অক্টোবর ১৬: স্থানীয় সময় গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ইউরোপীয় অঞ্চল কার্যালয়ের প্রধান হান্স ক্লুগে কোপেনহেগেনে বলেন, গেল সপ্তাহে ইউরোপে কোভিড-১৯ রোগে নতুন করে আক্রান্ত হয় ৭ লাখ, যা সপ্তাহে আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা। তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ রোগ ইতোমধ্যেই বিশ্বে মারাত্মক প্রাণঘাতী রোগগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থান দখল করেছে। ইউরোপে দৈনিক এই ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার। আজকের সংবাদপর্যালোচনায় আমি এই বিষয়ে আলোচনা করব।
বৃহস্পতিবার কোপেনহেগেনে এই ভাইরাসসংশ্লিষ্ট অনলাইন প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ক্লুগে বলেন, শরত ও শীত চলে আসায় ইউরোপে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এতে উদ্বিগ্ন সবাই। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
"ইউরোপে শরত ও শীত চলে আসার পর থেকে প্রতিদিন এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এই অবস্থা শীঘ্রই আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে হু।"
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, গেল সপ্তাহে ইউরোপ অঞ্চলে এই ভাইরাসে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার গতি অকল্পনীয়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, (রে)
"বিগত এক সপ্তাহে গোটা ইউরোপে এই ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ লাখ। এটি কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর এই অঞ্চলে এক সপ্তাহে আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা। বর্তমান ইউরোপে এই ভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ লাখেরও বেশি। তবে ৬০ লাখ থেকে বেড়ে ৭০ লাখে দাঁড়াতে সময় লেগেছে মাত্র ১০ দিন।"
তিনি বলেন, বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। ইউরোপে এই ভাইরাসে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার। এই রোগ ইতোমধ্যেই বিশ্বের প্রথম পাঁচটি প্রাণঘাতী রোগের একটিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন
'প্রতিদিন এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।'
তিনি আরও বলেন, শরতে ও শীতে এই ভাইরাসের নতুন দফা আক্রমণের সময় মৃতের সংখ্যা কম হবার প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
"এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের তুলনায় ইউরোপে এই ভাইরাসে বর্তমানে দৈনিক নতুন করে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ ও ৩ গুণ বেশি হলেও, মৃতের সংখ্যা ৮০ শতাংশে নেমেছে।'
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই ভাইরাসে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মৃতের সংখ্যা কমা থেকে স্পষ্ট যে, ভাইরাসের পরীক্ষা ও শনাক্তকরণের ব্যবস্থা জোরদার করার পর, যুবকদের মধ্যে অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু, প্রথম দফার প্রাদুর্ভাবে যুবকদেরকে উপেক্ষা করা হতো।
অবশেষে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উচিত এই ভাইরাস ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, না-হলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, লকডাউন ব্যবস্থা শিথিল করলে, শরতে ও শীতে এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা হবে এর প্রথম দফার প্রাদুর্ভাবের ৪ ও ৫ গুণ বেশি। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়াসহ বিভিন্ন 'সহজ ব্যবস্থা' মেনে চললে, আগামী বছরের বসন্তকাল আসার আগে ইউরোপে ২ লাখ ৮০ হাজার মানুষের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)