ফুল চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্যবিমোচনের গল্প
  2020-07-28 10:15:22  cri

৬১ বছর বয়সী ছেন হুয়া ২০০৬ সাল থেকে দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ শুরু করেন। তিনি পৃথক পৃথকভাবে হেইলংজিয়াং প্রদেশের সাতটি শহর ও জেলার ৮টি গ্রামে দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ করেছেন। তিনি গ্রামগুলোয় খুবই জনপ্রিয়।

তিনি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, গ্রামে বড় হয়ে ওঠেন। তৃণমূল পর্যায়ে দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ করার আগে তিনি ছিলেন হেইলংজিয়াং প্রদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি সুইলিং জেলার খাওশান থানা খাওশান গ্রামের প্রথম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন শুরু করেন। খাওশান গ্রাম ছিলো একটি প্রাদেশিক পর্যায়ের দরিদ্র গ্রাম। তিনি গ্রামে দারিদ্র্য নির্মূলের জন্য কাজ করতেন। এটি ছিল অষ্টম গ্রাম, সেখানে তিনি দারিদ্র্যমুক্তির জন্য কাজ করেছেন। তিনি কৃষকদের মত পোষাক পরেন। প্রতিবছরের জুন ও জুলাই মাসে তিনি সবচেয়ে ব্যস্ত থাকেন। কারণ, গ্রামের বাসিন্দারা বছরের শুরুর দিক থেকে অর্ধেক বছর সময় নিয়ে ফুল চাষ করেন এবং জুন ও জুলাই হচ্ছে ফসল তোলার সময়। কৃষকদের বার্ষিক আয়ের মূল অংশটি আসে পরের দুই মাসে হারবিনে ফুল বিক্রয় থেকে। ছেন হুয়া খুবই ভোরে হার্বিন থেকে গ্রামে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে ফুল পরিবহনে সহায়তা করেন। ছেন হুয়া বলেন, ফুল বিক্রয় করার পর বাসিন্দাদের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

একদিন ৭০ হাজার ল্যান্ডস্কেপ ফুল গাড়িতে লোড হতে হতে বিকেল চারটা বাজে। ছেন হুয়া গাড়িতে করে ফুলগুলো হার্বিনে নিয়ে যান। তিনি গাড়িতে কিছু খেয়েছেন; একসময় ঘুমিয়েছেন। হার্বিন পৌঁছানোর পর তিনি দ্রুত ল্যান্ডস্কেপ ফুলগুলো ব্যবস্থাপনা করতে শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেন।

এতো জটিল ও ভারি কাজ ছেন হুয়া অনেক বছর ধরে করছেন। তিনি অনেক বছরের দারিদ্র্যবিমোচনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বাসিন্দাদেরকে ফুল চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্যবিমোচন শিক্ষা দেন। তিনি গ্রামে 'যান্ত্রিক কৃষিদল' প্রতিষ্ঠা করেছেন ও 'ফটোভোলটাইক দারিদ্র্যবিমোচন শক্তিকেন্দ্র' নির্মাণ করেছেন, যাতে দরিদ্র পরিবারগুলোকে সহায়তা করা যায়। গ্রামবাসী ছাও জিন ইং বলেন, আমাদের অনেক আজ আছে। বেশি কাজ হলে আমাদের আশা বেশি। আমাদের জীবনযাত্রার মান দিন দিন উন্নত হচ্ছে। আমাদের মনও দিন দিন ভাল হচ্ছে।

২০১৮ সালে খাওশান গ্রাম দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়। গ্রামটির গড় আয় ১০ হাজার ইউয়ানের বেশি। গ্রামের সমষ্টিগত সম্পদ ৫৮.১ লাখ ইউয়ান ছিল। গ্রামটি জেলার উন্নত গ্রামের পর্যায়ে উঠে গেছে।

২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর হলো ছেন হুয়ার অবসর গ্রহণের দিন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি অগ্রহণীয়। তাঁর মনে হয়, আরো বেশি কাজ করতে পারতেন তিনি। বাসিন্দারাও আশা করেন, ছেন হুয়া অব্যাহতভাবে গ্রামে কাজ করে যাবেন। ছেন হুয়া বলেন, আমি অবসর গ্রহণ করেছি, কিন্তু আমি সিপিসি'র একজন সদস্য। আমি আজীবন দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ করার চেষ্টা করতে থাকব।

বর্তমান ছেন হুয়া'র চুল সাদা হয়েছে। কিন্তু তিনি তরুণের মতো কাজ করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, যখন আমি একটি গ্রাম ত্যাগ করি, তখন আমার খুশি লাগে এই ভেবে যে, গ্রামের অনেক উন্নতি হয়েছে। আমার মনে হয়, আমার কাজ অনেক মূল্যবান। সেজন্য আমি বরাবরই দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ করার চেষ্টা করতে থাকব।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040