১. বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে চীন
অদূর ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে চীন। সম্প্রতি ব্রিটেনের 'দ্য গার্ডিয়ান' পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ইন্টারন্যাশনাল কম্পারিজন প্রোগ্রাম (আইপিসি) পরিচালিত জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে এমন আভাস দেওয়া হয়।
আইপিসি'র পর্যবেক্ষণ অনুসারে, ২০০৫ সালে চীনের অর্থনীতির আকার যেখানে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ৪৩ শতাংশের সমান, সেখানে মাত্র ছয় বছর পর ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৭ শতাংশে। আইপিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এখনও বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবেই আছে, তবে ক্রয়ক্ষমতার (পার্সেজিং পাওয়ার পারিটি বা পিপিপি) বিচারে দেশ দুটির অবস্থান কাছাকাছি।"
এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-ও ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের প্রবৃদ্ধির বিচারে চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে।
উল্লেখ্য, আইপিসির হিসাব অনুযায়ী ক্রয়ক্ষমতা (পিপিপি)-র ভিত্তিতে ২০১১ সালে বিশ্ব অর্থনীতির জিডিপিতে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার ছিল ১৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং চীনের শেয়ার ছিল ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে জাপানকে পেছনে ফেলে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ শেয়ারের অংশিদার হয়ে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয় ভারত।
২. শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুত চাইলেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা
শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুত সরবরাহের দাবি জানালেন বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গঠিত বাণিজ্য সহায়ক পরামর্শক কমিটির প্রথম সভায় তাঁরা বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে একদিকে শিল্পমালিকদের খরচ বাড়ছে এবং অন্যদিকে নতুন শিল্পকারখানায় গ্যাস-বিদ্যুত মিলছে না। ফলে বিনিয়োগ পড়ে আছে।
রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-র সভাকক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, আমদানি ও রপ্তানি-প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সুদের হার কমানো এবং রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যকরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তাঁরা। এ ছাড়া, জিএসপি সুবিধাসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করতে সরকারের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতি বাড়ানোর পরামর্শ দেন ব্যবসায়ীরা।
৩. জুনের প্রথম সপ্তাহেই পদ্মা সেতুর কার্যাদেশ পেতে পারে চীনা কোম্পানি
নির্ধারিত সময়ের আগেই জুনের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা সেতুর কার্যাদেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়ায় পদ্মা সেতু রেস্ট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রস্তাব জাতীয় সার্থের বিরুদ্ধে না-গেলে তারাই এ কাজ পেতে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, একমাত্র এই কোম্পানিটিই পদ্মা সেতুর জন্য আর্থিক প্রস্তাব জমা দিয়েছে। ডেলিম এল অ্যান্ড টি জে ভি এবং স্যামসাং সি অ্যান্ড টি গ্রুপ দরপত্র কিনলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আর্থিক প্রস্তাব জমা দিতে ব্যর্থ হয়। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ১৭২ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
৪. ইউরোপে ভারতীয় আম ও সবজি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ভারত থেকে পাকা আম ও চার ধরনের সবজি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ২৮ সদস্যের ইইউ-র এ সিদ্ধান্ত পয়লা মে থেকে কার্যকর হয়েছে। ইইউ এসব ফল ও সবজির চালানে অ-ইউরোপীয় ফলের পোকার (নন-ইউরোপিয়ান ফ্রুট ফ্লাইজ) মতো অবাঞ্ছিত পোকা পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর থেকে সব ধরনের চালান প্রত্যয়ন ও পরীক্ষার আওতায় আনা হয়। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের (এফআইইও) সভাপতি রফিক আহমেদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানান। এদিকে, ভারতের প্রধান রপ্তানি উন্নয়ন সংস্থা ইউরোপে ভারতীয় আম আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য ব্রাসেলসে আবেদন জানিয়েছে। ব্রাসেলসভিত্তিক ইউরোপ-ইন্ডিয়া চেম্বার অব কমার্স (ইআইসিসি) পৃথক এক বিবৃতিতে, এই সিদ্ধান্তকে 'ভুল' হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছে যে, এই নিষেধাজ্ঞার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। উল্লেখ্য, পৃথিবীর বৃহত্তম আম রপ্তানিকারক দেশ ভারত বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন জাতের আম রপ্তানি করে থাকে।
৫. ব্যাংকিং ব্যবসার শুরুতেই ৭০০ শাখা খুলবে ভারতের বৃহত্তম ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা বন্ধন
প্রায় ৭০০টি শাখা খোলার মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করেছে ভারতের বৃহত্তম ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা বন্ধন ফিনানসিয়াল সার্ভিসেস। শনিবার সংস্থার চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দ্রশেখর ঘোষের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা এ তথ্য জানায়। তিনি জানান, ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসার জন্য ইতিমধ্যেই তার প্রতিষ্ঠান যে ২,০১৬টি শাখা খুলেছে, তার কয়েকটিকেও ব্যাঙ্কের শাখায় রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন ব্যাঙ্কের অধিকাংশ শাখা গ্রামাঞ্চলে হবে বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যাংকিং ব্যবসার লাইসেন্স অর্জন করে বন্ধন। ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসায় সংস্থাটির গ্রাহক সংখ্যা ৫৫ লক্ষ। গত তেরো বছর গ্রামে-গ্রামে ক্ষুদ্রঋণ পরিষেবা দিয়েছে বন্ধন। এ ক্ষেত্রে তাদের ব্যবসা ছড়িয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ২২টি রাজ্যে। গ্রামের মানুষের পাশাপাশি অতি ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থাকে ঋণ দেওয়াকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে বন্ধন।
৬. পাকিস্তানকে ১২০০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্ব ব্যাংক
পাকিস্তানকে ১২০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় গত শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। আগামী পাঁচ বছর ধরে এই ঋণের অর্থ ছাড় দেওয়া হবে। এর মধ্যে আগামী সপ্তাহে ছাড় দেওয়া হবে ১০০ কোটি ডলার। ঋণের সুদের হার হবে ২ শতাংশ।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঋণের অর্থ জ্বালানি খাত, অর্থনীতি, শিক্ষা ইত্যাদি খাতে ব্যয় হবে। উল্লেখ্য, পাকিস্তান সাম্প্রতিক কালে ব্যাপক জ্বালানি সংকট এবং রাজস্ব ঘাটতিতে ভুগছে। সরকারি খরচ মেটাতে দেশটিকে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে।
৭. আফগানিস্তানের রপ্তানি আয় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে
চলতি বছর আফগানিস্তানের রপ্তানি আয় গত বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে। শনিবার কাবুলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন আফগানিস্তান চ্যাম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এ সি সি আই)-এর প্রধান মোহাম্মাদ কুরবান হাকজো। তিনি জানান, এতদঞ্চলে ও ইউরোপে উপযুক্ত বাজার খুঁজে পাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম হওয়া, রপ্তানি পণ্যের মান বৃদ্ধি ও ফসলের বাম্পার ফলনের কারণে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো জানান, এসময় পাকিস্তান, ভারত, ইরান, রাশিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া, উপসাগরীয় দেশগুলো, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে আফগানিস্তান ফল, তুলা, মূল্যবান পাথর, ফলের রস ও দুগ্ধজাত পণ্য রপ্তানি করেছে। উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের রপ্তানিপণ্যের অধিকাংশই ক্রয় করে পাকিস্তান।