ঝাং হাইওউ একজন বিখ্যাত জার্মান-চীনা তরুণ পিয়ানোবাদক। তিনি ২০১০ সালে উত্তর জার্মানিতে নিজের নামে আন্তর্জাতিক সংগীত উত্সব শুরু করেন। সম্প্রতি তাকে দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির বাডেন-ওয়ার্টেমবার্গে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে তিনি ওসবার্গহফে ক্লাসিকাল আন্তর্জাতিক সংগীত মৌসুম উদ্বোধনের দায়িত্ব পান। এ সম্পর্কে বিস্তারিত শুনুন জার্মানি থেকে চায়না মিডিয়া গ্রুপের সংবাদদাতার প্রতিবেদনে।
ঝাং হাইওউ বলেন যে, এ বছর বিথোভেনের জন্মের ২৫০তম বার্ষিকী এবং ব্রুচের মৃত্যুর ১০০তম বার্ষিকী। সুতরাং, জার্মানির মহান সুরকারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আয়োজিত ধারাবাহিক ওসবার্গহফ ২০২০/২০২১ ক্লাসিক্যাল আন্তর্জাতিক সংগীত মৌসুমে একটি বিশেষ আয়োজন করা হবে। একই সময়, আন্তর্জাতিক সংগীতের মঞ্চে হেভিওয়েট সংগীতশিল্পীদের শক্তিশালী লাইনআপ, ঐতিহ্যবাহী সৃষ্টির উচ্চমানের পরিবেশনা, ক্লাসিক পুস্তকের উদ্ভাবনী ব্যাখ্যা ইত্যাদি সব বয়সের বিভিন্ন দর্শকদের চাহিদা বিবেচনা করে আকর্ষণীয় অডিও-ভিজ্যুয়াল অনুষ্ঠান তৈরির চেষ্টা করা হবে।
২০২০ সালের গ্রীষ্ম থেকে ২০২১ সালের বসন্ত পর্যন্ত গোটা সংগীত মৌসুমের কনসার্টগুলি ছাড়াও, এই সংগীত মৌসুমের সমাপ্তি হলো ২০২১ সালের এপ্রিলের আন্তর্জাতিক পিয়ানো উত্সব। সে সময়, এক তরুণ চীনা সংগীতশিল্পীসহ পিয়ানো জগতের ছয়জন নতুন তারকার একক সংগীত কনসার্ট পরিবেশন করা হবে। ঝাং হাইওউ বিশ্বাস করেন যে, তরুণ সংগীতশিল্পীদের প্রচারের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, এই ছয়জন একাধিক আন্তর্জাতিক পুরষ্কার জিতেছেন। এবার আমি ইউরোপীয় প্রধান অর্কেস্ট্রার প্রধান কন্ডাক্টরদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। যদি তারা মনে করেন যে, একজন তরুণ পিয়ানোবাদক ভাল করছেন এবং বেশ আগ্রহী, তাহলে তারা অন্য পক্ষকে অর্কেস্ট্রাতে সহযোগিতা করার জন্য আমন্ত্রণ জানাবে। আমি আশা করি, তরুণ পিয়ানোবাদকদের প্রতিভা বিকাশের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম এবং একটি সুযোগ দেবে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলির কাছ থেকে সত্যিই তাদের সমর্থন দিতে পারি। তরুণ চীনা শিল্পীরা যদি এ বিষয়ে যথেষ্ট ভালো হন তবে আমি তাদের সহায়তা করে খুশি হবো।
নভেল করোনাভাইরাস নিউমোনিয়ার মহামারী জার্মান সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশাল প্রভাব ফেলেছে। যদিও বর্তমানে বিভিন্ন ফেডারেল রাজ্য ধীরে ধীরে মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থা কিছুটা শিথিল করেছে, তবে কনসার্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে এখনও তুলনামূলক কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। বাডেন-ওয়ার্টেমবার্গে, ইনডোর কনসার্টে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০০জন। সুতরাং, স্থানীয় সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আগে, ঝাং হাইওউ এবং তার দলটি আরও বেশি মানুষের ক্লাসিকাল সংগীত উপভোগের জন্য বিশ্বব্যাপী সরাসরি সম্প্রচার পদ্ধতি ব্যবহার করবে। তিনি বলেন, কনসার্টে শ্রোতাদের সীমিত সংখ্যক উপস্থিতি বিবেচনা করে, আমি আশা করি যে আধুনিক পদ্ধতিতে সুন্দর সংগীত প্রকাশের পদ্ধতি আরও বেশি মানুষের প্রশংসা অর্জন করবে। এটি গোটা বিশ্বে সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠান, তাই আমি বিশেষভাবে আশা করি যে, ঘরে বসেও শ্রোতারা এটি উপভোগ করতে পারবে। নভেল করোনাভাইরাস নিউমোনিয়া মহামারীটির বিশেষ এ সময়ে, আমি মনে করি সংস্কৃতি ও সংগীত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এরকম জটিল পরিস্থিতির মুখে অনেকে স্বাভাবিক মানসিক অবস্থাও প্রভাবিত হয়। এটা আমি খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি। সংগীত, বিশেষত শাস্ত্রীয় সংগীত, আমার মনে হয় এখনও এটি খুব অনন্য; এটি একটি শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ আধ্যাত্মিক শক্তি বয়ে আনতে পারে। এসময় সংগীতজ্ঞদের বর্তমান সীমাবদ্ধ শর্তের অধীনে আরও বেশি লোকের কাছে এ বিশ্বাস পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেওয়া উচিত এবং তাদের অনুপ্রেরণা দেওয়া উচিত।