চিঠিতে সি লিখেছেন, ১১৮ জন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর সিনচিয়াংয়ের তৃণমূলে চাকরি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, স্থানীয় সংখ্যালঘু জাতির বাসিন্দাদের সাথে সংগ্রাম করে পশ্চিম চীনের উন্নয়নে অবদান রাখবে এবং সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণকারীতে পরিণত হবে। এ আগ্রহ ও সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান তিনি।
তিনি আরও লেখেন যে, কোভিড-১৯ মহামারীর কঠোর সংগ্রামের মধ্যে এ পর্যায়ের স্নাতক শিক্ষার্থীরা অন্যদের তুলনায় আরও বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। এ অভিজ্ঞতা থেকে তারা বুঝতে পারে যে, যাত্রার পথ সবসময় মসৃণ হয় না; অবশ্যই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। তাই চীনা জাতির মহান পুনরুত্থানের চীনা স্বপ্নের বাস্তবায়নে নতুন প্রজন্মের যুবকদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ও সংগ্রাম প্রয়োজন। স্নাতক ডিগ্রিধারীরা গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কাঁধে ভারী দায়িত্ব বহন করে থাকে। বিভিন্ন স্কুলের স্নাতকদের উচিত মাটিতে স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ ও সমস্যার মোকাবিলা করা এবং আদর্শ দেশ গড়ে তুলতে নিজ নিজ পালন করা। এর মাধ্যমে তারা মানুষের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করতে পারবে।
সি জোর দিয়ে বলেন, বিভিন্ন শহরের সরকার ও সিপিসি'র পার্টির শাখাকমিটির উচিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করা, প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে কোভিড-১৯ মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে দেওয়া। এতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
আসলে দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসচেন সি। চীনের পেট্রোলিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলামায়ি শাখা ক্যাম্পাস ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ের স্নাতকরা চীনের ১৬টি প্রদেশ থেকে এসেছেন। ৪৩৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১৮ জন সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের তৃণমূলে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা এ চিন্তাভাবনা ও সিদ্ধান্ত চিঠিতে প্রেসিডেন্ট সি'কে জানিয়েছেন। তাদের উদ্দেশ্য, স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখা।
এ আগ্রহের প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট সি এবং চলতি বছরের 'কাওখাও' পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য শুভকামনা জানান। তিনি বলেন, "মনে সূর্যালোক থাকলে পায়ে শক্তি আসবে। আদর্শের বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও অবিচল থাকা প্রয়োজন। এভাবেই কেবল চমত্কার ও স্মরণীয় জীবন কাটানো যায়।"
প্রিয় শ্রোতা, আপনারা যারা নিয়মিত আমাদের অনুষ্ঠান শোনেন, তারা অবশ্যই জানেন যে, চলতি বছর সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলা এবং সার্বিকভাবে দারিদ্র্যবিমোচন বাস্তবায়ন করার চূড়ান্ত বছর। এ বছরই এই দুটি লক্ষ্য অর্জন করতে চায় চীনের সরকার।
পয়লা জুলাই চীনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার ৯৯তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চীনের নেটিজেনরা সিপিসি'র উন্নয়ন সম্পর্কে ব্যাপক আগ্রহ দেখান। প্রেসিডেন্ট সি বারবার বলেন যে, চীনের সুন্দর উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে চাইলে সিপিসি'র গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে। তাই সিপিসি'র কঠোর প্রশাসন ও সুশৃঙ্খল উন্নয়ন চীনা জাতির মহান পুনরুত্থানের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।
অনলাইন পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, সিপিসি'র কঠোর প্রশাসন এবং দক্ষ ও নৈতিকতার দিক দিয়ে উচ্চমানের সরকারি কর্মকর্তা-প্রশিক্ষণের ব্যাপারে চীনা জনগণে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ।
এ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট সিও জোর দিয়ে বলেন, কঠোরভাবে পার্টি বা দেশ প্রশাসন করতে চাইলে দক্ষ ব্যক্তি বেছে নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সিপিসি'র কর্মকর্তারা দেশ ও পার্টির উন্নয়নের স্তম্ভ ও ভিত্তি। দক্ষতা ও নৈতিকতা উভয়েই প্রয়োজন। তাই শ্রেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে ব্যাপক মনোযোগ দিতে হবে।
তা ছাড়া, চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও চীনা স্বপ্নের বাস্তবায়ন—এই দুটি বিষয় চীনা নেটিজনের মধ্যে অনেক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। প্রেসিডেন্ট সি তাঁর ভাষণে বারবার এ কথা উল্লেখ করেন। যেমন তিনি বলেছিলেন, 'চিন্তাধারা ও আদর্শ গড়ে তোলা হবে সিপিসি'র উন্নয়নের ভিত্তি। সবসময় পার্টির লক্ষ্যমাত্রা মনে রাখতে হবে, সঠিক মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে, যাতে চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্র ও চীনা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যায়।'
আসলে চীনা নেটিজেনদের অনলাইনে দেওয়া বার্তা তাঁদের চিন্তাধারার স্পষ্ট প্রতিফলন। সিপিসি'র ৯৯তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানিয়েছেন।
৯৯ বছরের সংগ্রাম ও পরিশ্রমের সাফল্য অতি আকর্ষণীয়। এ বিস্ময়কর যাত্রা থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে চীনের উন্নয়ন ও চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
তবে এ যাত্রায় অবশ্যই বহু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হতে হবে। এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সচেতন। তিনি সবসময় সিপিসি'র সদস্যদের বলেন, 'আমাদের এ অবস্থা যেন নৌকার স্রোতে পড়া আর মানুষের পাহাড়ের ক্লিফে অর্ধেকটা ওঠার মতো। কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে আপস করা চলবে না। মহান স্বপ্ন অলসভাবে অপেক্ষা করা বা উঁচুকণ্ঠে স্লোগান দিয়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এর জন্য পরিশ্রম, সংগ্রাম ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।'
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী পালিত হবে আগামী বছর। ততদিনে চীনে সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ কায়েম হয়ে যাবে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চীনের বিভিন্ন জাতির লোকজনকে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পাদন করতে হবে। প্রেসিডেন্ট সি'র নেতৃত্বে এ লক্ষ্যমাত্রার বাস্তবায়নে আশাবাদী চীনা নেটিজনরা। কেউ কেউ অনলাইনে লিখেছেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি যেন যুবকের মতো, যার মনে প্রতিজ্ঞা ও আদর্শ রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তৃণমূলের সরকারি কর্মকর্তা থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। তিনি সবসময় জনগণকে কেন্দ্র করেই কাজ করে এসেছেন। তাঁর নেতৃত্বে চীনের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জত হবে এবং চীনা জনগণের জীবনমান আরও উন্নত হবে, এমন আশা করি আমরা।