চীনের হ্য চ্য জাতির লোকজন প্রধানত মাছ ধরার মাধ্যমে জীবনযাপন করে ও মাছ বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করছে। গত শতাব্দীর শেষ দিকে, মত্স্য সম্পদের অভাবে, হ্য চ্য জাতির জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠেছে। তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য চীন সরকার তাদের 'জাহাজ ছেড়ে জমিতে নামার' পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। তাদের প্রত্যেককে ৪.৭ হেক্টর জমি বিতরণ করা হয়। কৃষিকাজ ও গৃহপালিত পশু লালন-পালনের মাধ্যমে হ্য চ্য জাতির লোকজনের জীবনমান ধীরে ধীরে ভালো হতে থাকে। গ্রামের লোকজনের জীবন আরও উন্নত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
বা ছা গ্রাম চীনের তিনটি প্রধান নদীর উত্সের বা ছা দ্বীপে অবস্থিত। এখানে নদ-নদী বেশি, প্রাকৃতিক দৃশ্য অনেক সুন্দর, এখানকার প্রাকৃতিক পর্যটন সম্পদ খুব সমৃদ্ধ।
২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট ও সিপিসি'র সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং গ্রামে এসে হ্য চ্য জনগণের খোঁজ খবর নিয়েছিলেন। গ্রামের সিপিসি'র শাখা সম্পাদক ইউ মিং কুও-এর নতুন চিন্তাধারা লোকজনের জন্য আরো সুন্দর জীবন উদ্ভাবন করতে পারে।
তিনি সবাইকে গ্রামের সুবিধা কাজে লাগিয়ে পর্যটন শিল্প উন্নয়নের উত্সাহ দেন। গ্রামে 'হ্য চ্য রীতিনীতি' এবং Tidal flat-এ মাছ ধরা এই দু'টি মজাদার পর্যটন রুট স্থাপন করা হয়। এ ছাড়া গ্রামে ৩০টিরও বেশি বৈশিষ্ট্যময় পারিবারিক হোটেল চালু করা হয়। যাতে পর্যটকরা এখানে এসে ভালোভাবে ঘুরতে পারে এবং থাকতেও পারে। গত ৩ বছরে বা ছা গ্রাম ৪০ হাজারেরও বেশি পর্যটককে অভ্যর্থনা জানিয়েছে, পর্যটন খাতে নিট আয় ছিল প্রায় ১০ লাখ ইউয়ান।
বা ছা গ্রাম এভাবে হ্য চ্য জাতির মাছ ধরার বৈশিষ্ট্য রক্ষা করে চলেছে, অন্যদিকে গ্রামটির পর্যাপ্ত আয়ও হয়েছে। গ্রামের মাথাপিছু আয় ২২ হাজার ইউয়ান। নিবন্ধিত ১৪টি দরিদ্র পরিবারের ২১জন সদস্যের সবাই দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ ও বৈশিষ্ট্যময় উপজাতির রীতিনীতি নিয়ে জনগণের চাষ ও গৃহপালকের জীবন, পর্যটক, রেস্তোরাঁ খোলা এবং হস্তশিল্পে সমর্থন দিয়েছে।
ইউ কমিং কুও জানান, আগে এখানের হ্য চ্য জাতির কাছে শুধু কাঠের জাহাজ ছিল। এখন গ্রামের দু'টি বড় প্রমোদতরী আছে। ভবিষ্যতে গ্রামটি রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা করে 'চীন-রাশিয়া' ভ্রমণ লাইন খোলার পরিকল্পনাও তৈরি করবে।
জানা গেছে, গ্রামের এই দু'টি প্রমোদতরী পর্যটন শিল্পে ব্যবহার করার পর প্রতি বছর গ্রামে ৪০ লাখ ইউয়ান আয় যোগ করবে।