ছয়টি বিষয় প্রচারের মাধ্যমে আধুনিক প্রচলন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে
2021-03-01 11:18:03

 হ্যেপেই ও হ্যেলুচিয়াং প্রদেশের গণপ্রতিনিধি সম্মেলন ও রাজনৈতিক পরামর্শ প্রতিনিধি সম্মেলন (দুই অধিবেশন) আয়োজিত হওয়ার পর, চীনের ৩১টি প্রদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা প্রকাশিত হয়েছে।

 

অধিকাংশ প্রদেশের ২০২১ সালের নির্দিষ্ট জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৬ শতাংশেরও বেশি। এর মধ্যে হুপেই ও হাইনান প্রদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ১০ শতাংশের বেশি, যা চীনের সর্বোচ্চ। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল তিব্বত, কুইচৌ ও ইউননান।

 

২০২০ সালে হুপেই প্রদেশের অর্থনীতি গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে, গত বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে প্রদেশটির অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ে। চলতি বছর প্রদেশটি সার্বিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা করবে। গত বছর এ প্রদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল নিম্ন, সেজন্য এ বছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১০ শতাংশ।

 

এদিকে, চীনের অধিকাংশ প্রাদেশিক অঞ্চলের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। আর চীনা অর্থনীতির উন্নয়নের মৌলিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।

 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল সংস্থা (আইএমএফ) গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত ‘বিশ্বের অর্থনীতি দৃষ্টিপাত প্রতিবেদনে’ বলেছে, ২০২১ সালে বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৫ শতাংশ এবং চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৮.১ শতাংশ। আইএমএফের কয়েকজন কর্মকর্তা মনে করেন, চীন সরকার কার্যকরভাবে কোভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক ব্যবস্থা ও মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে। এটি হলো চীনা অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধারের প্রধান কারণ।

 

আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপিনাত বলেছেন, ২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে চীন প্রাক-মহামারী স্তরে পুনরুদ্ধারপ্রাপ্ত প্রথম প্রধান অর্থনীতিতে পরিণত হয়। মহামারীর মধ্যেও চীনের রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, চীনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে, এর প্রতিবেশী দেশসমূহ ও বাণিজ্যিক অংশীদারদের উপর এর ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

 

চীনা অর্থনীতির অব্যাহত উন্নয়নের ভিত্তি ও শর্ত আছে। চীনের সমৃদ্ধ শ্রমসম্পদ ও মূলধন এবং সম্পূর্ণ শিল্পব্যবস্থা ও শক্তিশালী উত্পাদনশক্তি আছে। চীনের  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবনের সামর্থ্য স্থিতিশীলভাবে উন্নত হচ্ছে। এ অবস্থায়, ২০২১ সালে চীনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রবণতার পরিবর্তন ঘটবে না বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

 

ছয়টি বিষয় প্রচারের মাধ্যমে আধুনিক প্রচলন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে

 

বন্ধুরা, সম্প্রতি চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন থাও বলেন, তাঁর মন্ত্রণালয় ৬টি বিষয় প্রচারের মাধ্যমে আধুনিক প্রচলন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।

 

প্রথমত, প্রচলন নেটওয়ার্ক বন্টন উন্নীত হবে। প্রচলন ব্যবস্থায় যুক্তিসঙ্গতভাবে পণ্যের বিতরণ কেন্দ্র ও বহুমুখী পণ্য স্থানান্তর পার্ক, পাবলিক বিতরণ কেন্দ্র ব্যবস্তাপনা করতে হবে।

 

দ্বিতীয়ত, প্রচলন অবকাঠামো উন্নত করা। উন্নত দেশগুলোর চেয়ে চীনের প্রচলন অবকাঠামোর প্রধান ব্যবধান রয়েছে “সর্বশেষ ১ কিলোমিটার”। অধিবাসীদের সুবিধার্থে দোকান, মার্কেট ও কমিউনিটি জীবনযাত্রার সেবা আউটলেট থাকতে হয়। গুরুত্বপূর্ণভাবে গ্রামাঞ্চলে ব্যবসা ব্যবস্থা সুসংহত করতে সেখানকার ব্যবসা প্রচলন সেবা আউটলেট উন্নত করার পাশাপাশি পণ্য স্থানান্তর বিতরণ নেটওয়ার্ক সুসম্পূর্ণ করা হবে। শিল্প পণ্য গ্রামে যাওয়া এবং কৃষি পণ্য শহরে আসার পথ অবাধ করা হবে।

 

তৃতীয়ত, প্রচলনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি শক্তিকে উন্নত করা। ৫জি, ইন্টারনেট অফ থিংস, বিগ ডেটা, ক্লাউড কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার প্রচলন প্রতিষ্ঠানের জন্য ভাল সুযোগ ডেকে আনছে। চীন প্রচলন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রচলনের ডিজিটাল, নেটওয়ার্কিংয়ের উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে উত্সাহ দেয়।

 

চতুর্থত, প্রচলন উন্নয়নের পদ্ধতি উন্নত করা। শহরে ও গ্রামে এখানে সেখানে বাজার, সুপারমার্কেট ও ক্যান্টিন পাওয়া যায়। ডিজিটাল ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বা সীমান্ত সংহতকরণ থেকে সৃজনশীলতা ও রূপান্তরকে উত্সাহ দেয়া বা প্রহরা জোরদার করার পাশাপাশি সবুজ প্রচলন উন্নয়ন করতে হবে।

 

পঞ্চমত, সরবরাহ চেইনের আধুনিক মান উন্নীত করা। গুরুত্বপূর্ণভাবে সরবরাহ চেইনের সৃজনশীলতা আর ব্যবহারিক দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা চালিয়ে প্রচলন সৃজনশীলতা ও শিল্প সংস্কারের গভীর সংমিশ্রন ত্বরান্বিত করতে হবে।

 

ষষ্ঠত, সবশেষে দেশি-বিদেশি বাণিজ্যের একীকরণ মাত্রা উন্নীত করা। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রচলনের সমস্যা সমাধান করে, দেশি-বিদেশি বাজারের সুষ্ঠু পথ তৈরী করতে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য আইনবিধি, তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা, গুণগত মানের মানদণ্ড, প্রশংসাপত্র ও স্বীকৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সংযুক্তি ত্বরান্বিত করা হবে।

 

বর্তমানে সংযুক্তিটা ঘনিষ্ঠ নয়, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের সুষ্ঠুতা যথেষ্ঠ নয়। পরবর্তী পদক্ষেপে আইনবিধি, তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা, গুণগত মানের মানদণ্ড, প্রশংসাপত্র ও স্বীকৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সংযুক্ত সম্প্রসারণ করে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের একীকরণের মাত্রা উন্নীত করা হবে।

 

প্রেমা/এনাম