গতকাল (বুধবার) শেনচেন অর্থনৈতিক বিশেষ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকীর উদযাপনী অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। পরে চীনের জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য এবং হংকং মৈত্রী সমিতির প্রধান থাং ইং নিয়ান প্রেসিডেন্ট সি'র ভাষণ নিয়ে সিএমজি'র সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, বিগত ৪০ বছর ধরে হংকং ও শেনচেন যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে দেশের উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা পালন করেছে। দেশের অব্যাহত সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়ায় হংকং ও শেনচেন একসঙ্গে সামনে এগিয়েছে ও এখনও এগুচ্ছে। ভবিষ্যতে শেনচেন, বৃহত্তর উপসাগরীয় এলাকা, ও সার্বিকভাবে দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখবে হংকং। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমি এই বিষয়ে আলোচনা করব।
থাং নিং নিয়ান বলেন, 'আমি খুবই মনোযোগ নিয়ে প্রেসিডেন্ট সি'র এবারের গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ শুনেছি। আমি নিজেই শেনচেনে ৪০ বছর কাটিয়েছি। বিগত ৪০ বছরে শেনচেন এক ছোট্ট গ্রাম থেকে আধুনিক ও শক্তিশালী শহরে পরিণত হয়েছে, আমি যার সাক্ষী। প্রেসিডেন্ট সি'র ভাষণ আমি ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছি।'
চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের শুরুর দিকে শেনচেনে পুঁজি বিনিয়োগ করে কারখানা প্রতিষ্ঠার সেই স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, শেনচেনে সাফল্য অর্জন করা সহজ ব্যাপার নয়। তিনি বলেন
'শেনচেনে আমাদের প্রথম কারখানা ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন আমার অফিস ছিল দোতলায়। আমাদের কারখানার কর্মীদের বেতন ছিল হংকংবাসীদের গড় বেতনের ৬ ভাগের ১ ভাগ। সুতরাং, একটি ছোট্ট গ্রাম থেকে আধুনিক শহরে পরিণত হওয়া শেনচেনের এই বিশাল পরিবর্তনকে আমি পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারি।'
শেনচেন অর্থনৈতিক বিশেষ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকীর উদযাপনী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সি শেনচেনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ এবং নব্যাপ্রবর্তন ও উন্নয়নের ১০টি মূল্যবান অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এর ভূয়সী প্রশংসা করেন থাং ইং নিয়ান। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
"প্রেসিডেন্ট সি'র ১০টি মূল্যবান অভিজ্ঞতা বিগত ৪০ বছর ধরেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উচিত উন্নয়নের পথে অবিচল থাকা এবং সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পথে চলা অব্যাহত রাখা। এই পথকে আরও গভীর করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, আর তা হল, কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তর উপসাগরীয় এলাকার প্ল্যাটফর্মের উন্নয়ন ঘটানো। পাশাপাশি, যুব-উন্নয়নের ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। বিগত ৪০ বছরে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো কাজে লাগিয়ে শেনচেন অব্যাহতভাবে সামনে এগিয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, দেশের অব্যাহত সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের প্রক্রিয়ায় শেনচেন ও হংকং একসঙ্গে উন্নত হয়েছে। তবে আয়তনের দিক দিয়ে হংকংয়ের চেয়ে বড় শেনচেন; এর লোকসংখ্যাও বেশি। সুতরাং, আজকাল এই উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করা শেনচেনের কাছে প্রত্যাশিত। থাং ইং নিয়ান আরও বলেন, ভবিষ্যতে শেনচেন, বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চল ও দেশের উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখবে হংকং। তিনি বলেন
"বিগত ৪০ বছর ধরে শেনচেনের উন্নয়ন ও হংকংয়ের উন্নয়ন ছিল পারস্পরিক সুবিধার ব্যাপার। এই প্রক্রিয়ায় পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সামনে এগিয়েছে হংকং ও শেনচেন। সুতরাং, ভবিষ্যতে গোটা বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে হংকং। ভবিষ্যতে হংকং দেশের উন্নয়নে, বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চল ও শেনচেনের উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।" (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)