স্যু জি মো
প্রথমেই একটি কবিতা, তবে তার আগে কবিতাটি যিনি রচনা করেছেন এবং যাকে নিয়ে রচনা করেছেন সে সম্পর্কে একটু জেনে নিতে চাই,কেমন?হ্যাঁ, বন্ধুরা, এখন আমি যে নামটি উচ্চারণ করছি তাকে নিয়েই কবিতাটি রচনা করা হয়েছে। লিন হুই ইং, ১৯০৪ সালে চীনের চে চিয়াং প্রদেশের হাং চৌ শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি চীনের একজন বিখ্যাত স্থপতি, কবি ও লেখিকা। তাঁর বিখ্যাত শিল্পকর্ম হলো《你是人间四月天 》নি সি রেন চিয়েন সি ই্যয়ু থিয়েন,《林徽因诗集》লিন হুই ইং সি জি,《窗子以外》-ছয়াং জি ই উয়াই---<তুমি এপ্রিলের মত>, <লিন হুই ইং কবিতা সহিংতা> এবং <জানালার বাইরে>।
লিন হুই ইং
আর যিনি কবিতাটি রচনা করেছেন তিনি হলেন, স্যু জি মো। তিনি ১৮৯৭ সালে চীনের চে চিয়াং প্রদেশের হাই নিং শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বিখ্যাত কবিতা হলো 《再别康桥》জাই পিয়েই খাং ছিয়াও《翡冷翠的一夜》ফেই লেং ছুই দ্যা ই ইয়ে---<ক্যামব্রিজ,আবার দেখা হবে>, <ফ্লোরেন্স এর একটি রাত>।
তাঁর কবিতা ছাড়াও, তিনি একজন সুন্দর পুরুষ। তাঁর দু'জন স্ত্রী । তবে অনেকের মতে, স্যু জি মো'র ভালবাসা লিন হুই ইংকে ঘিরে আবর্তিত হয়। কবিরা কবিতার মাধ্যমে ভালবাসা প্রকাশ করেন, এটাইতো স্বাভাবিক, তাই না?
তাহলে এখন শুনুন, লিন হুই ইং'র জন্য স্যু জি মো'র লেখা একটি সুন্দর এবং তাকে নিয়ে লেখা সর্বশেষ কবিতা। তবে কবিতার আগে, কবিতাটির সঙ্গে যে চিঠি তিনি লিখেছিলেন তা আপনাদের পড়ে শোনাচ্ছি-
'আসলে আমি কি লিখবো জানি না। কয়েকবার আমি কলম নিয়ে লিখতে বসেছি, তবে কিছুই লিখিনি। গত দু'এক দিন ধরে আমার মাথা ঘুরছে। চোখ খুলি বা না খুলি, আমি শুধু তিন দিন আগের সে রাতের কথা মনে করি। আমাদের গাড়ি,অন্ধকারে মিলিয়ে যাচ্ছে... বিদায়! বিশ্বাস করতে পারবো না...ভেবে ভেবে আমি পাগল হবো...আমাদের সম্পর্ক কি...আমরা কি বিদায় জানাতে পারবো...আমার সামনে আবার অন্ধকার ...'।
এবার তাহলে কবিতাটি শুনুন,
আমি আকাশের মেঘ,
তোমার মনে প্রতিচ্ছবি ফেলি
তুমি কোনো আশ্চর্য হবে না
খুশি হবে না
কারণ মুহুর্তের মধ্যে সবকিছু বিলীন হবে
আমরা অন্ধকারের সাগরে পরস্পরকে জানি
তবে এখন আমরা নিজের আলাদা পথে চলবো
আমাদের ইতিহাস
তুমি মনে রাখবে বা না রাখবে
তা অন্ধকারে উজ্জ্বল হবে।
আসলে শেষ পর্যন্ত তাঁর এ চিঠি ও কবিতা লিন দেখেন নি।
বন্ধুরা, আপনাদের জন্য আমি একটি চমত্কার বই খুঁজে পেয়েছি। দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা ইং স্যু'র 'টুয়েন্টিস'। মেয়েদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো বিশ বছর বয়স। বইটি আমার একজন ভালো বন্ধুর কাছ থেকে আমি উপহার হিসেবে পেয়েছি। আমার যখন ২১ বছর বয়স, আমার বন্ধু সি মেং বইটি আমাকে দিয়ে বলে, "আমি আশা করি একটি উজ্জ্বল জীবনের জন্য বইটি তোমাকে সাহায্য করবে'। তাঁর এ কথা শুনে আমি খুবই মুগ্ধ হই।
এখন থেকে এ বইটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে শোনাবো। আমি আশা করি, তরুণীরা এ বই থেকে কিছু শিখতে পারবে।
পর্ব ১
"২০ বছর বয়সে যদি একজন ভাল পুরুষ সম্পর্কে না জানা যায়, তাহলে ৩০ বছর বয়সে ভাল পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে না। ২০ বছর বয়স থেকে যদি সম্পত্তিকে গুরুত্ব না দেয়া যায়, তাহলে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত এক লাখ টাকাও হবে না। স্বপ্ন গুরুত্বপূর্ণ হলে, বাস্তব জিনিসের অভাব হবে না।" বইটির লেখিকা এ কথাগুলো বলেছেন।
