হাতে হাত রেখে মানবজাতির স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গড়ে তুলতে হবে: চীন
  2020-09-17 14:32:20  cri

২০২০ সাল এক অসাধারণ বছর। বিশ্বের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার ৭৫তম বার্ষিকী। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এক অস্থির পরিবেশ বিদ্যমান। বিশ্বে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৫১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি। মহামারী বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর গুরুতর আঘাত হেনেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবলের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ বছর বৈশ্বিক অর্থনীতি ৪.৯ শতাংশ সংকুচিত হবে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিও জটিল হয়ে উঠেছে। বর্তমান বিশ্ব অভূতপূর্ব বিশাল পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এগুচ্ছে। 'ইতিহাস হচ্ছে সবচেয়ে ভাল পাঠ্যপুস্তক'। ৭৫ বছর আগে অর্জিত বিজয় ছিল আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য উত্সাহব্যঞ্জক। বিশ্বের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী চেতনা কাজে লাগিয়ে হাতে হাত রেখে বিভিন্ন দেশের জনগণের সুস্থতা ও নিরাপত্তার সাথে জড়িত এই মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে হবে।

চলতি বছরের মার্চে চীন প্রথমবারের মতো মানবজাতির স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গড়ে তোলার প্রস্তাব উত্থাপন করে। এই জন্য চীন অনেক প্রচেষ্টাও করেছে। এতে আন্তর্জাতিক সমাজের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াও পেয়েছে। এই প্রস্তাব হচ্ছে ৭ বছর আগে চীন প্রথমবারের মতো যে মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গড়ে তোলার প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল, সেই প্রস্তাবের সম্প্রসারিত রূপ। প্রাণের নিরাপত্তা ও শরীরের সুস্থতা একজন মানুষের সুখী জীবনের ভিত্তি। এটি মানবজাতির সামষ্টিক নিরাপত্তা ও উন্নয়নের পূর্বশর্তও বটে। কোভিড-১৯ মহামারী থেকে আমাদের অভিজ্ঞতা এই যে, ভাইরাস দেশে দেশে পার্থক্য করে না, জাতিতে জাতিতে পার্থক্য করে না। তাই, মানবজাতির উচিত হাতে হাত রেখে যৌথ প্রচেষ্টা চালানো এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হবার চেষ্টা করা। মানবজাতির স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি যেন নুহ নবীর নৌকার মতো। এটা বর্তমান ও ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য খাতের হুমকি মোকাবিলা করতে ভূমিকা পালন করবে।

'শান্তিতরী' হচ্ছে চীনা গণমুক্তি ফৌজের একটি চিকিত্সাজাহাজ। বিগত ১০ বছরে এই জাহাজটি ৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল সফর করেছে। এর মাধ্যমে ২ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ চিকিত্সা পেয়েছে। এ কাজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।

বর্তমান চীনে প্রায় সকলের জন্য চিকিত্সা সহায়তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। এ ব্যবস্থার আওতায় এসেছে বিশ্বের পাঁচ ভাগের এক ভাগ মানুষ। সময়মতো সার্বিকভাবে স্বচ্ছল সমাজের প্রতিষ্ঠাকাজ সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে 'স্বাস্থ্য সুরক্ষার অন্তর্জাল' আরও শক্তভাবে বোনার কাজটাও শেষ হবে।

উন্নয়নশীল দেশগুলো বৈশ্বিক ভাইরাস মোকাবিলায় একটু দুর্বল। কোভিড-১৯ মহামারী হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে গুরুতর বৈশ্বিক পাবলিক স্বাস্থ্য সংকট। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকল চীনা প্রাথমিকভাবে জয়ী হয়েছে। এটি বৈশ্বিক পাবলিক স্বাস্থ্য খাতে চীনের অবদান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু'র নেতৃস্থানীয় ভূমিকাকেও সার্বিক সমর্থন করে চীন। দুই বছরের মধ্যে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক সহায়তা দেবে চীন হু-কে। এর উদ্দেশ্য ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা দেওয়া। পাশাপাশি, চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, আফ্রিকার সঙ্গে চীনের সহায়তায় হাসপাতাল ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। এটি আফ্রিকার রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে। হু'র মহাপরিচালক বলেন, বিশ্বব্যাপী সকলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত, কেউ ভাইরাস থেকে নিরাপদ নয়।

সুতরাং, মানবজাতির স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গড়ে তোলা হচ্ছে সকলের সুস্থতা ও নিরাপত্তা বাস্তবায়নের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ উপায়। প্রত্যেকের নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিত করা মানেই মানবজাতির মঙ্গল। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040