জুন ৯: গত রোববার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি চি মিংয়ের লেখা একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে ইউএনবি। প্রবন্ধটির শিরোনাম: একতা ও সহযোগিতায় কোভিড-১৯ প্রতিরোধ: চীন-বাংলাদেশ অভিন্ন গণস্বাস্থ্য কমিউনিটি গড়ে তোলা।
প্রবন্ধে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে বিস্তারলাভ করেছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে এবং চার লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হরিয়েছেন। বিশ্বের অর্থনীতির ওপরও এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে; সামাজিক উন্নয়নের প্রক্রিয়া হচ্ছে বাধাগ্রস্ত।
প্রবন্ধে বলা হয়, বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু। মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চীনকে বাংলাদেশের বিভিন্ন মহল সাহায্য করেছে। এতে দু'দেশের জনগণের গভীর বন্ধুত্ব ফুটে উঠেছে। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে পাঠানো বার্তায় বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার চীনা জনগণ ও সরকারের সাথে বরাবরই বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ইচ্ছুক। কোভিড-১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে চীন অবশ্যই জয়ী হবে বলেও তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন। তাঁর প্রতি চীন কৃতজ্ঞ।
কোভিড-১৯ মহামারীর বিরুদ্ধে চীন দৃঢ়ভাবে লড়াই করেছে। সম্প্রতি চীনা সরকার " কোভিড-১৯ প্রতিরোধে চীনের কার্যক্রম" শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, চীনা জনগণ কোভিড-১৯ প্রতিরোধের প্রক্রিয়ায় কঠোরতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। চীন সবসময় জনগণের প্রাণের নিরাপত্তা ও শারীরিক সুস্থতাকে শীর্ষ স্থানে রেখে এসেছে এবং সবোর্চ্চ, সার্বিক ও কঠোর প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আর এর ফলেই সাফল্যের সাথে চীনে কোভিড-১৯ ভাইরাস বিস্তারের সব চ্যানেল বন্ধ করা সম্ভব হয়।
রাষ্ট্রদূত প্রবন্ধে লিখেছেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এখনও কঠিন। বাংলাদেশের আন্তরিক ও নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসেবে, মহামারীতে প্রাণ হারানো বাংলাদেশিদের জন্য চীন শোক প্রকাশ করে। পাশাপাশি বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে চীন অব্যাহতভাবে দৃঢ় সমর্থন দিয়ে যাবে। ২০ মে সন্ধ্যায়, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসেনার সাথে ফোনালাপ করেন। দু'দেশের নেতৃবৃন্দ মহামারীর প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর দু'দেশের একে অপরকে সমর্থনের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা কোভিড-১৯ প্রতিরোধসহ অন্যান্য খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার প্রশ্নে একমত হন। ফোনালাপে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আবারও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের কোভিড-১৯ প্রতিরোধে চীনের দৃঢ় সমর্থন রয়েছে। বাংলাদেশের আসল চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদল পাঠানোসহ বিভিন্ন সাহায্য দিয়েছে ও দেবে চীন।
প্রবন্ধে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছর হচ্ছে চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৫তম বার্ষিকী। বিগত ৪৫ বছর ধরে, চীন ও বাংলাদেশ এক অপরকে সম্মান ও সমর্থন করে আসছে। বিভিন্ন খাতের সহযোগিতাও অনেক উন্নত হয়েছে। চীন ও বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। গণস্বাস্থ্য, বাণিজ্য, পুঁজি বিনিয়োগসহ অনেক খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। চীন ও বাংলাদেশের সহযোগিতা শুধু দু'দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর, তা নয়; বরং অঞ্চলের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্যও সহায়ক।(আকাশ/আলিম/রুবি)