Web bengali.cri.cn   
৩৭ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তক মেলায় চীন আন্তর্জাতিক বেতারের উজ্জ্বল উপস্থিতি
  2013-04-11 19:43:47  cri

বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো/সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারও/নয়কো বনে, নয় বিজনে নয়কো আমার আপন মনে-/সবার যেথায় আপন তুমি, হে প্রিয়,সেথায় আপন আমারও ।। -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১০ ই ফেব্রুয়ারি,২০১৩ রবিবার ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে ঠিক রাত ৯ টায় প্রথামাফিক ঘন্টাধ্বনি করে ৩৭ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তক মেলা জনস্রোতে ভেসে শেষ হলো ।শেষের ঘন্টা বাজার আগেই এক বর্ণাঢ্য সমাপ্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল বইমেলার মূল অডিটোরিয়ামে। সেখানে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের শিল্পী সমন্বয়ে পরিবেশিত হয় 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফ্রেবুয়ারি' গানের তালে তালে নৃত্য। বই যে মানুষকে কত টানে তা বইমেলায় না এলে বোঝা দুষ্কর । মেলা কথার অর্থ মিলন । কিন্তু বই মেলা ? বইমেলা আপামর বাঙালি জাতির অতি আপনজন ।১৬ দিন ব্যাপী এবারের বইমেলায় - বিশ্বের অন্যতম সেরা সাহিত্য সংস্কৃতির আসরে এবার ভিড় জমিয়েছিলেন প্রায় ১৭ লক্ষ বইপ্রেমী ও সাধারণ মানুষ ।উল্লেখ্য ১৬ দিন ব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন হয় গত ২৬ জানুয়ারী। এবারের বইমেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক আনিসুজ্জামান। মেলার ফোকাল থিম ছিল 'বাংলাদেশ'। কলকাতার বইমেলায় এবার সেরা বিদেশি প্যাভিলিয়নের সম্মান পেয়েছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। বইমেলায় পাঁচ হাজার বর্গফুট জায়গার ওপর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের আদলে গড়া হয়েছিল ওই প্যাভিলিয়ন। কলকাতা বইমেলা শুধুই বইমেলা নয় ,তর্ক বিতর্ক ,বই প্রকাশের আনুষ্ঠানিক মঞ্চ ,পুরানো দিনের স্মৃতিতে ফিরে যাওয়া ,নতুন করে পুরানো বন্ধুকে কাছে পাওয়া , প্রেমিক প্রেমিকার হাত ধরে ঘুরে বেড়ানো - সব রসদই ছিল এবারের বই মেলায় । তাই তো বইমেলাকে বাঙালি এত আপন করে নিয়েছে । আন্তর্জাতিক ইতিহাসেও প্রথমের দিকেই ঠাঁই পেয়েছে এমন 'সার্বজনীন' মেলা ।

আর বইপ্রেমী বাঙালির প্রিয় পার্বণে বইমেলার সমাপ্তি দিনে (১০ই ফেব্রুয়ারি) মিলন মেলার মাঠে আমার রেডিও ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে লাখো জনতার ভিড়ে আমরা ছড়িয়ে দিলাম চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালের জয়ধ্বনি । মেলার শেষ দিন রবিবার ছুটির দিন থাকায় ভিড়ের চাপে দিশেহারা হতে হয়েছে মানুষকে। আমি এবং আমার ক্লাব 'নিউ হরাইজন রেডিও লিসনার্স ক্লাবে'র লক্ষ্যই হলো সিআরআইয়ের বাংলা বিভাগকে পশ্চিম বাংলার আম জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়া । তাই বই মেলার সমাপ্তি দিনে বইমেলার আয়োজক পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সম্পাদক এবং কলকাতা বইমেলার সাধারণ সম্পাদক মাননীয় ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের বিশেষ অনুমতি নিয়ে আমরা বইমেলার প্রাঙ্গনে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের জন্য ব্যাপক প্রচার অভিযান চালাই । পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের শীর্ষ কর্তা মাননীয় ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের হাতে আমি সিআরআই- বাংলা বিভাগের "পুবের জানালা " পত্রিকা ও সিআরআই হিন্দি বিভাগ থেকে পাঠানো চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১৮তম জাতীয় কংগ্রেসের বিশেষ স্মারক খাম উপহার হিসাবে তুলে দিই । তিনি সিআরআই থেকে বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচার হয় জেনে নিজের হাতে আমাদের ক্লাবের প্যাডে সি আর আই কে একটি শুভেচ্ছা বাণী লিখে দেন (ফটো নম্বর : CRI T 1,2,3,4)। বইমেলায় উপস্থিত স্টার জলসা টিভি চ্যানেল ও রেনবো এফ এম থেকে সি আর আইয়ের বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচারের কথা লাইভ প্রচার করা হয় ।এরপর আমি ও আমার ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক দেবশংকর চক্রবর্তী এবং আরো দশজন সদস্য বইমেলায় উপস্থিত বইপ্রেমী,উত্সবপ্রেমী মানুষের জমজমাট ভিড়ে বিতরণ করতে থাকি "পুবের জানালা " পত্রিকা, রেডিও অনুষ্ঠান সূচী ,সি আর আই বিল্ডিং পেন্যান্ট -প্রভৃতি স্মারক সামগ্রী । বই মেলা প্রাঙ্গনে দেখা হয় ভারতের আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান চিত্রকর সমীর আইচের সঙ্গে । তাঁর হাতে তুলে দিই সি আর আইয়ের ম্যাগাজিন (ফটো নম্বর : CRI S 9,10)। তিনি এবং মেলা প্রাঙ্গনে উপস্থিত বিভিন্ন সংবাদপত্রের সাংবাদিকরা চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালকে নিয়ে আমাদের এই প্রচার অভিযানের ভূয়সী প্রশংসা করেন ।চীন- ভারত মৈত্রী প্রসারে আমাদের মত একটি গ্রামীন ক্লাবের এই উদ্যোগের কথা বইমেলায় উপস্থিত গুণীজন ও সাংবাদিকদের ভূয়সী প্রশংসা পায় ।কলকাতা বইমেলায় উপস্থিত চীনের "দি স্কুল অফ চাইনিজ লাঙ্গুয়েজ" বুক স্টলে উত্সাহী বইপ্রেমীদের ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মত । আমরা চীনের এই বুকস্টলে সি আর আইয়ের বিভিন্ন স্মারক সামগ্রী দর্শক সাধারণের মধ্যে বিতরণ করি এবং সি আর আইয়ের রেডিও অনুষ্ঠান শোনার জন্য অনুরোধ করি । এই স্টলে চীনা কনসুলেটের একজন শীর্ষ ব্যক্তি আমাদের এই চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা দেখে খুবই মুগ্ধ হন । আমরা তাঁকে অনুরোধ করি যাতে পশ্চিম বাংলার ছাত্র -ছাত্রীরা চীনের সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ব্যাপারে ওয়াকিবহাল হতে পারে তার জন্য আগামী বছর বইমেলায় একটি বিশেষ সেমিনার আয়োজন করার জন্য । তিনি চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালের হয়ে প্রচার করার জন্য আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ দেন ।(ফটো নম্বর : CRI 11,12,13,14,15)

