চীন আন্তঃদেশীয় পুঁজি বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হচ্ছে
  2020-10-21 15:54:54  cri


বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সংরক্ষণবাদ ও একদরফাবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এ প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগের পথে বাধা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। এতে বৈশ্বিক আন্তঃদেশীয় পুঁজি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সম্প্রতি চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের বৈদেশিক অর্থনৈতিক গবেষণালয়ের প্রধান এবং গবেষক ডক্টর ইয়ে ফু চিন চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টিভঙ্গি ও এই ক্ষেত্রের চীনের সুবিধা নিয়ে কথা বলেন। আজকের টপিক আসরে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করবো।

বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে চীনে বৈদেশিক পুঁজি বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় ডক্টর ইয়ে বলেন, বৈশ্বিক পুঁজিসংক্রান্ত সহযোগিতায় কোভিড-১৯ মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব বেশি। জাতিসংঘের বাণিজ্য উন্নয়ন সংস্থা অনুমান করছে যে, চলতি বছর বৈশ্বিক আন্তঃদেশীয় সরাসরি পুঁজির পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমে যাবে। তবে একটি তথ্য জানতে হবে যে, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাব স্বল্পকালের জন্য, এটি চীনে উচ্চ গুণগত মানের বৈদেশিক পুঁজি আকর্ষণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনে বৈদেশিক সরাসরি পুঁজির পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮.৪ শতাংশ বেশি ছিল। আর বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই বৈদেশিক সরাসরি পুঁজির পরিমাণ ১০.৮ শতাংশ নেমে গিয়েছিল। এ থেকে স্পষ্ট যে, চীন আন্তঃদেশীয় পুঁজি বিনিয়োগকারীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হিসেবে রয়ে গেছে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যবিরোধ ও চীন-মার্কিন শীতল সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের চীনা চেম্বার অব কমার্স সম্প্রতি জানায়, ৬৩ শতাংশ মার্কিন শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীনে তাদের পুঁজি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি, চীনের ব্যবসায়িক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষও প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেম্বার অব কমার্স। তাদের অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীনে পুঁজি বাড়াতে আগ্রহী।

বৈদেশিক পুঁজি আকর্ষণে চীনের কী কী সুবিধা আছে? এ সম্পর্কিত আলোচনায় ডক্টর ইয়ে বলেন, এই ক্ষেত্রে চীনের পাঁচটি বড় সুবিধা রয়েছে। সুবিধাগুলো হচ্ছে:

প্রথমত, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এগিয়ে চলেছে; নতুন প্রজন্মের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়ছে; শ্রমের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম।

দ্বিতীয়ত, মানবসম্পদের সুবিধা। চীনা মানবসম্পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সূচক বৈশ্বিক অবস্থা থেকে দেখা গেছে যে, এটি ২০০০ সালের ৩২তম স্থান থেকে উন্নীত হয়ে ২০১৮ সালের ১৩তম স্থানে ছিল। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে চীন। আর মানবসম্পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার শক্তি ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

তৃতীয়ত, শিল্প সমন্বয়ের সুবিধা। চীন হচ্ছে জাতিসংঘ চিহ্নিত এমন একটি দেশ, যেখানে শিল্পব্যবস্থা সুসংহত।

চতুর্থত, ব্যবসায়িক পরিবেশের সুবিধা। ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে চীন সরকার। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে 'বিশ্ব ব্যাংকের ব্যবসায়িক পরিবেশ রিপোর্টে' চীনের অবস্থান এগিয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে ৩১তম স্থানে আছে চীন।

পঞ্চমত, উন্মুক্তকরণের ক্ষেত্র সম্প্রসারণের সুবিধা। এ বছরের পয়লা জানুয়ারি থেকে 'বৈদেশিক পুঁজি আইন' কার্যকর হয়েছে চীনে। এই আইন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বৈধ স্বার্থ রক্ষা করবে।

(ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই )

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040