প্রতিদিন ভোরে চীনের চিয়াংসু প্রদেশের খুনশান শহরের বাথিয়ে থানার লোমশ কাঁকড়া চাষকারী কৃষক ছাং চিয়ান হু কাঁকড়া পুলে আসেন। তিনি বলেন, 'যদিও কাঁকড়া যথেষ্ট বড় হবার সময় হয়নি, তবুও আমি অনেক অর্ডার পাচ্ছি। চলতি বছর কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে। আমার ব্যবসাতেও এর কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে আমার বিক্রয়ের পরিমাণ কমবে না।'
স্থানীয় বুদ্ধিমান কৃষি প্ল্যাটফর্ম ছাং চিয়ান হুয়ার আস্থা ফিরিয়ে দিয়েছে। ২০১৮ সালে প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়। লোমশ কাঁকড়া চাষের পদ্ধতি পরিবর্তনের জন্য খুনশান শহর পৃথক পৃথকভাবে এক বিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করেছে। ৩০ হাজার কাঁকড়ার চাষযোগ্য পুলের উচ্চ মানের রূপান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে কৃষকরা দূরবর্তী পুলের অবস্থা, পানির তাপমাত্রা ও পিএইচ মান পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
ছাং চিয়ান হুয়া বলেন, পানির অবস্থা ভাল হলে, পুলে ভাল ঘাস হবে। ভাল ঘাস হলে, ভাল কাঁকড়া চাষ করা যায়। ব্যবস্থা উন্নয়ন ও রূপান্তর এবং বুদ্ধিমান কৃষি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার আগে পুলের আয় ২ হাজার থেকে ৩ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত ছিল। কিন্তু এখন এক পুলের আয় হলো ৮ থেকে ১০ হাজার ইউয়ান।
খুনশানে কাঁকড়া চাষ শিল্প ৪০ থেকে ৭০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। বার্ষিক আয় ৪ বিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে। ছাং চিয়ান হুয়া'র জীবনমানও অনেক উন্নত হয়েছে। তাঁর লক্ষ্য হলো খুনশানের লোমশ কাঁকড়ার ব্রান্ড আরও জনপ্রিয় করা।
এদিকে খুনশানের হুয়াছিয়াও থানার থিয়ানফু গ্রামের তরুণ কৃষক ইয়াও খ্য ওয়েই'র লক্ষ্য হলো নিজের পণ্যের একটা ব্রান্ড গড়ে তোলা। তিনি প্রতিদিন দু'টি কাজ করেন। একটি হলো ফুলের গ্রিন হাউস পর্যবেক্ষণ করা, অন্য একটি হলো বুদ্ধিমান কৃষি প্ল্যাটফর্মে লগইন করে ডেটা আপডেট করা।
ইয়াও খ্য ওয়েই বলেন, 'এ প্ল্যাটফর্মে আমাদের উত্পাদনের প্রক্রিয়া দেখা যায়। কীটনাশকের ব্যবহারসহ বিভিন্ন কাজ অনলাইনে পর্যবেক্ষণ করা যায়।'
ব্লকচেইন প্রযুক্তি এনক্রিপশন অ্যালগরিদম ও বিতরণ স্টোরেজ ব্যবহারের মাধ্যমে খুনশান বুদ্ধিমান কৃষি প্ল্যাটফর্মে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবহাওয়া, পরিবেশ ও অন্যান্য জনসেবার ডেটা আপলোড করা হয়। তারপর বিতরণের সার্ভার, বিস্তৃত তথ্য ও কর্তৃপক্ষীয় ডেটার সাথে ইন্টিগ্রেটেড স্টোরেজ করা যাবে। এ সম্পর্কে ইয়াও খ্য ওয়েই বলেন, বুদ্ধিমান কৃষি প্ল্যাটফর্মের সংগৃহিত ডেটার সমর্থনে তাঁর বার্ষিক বিক্রয় আগের ২.৫ থেকে বর্তমানে ৪ লাখে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চিয়াংসু প্রদেশের খুনশান সক্রিয়ভাবে জাতীয় নীতিকে কাজে লাগিয়ে, কৃত্রিম বুদ্ধি, ইন্টারনেট, ব্লকচেইনসহ বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বুদ্ধিমান কৃষি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে। এটি কৃষকদের আয় বৃদ্ধি ও তাঁদের জীবনমান অনেক উন্নত করেছে। খুনশান শহরের কৃষি ও গ্রাম ব্যুরোর উপপরিচালক দ্য শান বলেন, 'আমরা খোলা ও নিয়ন্ত্রিত বুদ্ধিমান কৃষি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছি। এর ভিত্তিতে আমরা পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারি এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারি।'
অনুমান অনুযায়ী, ২০২০ সালের শেষ দিকে খুনশান বুদ্ধিমান কৃষি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কৃষকদের আয় ২ বিলিয়ান ইউয়ান বাড়বে। এখন তাঁরাও ধনী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবেন।