"আজকের টপিক"
আজ আমরা নভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে মার্কিন অর্থনীতি কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে সে সম্পর্কে কথা বলব।
যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের হার ইতিহাসের সর্বনিম্ন অবস্থায় চলে গেছে। তবে, এ অবস্থায় যে বিষয়টি অনেকের নজরে আসেনি তা হলো মার্কিন পুঁজি বাজার আকাশ ছুঁয়েছে। একদিকে ত্রিশ মিলিয়নেরও বেশি লোক ত্রাণের জন্য লাইনে এসে দাঁড়িয়েছে, অন্যদিকে ৬০০জনেরও বেশি মার্কিন উদ্যোক্তার সম্পদের পরিমাণ ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মারাত্মক মহামারীর সময় কিছু লোকের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। তারা হলো নার্সিংহোমের বয়স্ক মানুষ। মার্চ মাসে যখন যুক্তরাষ্ট্রে নভেল করোনাভাইরাস মহামারী ছড়িয়ে পড়ে, তখন আমেরিকার অর্ধেকেরও বেশি ঘটনা ঘটে ওয়াশিংটনের নার্সিং হোমে। সে সময় মেডিকেল স্টাফসহ ৩০০জনেরও বেশি লোক মাত্র ৪৫টি পরীক্ষা ডোজ পেয়েছিল। ঠিক একই সময়, মিয়ামির একটি বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিগত দ্বীপের বাটলার ও শেফসহ ৮০০জন ১,৮০০টি পরীক্ষা ডোজ পায়! উল্লেখ্য, ওই ব্যক্তিগত দ্বীপে কেবল হেলিকপ্টার দিয়ে পৌঁছানো যায়। কে থাকে সেখানে? সেখানে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের ধনী মানুষদের মাত্র ১ শতাংশ লোক।
আমরা সংবাদ দেখেছি যে, হাসপাতালসহ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্যে চিকিত্সাসামগ্রীর অভাব রয়েছে। কিন্তু মার্চ মাসে, 'ব্লু ফ্লেইম' নামে একটি মার্কিন সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা মহামারী চলাকালীন সব ধরণের দুর্লভ মেডিকেল সামগ্রী বিক্রি করে এবং কয়েকশো কোটি মার্কিন ডলার আয় করে।
এই কোম্পানির মালিক কে? তিনি হলেন মাইক গুলা, যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির তহবিল সংগ্রহকারী। আর তার পিছনে কে রয়েছে? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার।
সবাই আরও একটি খবর দেখেছেন। ২৭ মার্চ ট্রাম্প একটি ২.২ ট্রিলিয়ন ডলার বেল-আউট বিল স্বাক্ষর করেন, ৯০ শতাংশ আমেরিকানকে ১২০০ ডলার বেল-আউট দেন তিনি। তবে আমেরিকানদের ৯০ শতাংশ যে অর্থ পেয়েছে তা ২.২ ট্রিলিয়ন-এর মাত্র ৩০ শতাংশ। তাহলে বাকী ৭০ শতাংশ কোথায় গেল? এই ৭০ শতাংশ ধনী লোকদের ট্যাক্স ফেরত দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ, ধনী ব্যক্তিরা উদ্ধার বিল থেকে গড়ে ১.৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছেন।
বাস্তব অবস্থা হলো, যুক্তরাষ্ট্রে নভেল করোনাভাইরাস মহামারী দরিদ্রদের জন্য একটি বিপর্যয়; তবে তা ধনীদের জন্য একটি উত্সব।