আমি ও আমার ক্লাব 'নিউ হরাইজন রেডিও লিসনার্স ক্লাব দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে সি আর আই বাংলা বিভাগের সঙ্গে জড়িয়ে আছি । আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি স্কুল বিল্ডিং -এর ঘেরা টোপে বা বাড়ির ছাদে কিছু মানুষ জুটিয়ে সি আর আই বাংলা বিভাগের যথার্থ প্রচার হয়না । তাই আমি আমার ক্লাবের বন্ধুদের নিয়ে ছুটে বেড়াই শহরে- গ্রামে- নগরে -প্রান্তরে। আমি সি আর আই কে ছড়িয়ে দিতে চাই সাধারণ মানুষের ভিড়ে । কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় - "যেথায় থাকে সবার অধম দীনের হতে দীন / সেইখানে যে চরণ তোমার রাজে -/ সবার পিছে , সবার নীচে ,সব হারাদের মাঝে "। সি আর আই বাংলা বিভাগকে আমি আন্তরিকভাবে ভালোবাসি বলেই আমি ছুটে বেড়াই আম জনতার ভিড়ে আর আমি জানি সেটাই সি আর আই বাংলা বিভাগের মূল লক্ষ্য ।আমি চাই সি আর আই প্রসারিত হোক সাধারণ মানুষের মাঝে; সি আর আই-এর আলো জ্বলে উঠুক পূবে -পশ্চিমে আর তবেই হবে " বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো / সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারও "।

সিআরআইয়ের বাংলা বিভাগের সকল উপস্থাপক ও উপস্থাপিকাকে চীনের চান্দ্র নববর্ষ এবং বসন্ত উত্সবের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে এখানেই শেষ করছি ।

পুনশ্চ :- সিআরআইয়ের জন্য আমাদের এই প্রচার অভিযানের জন্য সি আর আই বাংলা বিভাগের প্রমোশনাল উপহার পাঠাবার জন্য আমি গত ৯ ই জানুয়ারী আপনাদের কাছে আগাম আবেদন জানিয়েছিলাম কিন্তু দুঃখের বিষয় আপনাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া আমরা পাইনি। সি আর আইকে নিয়ে আমাদের এই আন্তরিক প্রচার অভিযানের ফটো ও প্রতিবেদন আপনাদের কাছে পাঠালাম । যদি ফটোগুলি দেখে মনে হয় আমাদের এই প্রচার অভিযান সত্যি তবে সি আর আইয়ের বাংলা ওয়েব সাইটে ও পুবের জানালা পত্রিকায় প্রতিবেদন সহ ফটোগুলি প্রকাশ করার সনির্বন্ধ অনুরোধ রইলো ।আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে তখনই যখন আপনারা আমাদের এই ক্লাব কর্মকান্ডকে যথার্থ মর্যাদা দিয়ে রেডিও অনুষ্ঠানে সম্প্রচার করবেন । আশা রাখি আপনারা আমাদের আমাদের এই বিশেষ প্রচার অভিযানকে মূল্যায়ন করে কিছু মূল্যবান উপহার সামগ্রী রেজিস্ট্রি পোস্টের মাধ্যমে আমার কলকাতার ঠিকানায় পাঠাবেন । এবং সি আর আইয়ের বাংলা বিভাগের কাছ থেকে শ্রোতা হিসাবে একদিন উপযুক্ত মর্যাদা পাবো, এই আশায় রইলাম ।

নমস্কারান্তে -

রবিশংকর বসু

সম্পাদক

নিউ হরাইজন রেডিও লিসনার্স ক্লাব

(CRI - I - 009-04)

গ্রাম - বমনগর

পোস্ট - আঁটপুর ,

জেলা - হুগলী ,

পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক