গত বছর সারা বিশ্বের সাথে চীনের সহযোগিতা জোরদার
2021-02-13 16:54:47

ফেব্রুয়ারি ১৩: ২০২০ সালের কথা উল্লেখ্য করলে, সবার মনে পড়বে কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধের কথা। প্রত্যেকের রয়েছে এ নিয়ে অনেক স্মৃতি। আনন্দ-বেদনা মিলিয়ে অতিবাহিত হয়েছে বছরটি। মহামারির আঘাতে অনেককে প্রায় একই প্রশ্ন করতে শুনা যায়: ‘কী হয়েছে বিশ্বে এবং আমাদের কী করা উচিত? এমন দুঃসময়ে এবং শত বছরের পরিবর্তনের মুখে চীন বিশ্বের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলে বিশ্বও চীনের দিকে তাদের হাত সম্প্রসারিত করেছে। ফলে গত বছর সারা বিশ্বরে সাথে চীনের সহযোগিতা জোরদার হয়েছে। গত একশ বছরে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুতর ঘটনা হিসেবে  ‘কোভিড-১৯ মহমারির প্রাদুর্ভাব’কে অনেকে চিহ্নিত করছেন।

মার্কিন রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক রেচেল ওয়ালেনস্কি বলেন,“সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এক দিনে নতুন করে ৪,০০০ মানুষ মহামারিতে মারা গেছেন। ফেব্রুয়ারির মাঝা-মাঝিতে দেশটিতে সর্বমোট মৃতের সংখ্যা ৫লাখ ছাড়িয়ে যাবে।”

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস অধানম বলেছেন,“এ সপ্তাহে সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ১০কোটি ছাড়িয়ে যাবে। গত দু’সপ্তাহে কোভিড-১৯ মহামারিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল গত ছ’মাসের মোট পরিমাণের তুলনায়  অনেক বেশি।”

 

ইতিহাসের এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, চীন মানব জাতির অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গঠনের প্রচেষ্টা করে আসছে, যা আন্তর্জাতিক সমাজের চোখে পড়েছে।

 

সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার ভূচিচ বলেন,“চীনে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার কাজ  এখনো পুরোপুরি শেষ হয় নি। তবে, তারা সার্বিয়াকে সহায়তা করছে। সার্বিয়ার জনগণের পক্ষে তিনি চীনকে ধন্যবাদ জানান। চীনের সহায়তাকে কখনো ভুলবে না তাঁর দেশ। চীন আমাদের পুরনো বন্ধু। আমরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এ মৈত্রী ধরে এগিয়ে যাবে। কারণ কঠিন সময়ের বন্ধু হচ্ছে প্রকৃত বন্ধু।”

 

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন,“চীনের উহানে মহামারির প্রাদুর্ভাবের সময় আমরা চীন সরকারকে সহযোগিতা করেছি। পরে, চীন সরকার বাংলাদেশকে ব্যাপক পরিমাণে সহযোগিতা করেছে। শুধু সরকার নয়, অন্য চীনা প্রতিষ্ঠানও আমাদের কয়েক লাখ প্রতিরোধক পোষাক ও টেস্ট কিট প্রদান করেছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। বাংলাদেশের সবচেয়ে কঠিন সময়ে চীন আমাদের পাশে থেকেছে। তাই আমরা চীন সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

 

সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মহামারি প্রতিরোধ করেছে। তবে,  শুরুতে মহামারি প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় নি।

সৌদি আরবের বৃহত্তম পত্রিকা রিয়াদের নির্বাহী সম্পাদক হানি ওয়াফা বলেন,

“চীন বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও মহামারি প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাসহ উভয়ই ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে, চীন নানা দেশের সঙ্গে সুষ্ঠু সহযোগিতা চালিয়েছে। আন্তর্জাতিক সমাজ কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে পারছে, যার মূল কারণ হচ্ছে সবার যৌথ প্রচেষ্টা।”

 

বিদায়ী বছরে চীন ‘ছাং এ’ চন্দ্রযানের চন্দ্র অনুসন্ধান, ‘থিয়ান ওয়েন’ মঙ্গলযানের মঙ্গলে অনুসন্ধান এবং ‘পেই তৌ’ নেভিগেশন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে।

 

মিশরের মহাকাশযান ব্যুরোর নির্বাহী চেয়ারম্যান মোহাম্মেদ এল-কুসি বলেন,“আমরা চন্দ্রের মাটি সম্পর্কে জানতাম না। এ ব্যাপারে আমাদের জ্ঞান ছিল খুবই সীমিত। কেবল কিছু ছবির মাধ্যমে চন্দ্র সম্পর্কে আমরা জানার চেষ্টা করতাম। এখন চীন চন্দ্রের মাটির নমুনা আনতে সক্ষম হয়েছে। তাতে চীনা ও বিশ্বের বিজ্ঞানীদের চন্দ্র উপগ্রহ সম্পর্কে আরও জানার পথ খুলে যাবে। চীন এ সাফল্য অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করছে, তাই মানুষ প্রকৃতভাবে চন্দ্রের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে।”

(রুবি/এনাম/শিশির)