আসন্ন ৪০তম বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে, 'খাদ্যের সাশ্রয় ও অপচয়ের বিরোধিতা'র ধারণা চীনা সমাজে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়। ইতালির বিশেষজ্ঞ আন্দ্রে সেগ্রে চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, চীনে চলমান 'খাদ্যের সাশ্রয় ও অপচয়রোধ' আন্দোলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। খাদ্যের অপচয় রোধের সঠিক পথেই সমানে এগুচ্ছে চীন।
খাদ্যের নিরাপত্তা বিশ্বের সকল মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মহামারীকালে খাদ্যের নিরাপত্তা ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। তাই খাদ্য নিরাপত্তার উপর আরও বেশি নজর দেওয়া জরুরি। খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে খাদ্যের অপচয় কমানো। চীনের সামাজে বড় আকারে 'খাদ্য সাশ্রয়'-এর জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে। খাদ্যকে আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য প্রচার-প্রচারণা চলছে। মানুষ আগের যে-কোনো সময়ের তুলনায় খাদ্যের অপচয় রোধে বেশি সচেতন হচ্ছে। খাদ্যের প্রতি চীনা সমাজের এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রশংসা করলেন ইতালির বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, "চীনে চলমান প্রচার-প্রচারণায় এখন অনেকেই বুঝতে পারছেন যে, খাদ্যের অপচয় ঠিক নয়। জনগণ এখন আগের যে-কোনো সময়ের তুলনায় বেশি সচেতন। তারা জানেন যে, খাদ্যের সঠিক ব্যবহার শুধু নিজেদের জন্য নয়, বরং অন্যদের জন্যও ভালো। আমি মনে করি, চীন এখন সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সক্রিয়ভাবে চীনের অংশগ্রহণের ফলে জাতিসংঘের 'এজেন্ডা ২০৩০' টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন সহজতর হবে।"
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসেব অনুসারে, বিশ্বে ২০০ কোটিরও বেশি মানুষ নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত। কোভিড-১৯-এ প্রভাবে, বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ৬৯ উনসত্তুর কোটির সঙ্গে আরও ৮ কোটি ৩০ লাখ থেকে ১৩ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত যোগ হতে পারে বলে পূবার্ভাস করা হচ্ছে। আন্দ্রে সেগ্রে মনে করেন, চীনের সমাজে চলমান খাদ্য অপচয় রোধের আন্দোলন বৈশ্বিক খাদ্য-নিরাপত্তার জন্য অনুকূল। তিনি বলেন, "বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু কিছু কিছু অঞ্চলে খাদ্য অপচয়ের ঘটনা বাড়ছে। চীনের খাদ্য অপচয় রোধের কার্যক্রম নিজের ও বিশ্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি, চীনে খাদ্যের বিপুল ভোক্তা আছে। চীনের কার্যক্রম অন্য দেশগুলোর জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ।"
বিশ্বের অভিন্ন প্রচেষ্টার বিষয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাপী ভালো ফল অর্জন করতে চাইলে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিকল্প নেই।
তিনি ২০১০ সালে ইতালিতে 'শূন্য অপচয় আন্দোলন' শুরু করেন। তিনি আশা করেন, আদানপ্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ একে অপরের কাছ থেকে শিখবে ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করবে। তিনি বলেন, "আমি মনে করি, চীন ও ইতালির মধ্যে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রম বিনিময় হতে পারে। এতে খাদ্য অপচয় কমানোর প্রচেষ্টা আরও গতিশীল হবে।"