হে ছিং নামের একজন মেয়ে লেখিকার হাইস্কুল জীবনের সহপাঠী। হে ছিং স্কুলের একজন বিখ্যাত মেয়ে। দেখতে সে সুন্দরী, তার পড়ালেখা ভাল, ভাল গান করতে পারে এবং খেলাধুলায়ও অন্যদের চেয়ে বেশ এগিয়ে। হে ছিং দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। সে সব সময় বলে,নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের আগে অন্য ইস্যু নিয়ে সে ভাবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করার পর এক ছেলের সাথে তার পরিচয় হয়। সে ছেলে তখন সামরিক সেবা করছে। হে ছিং তাকে এত ভালবাসে যে, তার সঙ্গে একসাথে পড়াশুনা করতে চায়। হে ছিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা বন্ধ করে ছেলেবন্ধুর জন্য অপেক্ষা করে। ছেলেটির সামরিক সেবা শেষ করার পর দু'জন একসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়।
অনেক বন্ধু তাকে রাজি করায়, তবে সে বলে, "ভালবাসার জন্য অবশ্যই সে সবকিছু উত্সর্গ করবে।" হে ছিং মনে করে, ঝুকি থাকলেও সে একজন মেধাবী বলে সবকিছু সমাধান করতে পারবে। তবে তার ছেলেবন্ধুর সামরিক সেবা শেষে তাদের ভালবাসা দ্রুত ভেঙে যায়। হে ছিং এত দুঃখ পায় যে, তার শিক্ষা পরিকল্পনা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রথমে হে ছিং একটি ছোট কোম্পানিতে কাজ শুরু করে। সেখানে সে অসন্তুষ্ট হয় বলে অন্য আরেকটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করে। এভাবে একের পর এক কোম্পানি পরিবর্তনে করে সে। শেষ পর্যন্ত সে কোন স্থিতিশীল কাজের সাথে যুক্ত হতে পারে নি।
বন্ধুরা, একজন মেধাবী মেয়ের জীবনে কেন এত দুঃখ? তার ছেলেবন্ধু কি এ দুঃখের কারণ? না। মেধাবী হলেও হে ছিংয়ের সুখী জীবন সৃষ্টি করার ক্ষমতার অভাব রয়েছে।
আসলে তার সেই ভালবাসার ছেলেটির কারণে নিজের স্বপ্নকে নষ্ট করে ফেলে হে ছিং। এতে আমরা দেখতে পারি যে, ভবিষ্যতে সে আর এরকমের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না।
তাহলে বন্ধুরা, বিশেষ করে মেয়ে বন্ধুরা মনে রাখবেন, মেধাবী হলেও সবসময় না ভেবে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। বাস্তবতার সাথে মিল রেখে সিদ্ধান্ত নিবেন। বাস্তবতাকে না বুঝে সিদ্ধান্ত নিলে অন্য সাধারণ মানুষের চেয়ে তাদের জীবন আরো দুঃখের হবে। সিদ্ধান্তগুলোর সাথে আমাদের মন ও আমরা পরিপক্ক কিনা তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাই মেয়েদেরকে ২০ বছর বয়সের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে নিজের জীবন পরিবর্তন করা যায় এবং একটি উজ্জ্বল জীবন গঠন করা যায়।
প্রিয় বন্ধুরা, এবারে রয়েছে সাহিত্য ও জীবন পর্ব,
বন্ধুরা, সম্প্রতি আমি একটি চমত্কার বই খুঁজে পেয়েছি। বইটিতে প্রতিদিনের কিছু কথা লেখা আছে। আমি ভেবেছি তা আপনাদের জন্য অনুবাদ করবো। আশা করি কথাগুলো আপনারা পছন্দ করবেন। তাহলে, আমি এপ্রিল সম্পর্কে দুটি ছোট উপদেশ বানী শোনাবো। যদি আপনারা পছন্দ করেন, তাহলে আমি আগামী অনুষ্ঠানগুলোতে বেশি বেশি অনুবাদ করবো।
এপ্রিল ১
সমস্যা বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করবে। ভালবাসায় ধৈর্য ধরবে । নিজের প্রতি যত্ন নেবে। বন্ধুদের সহায়তার মাধ্যমে নিজের নেতিবাচক মনোভাব পরিবর্তন করবে । নিজের আর্থিক বিষয়ের একটি লক্ষ্য প্রণয়ন করবে। পরিবর্তন গ্রহণ করবে । ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করবে।
এপ্রিল ২
আমরা নিজেদেরকে আমাদের ভুল ত্রুটি সংশোধনের জন্য প্রস্ত্তত করবো। যদি ত্রুটির কারণে নিজেকে ভালবাসতে না পারি তাহলে অন্যদেরকেও ভালবাসতে পারবো না। আর যদি সেটা না পারি তাহলে আমাদের জীবনকে ভালভাবে উপভোগ করতে পারবো না।
আচ্ছা বন্ধুরা, অনুষ্ঠান শেষ করার আগে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে, তা হলো...ঠিক আছে, 'চলতি প্রসঙ্গ'অনুষ্ঠানের গত তিন মাসের সেরা শ্রোতা! তারা হলেন: দেবাশীষ গোপ, মহঃ হাফিজুর রহমান, মো. এনামুল হক, শাহনাজ পারভীন এবং শাজেদুর রহমান।