ভূমধ্যসাগরের উপকূলে অবস্থিত ফেটিহে তুরস্কের অন্যতম বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র। নভেল করোনাভাইরাস নিউমোনিয়া মহামারী পুরোপুরি নির্মূল না হলেও, ফেটিহের মেয়র করাজা চায়না মিডিয়া গ্রুপে এক সাক্ষাত্কারে বলেন যে, ফেটিহে-তে সর্বস্তরের জনগণ চীনা পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের সাথে সর্বাত্মক সহযোগিতা চালাতে আগ্রহী।
ইউরোপ ও আমেরিকান পর্যটকদের জন্য ফেটিহে তুরস্কের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আরও বেশি চীনা পর্যটক ফেটিহে যাতায়াত শুরু করেছেন। ২০১৯ সালে শহরটিতে ৪০ হাজার চীনা পর্যটক ভ্রমণ করে। ফেটিহের মেয়র করাজা বলেন যে, চীনা পর্যটকদের সুবিধার্থে ফেটিহে সিটি সরকার গত বছর রাস্তায় চীনা ভাষায় সাইনবোর্ড ঝুলানোসহ একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যেহেতু তুরস্কের দালামান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের ফেটিহে-তে যাওয়ার প্রবেশমুখ, তাই স্থানীয় সরকারও সক্রিয়ভাবে চীনের ছেংদু ও তুরস্কের দালামানের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে। মেয়র বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দালামান ও ছেংদুর মধ্যে আমরা সরাসরি দালামান বিমানবন্দর প্রশাসনের সঙ্গে কাজ শুরু করি। কারণ, সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা ফেটিহের পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং তুরস্ক ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্ব জোরদারে খুব সহায়ক।
ফেটিহে সিটি সরকার ২০১৯ সালে চীনের সঙ্গে সম্পর্কিত সহযোগিতা ও বিনিময় কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে কুইচৌ প্রাদেশিক স্পোর্টস ব্যুরোকে বার্ষিক এয়ার স্পোর্টস ফেস্টিভ্যালে অংশ নিতে ফেটিহে-তে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ডিসেম্বরে ফেটিহে সিটি সরকার কুইচৌ পরিদর্শন করার জন্য একটি প্রতিনিধি দলের ব্যবস্থা করেন। মেয়র করাজা বিশ্বাস করেন যে, এ ধরনের বিনিময় কার্যক্রমগুলি খুব উপকারী এবং এটি চালিয়ে যাওয়া উচিত।
এ বছরের শুরু থেকেই, আকস্মিকভাবে কোভিড-১৯ মহামারী তুরস্ক ও চীনের মধ্যে মৌলিক বিনিময় পরিকল্পনাগুলো ব্যাহত করেছে এবং ফেটিহের পর্যটন শিল্পেও বেশি প্রভাব ফেলে। তবে করাজা বলেন, নগর সরকার এখনও চীনের পর্যটন এক্সপোতে অংশ নিতে এবং চীনা বন্ধুদের ফেটিহে পর্যটন সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তাব দিচ্ছে, যাতে আরও চীনা পর্যটক আকর্ষণ করা যায়। মেয়র বলেন, আমরা চীনে আয়োজিত এক্সপোতে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছি, কেবল আমাদের পৌর সরকারই নয়, আমাদের বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গেও। মহামারীর কারণে মেলা বাতিল করা হয়েছে। এক্সপো পুনরায় চালু হওয়ার পর আমরা এতে অংশ নেওয়ার আশা করি।
মহামারী এখনও পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। করাজা বলেন যে, ফেটিহে সিটি সরকার সব পর্যটন স্থানকে যথাযথভাবে নির্বীজন করছে এবং কঠোর সুরক্ষা-ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পযর্টকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ফেটিহে-তে পর্যটকদের সংবর্ধনার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আশা করেন, চীনা পর্যটকসহ বিদেশি পর্যটকরা আবার ফেটিহে ভ্রমণ করবেন। তিনি বলেন, চীনা অতিথিরা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেয়র হিসাবে সব চীনা বন্ধুদের দর্শনীয় স্থান- ফেটিহে ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানাই।
(জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই)