১৯৪৫ সালের অগাস্ট মাসের শুরুতে চীনের জাপানি-আগ্রাসনবিরোধী যুদ্ধ বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে প্রবেশ করে। সিপিসি'র সদস্য এবং স্থানীয় লোকজনের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য জাপানি বাহিনী থিয়ান ইউ শেংকে গ্রেফতার করে। কুং জেলার কারাগারে শত্রুর কঠোর নির্যাতনে তাঁর দুই পা অচল হয়ে যায়।
থিয়ান ইউ শেং বলেন, আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। তবে আমি মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করবো না। ১ ভাগ আশা থাকলেও আমি কারাগার থেকে পালিয়ে যাবো, অব্যাহতভাবে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করবো। একটি রাতে, সুযোগ বুঝে কারাগার থেকে পালিয়ে যান তিনি।
বিপদ থেকে মুক্ত হয়ে থিয়ান ইউ শেং কাছাকাছি মি জেলার কয়লা-খনিতে একজন কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি কয়লা-খনিতে বিপ্লবের চিন্তাধারা জনপ্রিয় করে তোলেন। এরপর তিনি শত্রুদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তত্কালীন বিপ্লবের কেন্দ্রস্থল– ইয়ান আন শহরে পৌঁছান। ১৯৫০ সালে থিয়ান ইউ শেংকে 'জনগণের বীর' হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়।
এই মর্যাদা পাওয়ার পর থিয়ান ইউ শেং বললেন, তখন আমাদের বিপ্লবের চেতনা ছিল খুব সরল। বিপ্লবের জন্য মৃত্যুও ছিল গর্বের ব্যাপার।
বহু বছর ধরে থিয়ান ইউ শেং বিভিন্ন কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা, মাধ্যমিক স্কুল ও সেনাবাহিনীতে ৯ শতাধিক বার 'লাল মর্মের' রিপোর্ট করেছেন।
ইয়ান আনের চেতনা, বিপ্লবের যুদ্ধ, হ্যনান প্রদেশে জাপানি-আগ্রাসনবিরোধী যুদ্ধ এবং তাঁর নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন গল্পের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে সেসব ইতিহাসের কথা তুলে ধরেছেন। রিপোর্ট করার পর তিনি কখনই অনুষ্ঠানস্থলের খাবার খান না, এক পয়সা পুরস্কারও নেন না। মাঝে মাঝে তাঁর অচল পায়ে খুব ব্যথা হয়, রাতে ভীষণ ব্যথায় তিনি ঘুমাতেও পারেন না। তাঁর জামার পকেটে সবসময় ব্যথানাশক ওষুধ থাকে।
অনেকের চোখে, থিয়ান ইউ শেং নিজের প্রাণ দিয়ে মর্যাদার বিনিময় দিয়েছেন। এটি জীবনের একটি অমূল্য সম্পদ। বহু বছর ধরে থিয়ান ইউ শেং-এর পরিবারের কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেও কখনই সরকারের কাছে সাহায্য চায় নি।
তিনি একজন প্রবীণ সেনা এবং কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যের চেতনা অনুসারে পার্টির প্রতি নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন।