লিউ ইয়ুর প্রবন্ধ '一个人要像一支队伍'—ই কে রেন ইয়াও সিয়াং ই জি তুই উ, মানে 'একজন একটি দলের মত'। গত সপ্তাহে বন্ধুদের জন্য প্রথম পর্ব অনুবাদ করেছি, তাহলে শুনুন প্রবন্ধটির অবশিষ্ট অংশ:
কখনো কখনো আমিও একটু উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। হ্যাঁ, এখন আমি চীনে থাকি। আমরা জীবনে কোন আর্থিক চিন্তা নেই। কিন্তু, আমাদের চিন্তারগুলোর মাঝে একাকীত্ব সবচেয়ে ভয়াবহ। একাকী জীবনে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দমুখর সময় অথবা আড্ডার সুযোগ নেই। সুন্দর বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনের প্রত্যাশাও সেখানে স্পষ্ট নয়। একাকীত্বের সময় আমরা চিন্তা করতে পারি। তবে এ ধরনের চিন্তা খুবই কষ্ট ও অব্যক্ত যন্ত্রণার। দীর্ঘদিনের একাকীত্ব যেনো, আকাশ ত্যাগী পাখির মত।
কখনো কখনো আমরা বুঝতে পারি না, কী আমাদের মনের সমস্যা ? সত্যিই এটি সমস্যা কিনা। আমরা জানি না, অন্য মানুষ কিভাবে চিন্তা করে। এ যেনো ঠিক দিন ও রাতের সম্পর্কের মত। দিন বোঝে না রাতের কালো, রাত বোঝে না দিনের আলো।
আমি চিন্তা শুরু করি। যদি আমি একা থাকি, আমি কি এ বিশ্ব থেকে আরো দূরে চলে যাবো ? কারো সঙ্গে কিছু বিনিময় হবে না ! আমি কি বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবো না ?
আসলে একজন মানুষ চিন্তার চেয়েও শক্তিশালী। যোগাযোগ, লেনদেন, আলোচনা ও আড্ডার অভাব যখন স্পষ্ট, তখন শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবি। তবে, আমি এভাবেও থাকতে পারি। এ সময় রাজনৈতিক প্রবন্ধ লিখেছি, উপন্যাস লিখেছি। তাই আমি জানি যে, একাকীত্ব আসলে এত ভয়াবহ না।
তাহলে একাকীত্বের সীমাবদ্ধতা কি রকম ?
তোমার জন্য জবাব হলো, 'একাকীত্বের কোন সীমাবদ্ধতা নেই।'
যখন আমি তরুণ ছিলাম, তখন মনে হতো, একাকীত্ব খুবই ব্যক্তিগত একটি অনুভব। তবে বড় হবার পর বুঝলাম,একাকীত্ব খুবই হতাশাজনক। আর এখন, আমি চেষ্টা করি কিভাবে একাকীত্বকে এড়িয়ে চলা যায়।
কখনো কখনো মানুষের বেপরোয়া হওয়া দরকার।
সত্যি, বেপরোয়া হওয়ার সঙ্গে দুঃখের কোন সম্পর্ক নেই। বেপরোয়া ভাব মানুষের মনে শান্তি আনে। কারণ, প্রকৃত বেপরোয়া মানুষ কারও ওপর নির্ভর করে না। এ সময়ের কিছু কাজে মানুষ চমৎকৃত হয়।
এ সময় আমরা দেখতে পারি,বাজারে কি কি নতুন বই বা চলচ্চিত্র এসেছে। ইন্টারনেটে ঘেঁটে দেখতে পারি, এ বিশ্বে কখন কি ঘটছে। একাকীত্বের সময় সঙ্গীতের সৌন্দর্য,জ্ঞানের যাদু, ভালবাসার সম্ভাবনা খুব চমৎকারভাবে উপভোগ করতে পারি। তাহলে, আমরা কি নিয়ে অভিযোগ করবো ?
আমার এক বন্ধু আগে একই কবিতা লিখেছে, তার নাম হলো '一个人要像一支队伍'---ই কে রেন ইয়াও সিয়াং ই চি তুই উ। নিজ সক্ষমতা বুঝতে ব্যর্থ হলেও স্রোতের বিপরীতে চলতে হবে। একা হলেও একজন মানুষ একটি দলের মত, এমনকি একটি বাহিনীর মত। নিজের মনকে শক্তি দেই, নিরূত্সাহিত হবে না, বেপরোয়া ভাবকে ভালবাসি। মনে রাখতে হবে, জীবনকে ভালবাসি। তাই পরাজিত হব না।
বন্ধুরা, লিউ ইয়ুর প্রবন্ধ '一个人要像一支队伍'---ই কে রেন ইয়াও সিয়াং ই চি তুই উ এখানে শেষ হয়েছে, আশা করি আপনারা এ প্রবন্ধটি পছন্দ করবেন।
এবার শুনুন প্রতিদিনের কথা:
১. যথার্থতা:
মানুষ অবশ্যই ভুল করে। সাধারণত মানুষ সমস্যার সঙ্গে সব সময় যুদ্ধ করে। কখনো কখনো মানুষ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। যদি আমরা সবসময় যথার্থ হতে চাই, তাহলে আমাদের জীবনের সব ক্ষেত্রে প্রচুর সময় দরকার হবে। নিখুঁত কাজ করা বা যথার্থতা চাওয়া ভাল অভ্যাস হলেও, আসলে তা আমাদের ওপর, এমনকি আমাদের কাছের মানুষদের ওপর যথেষ্ট চাপের কারণ হয়। অন্যকে চাপের মুখে রেখে নয়, বরং, আমরা নিজের ভুলগুলো মেনে নেবো, অন্যের ভুলও মেনে নেবো। এভাবে আমরা একটি সুষম সমাজ গড়তে পারি।
২. অভিযান
কতগুলো দিন আপনি শুধু নিজ বাড়িতে ছিলেন? ভ্রমণে যাননি ? বাইরের বিশ্বকে জানতে পারেননি ? আমরা যদি সারা জীবন শুধু নিজ জন্মস্থান ও নিজ দেশেই থাকি, তাহলে সংকীর্ণ মনের মানুষ হয়ে যাবো।
এত বেশি কাজ যে, কোন ছুটি নেই। বাবা মা আমাদের দেখতে চান। আমরা বলি, তাদের দেখতে যাওয়ার মত যথেষ্ট টাকা হাতে নেই....এ সবই অজুহাত। যদি ব্যস্ত থাকেন, সুযোগ করে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার বই পড়ুন। স্বপ্ন থাকলে অবশ্যই একদিন দেশ ভ্রমণে বের হতে পারবেন। তাহলে ভয়কে দূরে ঠেলে, আজই শুরু করুন, গণ্ডির বাইরে গিয়ে সুন্দর ও মহান বিশ্বকে দেখুন।
৩. চাহিদা পূরণ:
আমি কাজ পরিবর্তন করতে চাই...আমি বন্ধু চাই...আমি ভালবাসতে চাই।
হ্যাঁ, আমাদের জীবনে বিভিন্ন চাহিদা আছে। এসব চাহিদার কথা সব সময় আমরা বলতে পারি না। কারণ চাহিদার পরিবর্তনে মানুষ ভয় পায়। আমি নতুন নতুন কাজ করতে চাই, তবে পরবর্তী কাজ আগের কাজের চেয়ে ভাল না হলে, আমি কি করবো ? আমি বন্ধু চাই, তবে দৈনন্দিন জীবন একই, কীভাবে নতুন বন্ধু চিনবো ? আমি ভালবাসতে চাই, কিন্তু মনে আঘাত পেলে, আমি কি করবো ? সব সময় কোন পরিবর্তনের আগে, আমরা ভয়ের কাছে পরাজিত হই।
বন্ধুরা, কোন ভয় পাবেন না। উচ্চকণ্ঠে নিজের চাহিদার কথা বলবেন। বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন, পরিবর্তনকে আলিঙ্গন করবেন। ভাল বা মন্দ, যাই হোক না কেনো, আমাদের চেষ্টা চালাতে হবে। তাহলে আমাদের জীবনে সাফল্য ধরা দেবে।