পুরো গ্রামের ১১০০জন অধিবাসীর মধ্যে ১০০০জন গ্রাম ছেড়ে চলে যায় এবং বাকি ১০০জন গ্রামে থেকে যায়। তারপরও তারা বেকার ছিল। তাদের অনেকেই ছিল খুব দরিদ্র। সিং হুই গ্রামে শিল্প উন্নয়নের জন্য কাউকে-না-কাউকে ফিরে যেতেই হবে। ২০১৮ সালে গ্রামের সিপিসি'র প্রধান শাকসবজি ব্যবসায়ী হান লিউ হুয়াকে মনে করলেন। হান লিউ হুয়া অন্য শহরে বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যবসা করছিলেন।
গ্রাম প্রধানের উত্সাহে দু'বছর আগে হান লিউ হুয়া তার ১০ বছরের কোম্পানি ব্যবস্থাপনার জন্য অন্যদের হাতে ছেড়ে দেন। গ্রামে ফিরে নারীদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন হান লিউ হুয়া। তিনি এ গ্রামের গত ২০ বছরের মধ্যে প্রথম একজন, যিনি বাইরে থেকে ফিরে এসেছেন।
তবে, গ্রামটি উন্নয়নের পথে ব্যাপক চাপের মুখে পড়েন হান লিউ হুয়া।
জনশক্তির অভাবে গ্রামের অনেক জমি শূন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। উর্বর জমি থাকার পরও হান লিউ হুয়া ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি একটি জনশূন্য জমিতে শাকসবজি চাষ করা শুরু করেন। শাকসবজি উত্পাদন হয়ে গেলে তিনি একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শহরবাসীদের কাছে বিক্রি করেন। তিনি বুঝতে পারেন নি যে, তার শাকসবজি শহরবাসীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। হান লিউ হুয়া ভালো পথ উন্মোচন করেছেন। এরপর তিনি প্রতি পরিবারের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিয়ে বাড়িঘরের সামনে পিছনের জমিতে শাকসবজি চাষ করা শুরু করেন এবং অনলাইনে একসঙ্গে বিক্রি করেন। গ্রামবাসীদের সমর্থনে ২০১৯ সালে হান লিউ হুয়া গ্রামবাসীদের ১১৫টি ২০০ বর্গমিটারের জমি একত্রীকরণ করে শাকসবজি চাষ শুরু করেন। এ খামারের নামকরণ করা হয় লি হুয়া বোনের শাকসবজির বাগান।
তাজা শাকসবজি শুধু শহরে নয়, গ্রামের কৃষিপণ্য সমবায়ের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
হান লিউ হুয়া বলেন, কৃষিপণ্য সমবায়ের সঙ্গে আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করি। শাকসবজি প্রক্রিয়াজাত করা যায়। ভুট্টা থেকে মদ তৈরি করা যায়। তাদের সরবরাহ করতে আমাদের ১১৫টি বাগানের শাকসবজি যথেষ্ট ছিল না।
কৃষিপণ্য কমিউনিটিতে অধিকাংশ মাঝারি ও বেশি বয়সের মানুষ। হান লিউ হুয়া'র পরামর্শে তারা মিষ্টি, চাউল মদসহ নানা পণ্য তৈরি করতে থাকেন। এভাবে তদের আয় বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিপণ্য কমিউনিটির আয় বাড়ার পর তা আরও কল্যাণকর হয়ে ওঠে।
এ গ্রামের নারী প্রধান হিসেবে হান লিউ হুয়া প্রতিনিধি কৃষক পরিবারে যোগাযোগ শুরু করেন। তাদেরকে গ্রাম প্রধানের পরিকল্পনা বুঝিয়ে দেন। সমবায়ের কাছে বেশি জমি দেওয়া মানে শেয়ারের লভ্যাংশ পাওয়া। সমবায় কেবল খাদ্যশস্যই বিক্রি করে না, বরং গ্রামবাসীদের কর্মসংস্থানও নিশ্চিত করে। তা ছাড়া সমবায়ের অধীনে 'সিং হুও খামারের রীতিনীতি গ্রাম' শীর্ষক প্রকল্প গড়ে ওঠে। এ প্রকল্পকে সাড়া দেয় গ্রামের সবাই।
সিন হুও গ্রামের প্রধান ছুই চে চুন বলেন, এ প্রকল্পের ৫৫ শতাংশ শেয়ার গ্রামবাসীর। মাত্র দু'বছরের মধ্যে সিন হুও গ্রাম আবারও প্রাণচঞ্চল হয়েছে। দারিদ্র্যবিমোচনের পথে তার দৃঢ় পদক্ষেপ দেখা যায়। বর্তমানে ওই গ্রামটির বার্ষিক মাথাপিছু আয় সর্বনিম্ন ৭৭০০ ইউয়ান এবং সর্বোচ্চ ১৫০০০ ইউয়ানে উন্নীত হয়েছে।
গ্রামের সঞ্জীবনীশক্তি পুনরুদ্ধারের কৌশলের কারণে সিন হুও গ্রাম ধীরে ধীরে কৃষি, পর্যটন ও সংস্কৃতিকে একত্রিত করে সুন্দর গ্রামে পরিণত হয়।