আজকের টপিক: খুলতে যাচ্ছে স্কুল: আমাদের করণীয়
  2020-08-19 15:20:32  cri


কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য চীনসহ অনেক দেশের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যেতে পারছে না। তারা অনলাইনে লেখাপড়া করেছে এতোদিন। বর্তমানে চীনে মহামারী প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীরা পুনরায় স্কুলে যেতে পারবে।

বর্তমান গোটা চীনে বিভিন্ন প্রদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নতুন সেমিস্টারের ক্লাস শুরুর দিনক্ষণ ঠিক করেছে। এমনকি, কিছু বিদ্যালয়ে ইতোমধ্যেই অফলাইনে ক্লাস পুনরায় শুরু হয়েছে। এটা ভালো খবর। আবার চিন্তার মতো ব্যাপারও আছে। স্কুল মানেই বাচ্চাদের হৈচৈ, খেলাধুলা। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন। ক্লাসরুম, ক্যান্টিন ও খেলার মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে শিশুদের জমজমাট আড্ডা হবে, এটা বলাই বাহুল্য। প্রশ্ন হচ্ছে: এতে কি ভাইরাস নতুন করে ছড়িয়ে পড়তে পারে? এ প্রশ্নে অনেকেই উদ্বিগ্ন। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভয়ের কিছু নেই। কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলেই আর সমস্যা হবে না। তাদের পরামর্শগুলো এমন:

১. শিশুদের রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানো

যে-কোনো রোগ প্রতিরোধ করার জন্য নিঃসন্দেহে শরীরের রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এই ক্ষমতা বাড়াতে কয়েক পয়েন্ট খেয়াল করা উচিত। যেমন, ক. শরীরচর্চা। শরীরের গঠন বা ফিগারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। শরীরের গঠন বা ফিগার ভাল থাকলে মানুষকে সুন্দর দেখায়। শিশুদের জন্য একই কথা প্রযোজ্য। লম্বা সময় ধরে বাসায় থাকায়, শিশুদের অনেকেই খানিকটা স্থুলকায় হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। শরীরচর্চাটা তাই বেশি জরুরি। যদিও স্কুল যাওয়া-আসা শুরু হলে তাদের অতিরিক্ত ওজন এমনিতেই কমে যাবে বলে আশা করা হয়।

খ. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। আট গ্লাস পানির পরিমাণ মোটামুটি ২ লিটার। পর্যাপ্ত পানি আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। শিশুদেরও যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করা উচিত।

গ.সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। স্কুলে যাওয়া দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। সব শিশু কি এসময় সুষম খাবার খেয়েছে? পিতামাতাকে বিষয়টার দিকে নজর দিতে হবে। প্রশ্নের উত্তর যদি নেতিবাচক হয়, তবে শিশুদের সুষম খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। সুষম খাবার শিশুদের শরীরের রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াবে।

২. স্কুলে যাওয়ার পরিকল্পনা করা

দীর্ঘদিন বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে না। ফলে দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া ও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার বদভ্যাস হয়েছে অনেকের। এই বদভ্যাস কাটাতে হবে। স্কুল যেহেতু খুলতে যাচ্ছে, সেহেতু এখনই এ জন্য কাজ শুরু করতে হবে। আর এ জন্য চাই একটি পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন।

৩. স্কুল নিয়ে বেশি আলোচনা করা

লম্বা সময়ে স্কুলে না-যাওয়ার কারণে অনেক ছাত্রছাত্রী হয়তো স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে থাকতে পারে। তারা স্কুলে যেতে অপছন্দ করতে পারে। যদি এই রকম সমস্যা হয়, তাহলে এখন থেকে প্রতিদিন বাসায় ছেলেমেয়েদের সঙ্গে স্কুলের মজার টপিক আলোচনা করতে হবে। এতে স্কুলের প্রতি তাদের আগ্রহ নতুন করে সৃষ্টি হবে। অবশ্য শিশুদের অধিকাংশই স্কুলে যেতে মুখিয়ে আছে বলে ধরে নেওয়া যায়।

৪. পরিবারের পরিকল্পনা

পরিবারের পরিকল্পনা মানে কী? অনেক ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করতে চায় না। বাবা-মা'র উচিত সন্তানের সঙ্গে লেখাপড়ার পরিকল্পনা করা। এভাবেই ছেলেমেয়েকে লেখাপড়ার ব্যাপারে উত্সাহিত করতে হবে। এটি কেবল যে সংশ্লিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারে তা নয়, তা সন্তানের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার অভ্যাসও তৈরী করতে পারে। পাশাপাশি, এই প্রক্রিয়ায় ছেলেমেয়েদের আত্মবিশ্বাসও গড়ে তোলা সম্ভব। নতুন সেমিস্টারে স্কুলে যাওয়ার জন্য ভাল প্রস্তুতি নিতে হবে।

৫. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার চেতনা জোরদার করা

ভাইরাসের ঠেকাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ থাকা দরকার। প্রতিদিন স্কুল যাওয়ার সময় অন্তত দুটো মাস্ক নিতে হবে। লাঞ্চ শেষে নতুন মাস্ক পরতে হবে শিশুদের। আর তাদেরকে বলতে হবে যে, হাত ধোয়ার সময় সঠিকভাবে ধুতে হবে, ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040