ফুফিং জেলা মাশরুম চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে
  2020-09-28 16:15:52  cri

বন্ধুরা, ২০২০ সাল হলো গোটা চীনে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হওয়ার শেষ বছর। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিসি'র নেতৃত্বে বিভিন্ন জাতির জনগণের যৌথ প্রচেষ্টায় চীনের অধিকাংশ জায়গায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমি আপনাদেরকে হ্যবেই প্রদেশের বাওদিং শহরের ফুফিং জেলার মাশরুম চাষ করার মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হওয়ার গল্প শোনাবো।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি হ্যবেই প্রদেশের বাওদিং শহরের ফুফিং জেলা সম্পূর্ণভাবে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়। জেলাটি মাশরুম চাষ শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছে।

২৩ বছর বয়সী স্থানীয় তরুণ চাং ছিয়াং গ্রীনহাউসে মাশরুম কাজ করছেন। তিনি মাশরুম চাষ করছেন দুই বছর ধরে। তাঁর চামড়া কালো। তিনি হলেন সবচেয়ে তরুণ মাশরুম চাষী। তিনি সাংবাদিককে বলেন,

'আমি এখানকার সবচেয়ে তরুণ মাশরুমচাষী। এটি আমার জন্য একাধারে সুযোগ ও সমস্যা।'

গত বছর চাং ছিয়াংয়ের পরিবার পাহাড়ী এলাকা থেকে নতুন এপার্টমেন্টে স্থানান্তরিত হয়। নতুন বাসার আয়তন একশো বর্গমিটার। তাঁদের বসবাসের অবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। তাঁর বাসা মাশরুম ক্ষেত থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

২০১৬ সাল থেকে ফুফিং জেলায় চাং ছিয়াংয়ের পরিবারের মতো নতুন বাসায় স্থানান্তরিত পরিবার ১৭ হাজারটি। এসব পরিবারের সদস্য ৫৩ হাজার।

চাং ছিয়াং আগে বেইজিংয়ে কাজ করতেন। কিন্তু মাশরুম চাষ শিল্প উন্নয়নের পর তিনি গ্রামে ফিরে এসেছেন। তিনি ব্যাংক থেকে ১ লাখ ইউয়ান আরএমবি ঋণ নিয়ে দু'টি মাশরুম গ্রীনহাউস নির্মাণ করেন। স্থানীয় পৌর সরকারের সমর্থনের কারণে তার তিন বছর মেয়াদি ঋণের সুদ ১০ হাজার ইউয়ানেরও কম। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'আমি ব্যাংক থেকে ১ লাখ ইউয়ান ঋণ নিয়েছি। গত বছরে আমার দু'টি গ্রীনহাউসের আয় ছিল ৯০ হাজার ইউয়ান। আমার আস্থার কমতি নেই। আমি আরও দু'টি গ্রীনহাউস নির্মাণ করবো।'

চাং ছিয়াং একজন পরিশ্রমী ছেলে। তাঁর বাবামা'র স্বাস্থ্য ভাল না। তিনি একই বয়সের তরুণ-তরুণীর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেননি। কিন্তু তাঁর মনে পরিশ্রম করে সুখী জীবন গড়ে তোলার স্বপ্ন। তাঁর ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় শুধুমাত্র মাশরুম চাষ আছে, তা নয়, বরং আরো বেশি কাজের স্বপ্ন তিনি দেখেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'মাশরুম চাষ ছাড়াও আমি একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমি আরো বেশি ফসল ফলাতে চাই।'

ফুফিং জেলায় মাশরুম শিল্প অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলাটিতে মাশরুম ক্ষেত ৯৮টি এবং গ্রীনহাউস ৪ হাজার রয়েছে। ২০১৯ সালে ৭ হাজার দরিদ্র পরিবার মাশরুম চাষ শিল্পে অংশ নিয়েছে। অনুমান অনুযায়ী, ফুফিং জেলার মাশরুম শিল্পের মোট উত্পাদনের আর্থিক মূল্য হবে ২.৫ বিলিয়ান ইউয়ানের বেশি। এতে পরিবারপ্রতি গড় আয় ২০ হাজার ইউয়ানের ছাড়িয়ে যাবে।

ফুফিং জেলার লংওয়াংমিয়াও গ্রামের কমিশনের সম্পাদক ইউয়ান লি হং বলেন, মাশরুম চাষের কাজে কোনো ছুটি নেই। হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দার জন্য এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের আয়ও অনেক বেড়েছে।

মাশরুম ছাড়াও জেলাটিতে কবুতর লালনপালন, চীনা ঔষধ চাষ, কুলের প্রক্রিয়াকরণ ও পারিবারিক হোটেল শিল্পের উন্নয়ন ঘটছে। এর মাধ্যমে আরো বেশি বাসিন্দা ধনী হয়েছেন।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040