেন, কোন কিছু খেতে ইচ্ছে করে না, শরীর খারাপ হয়ে যায় তখন'人比黄花瘦রেন পি হুয়ান হুয়া সৌ' বলতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040