দারিদ্র্যবিমোচনে চীনের অভিজ্ঞতা বিশ্বের জন্য শিক্ষণীয়: ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞ
  2020-06-01 14:27:44  cri
জুন ১: চীনের আধুনিক যুগের ইতিহাস ও রাজনীতিবিষয়ক ব্রিটিশ পণ্ডিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা কেন্দ্রের প্রধান অধ্যাপক রানা মিত্তার। তিনি বহু বছর ধরে চীনের 'দুই অধিবেশনের' ওপর দৃষ্টি রেখে আসছেন। সদ্যসমাপ্ত 'দুই অধিবেশন' প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দারিদ্র্যবিমোচনের ক্ষেত্রে চীনের নীতি ও অভিজ্ঞতা বিশ্বের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। 'দুই অধিবেশনে' অর্থনীতি ও রাজনীতিবিষয়ক সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে চীনে উচ্চ মূল্য সংযোজন শিল্পের উন্নয়ন ঘটছে। ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং অর্থনীতি ও সমাজের আরো সমন্বিত উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে রানা মিত্তার বলেন, ২০২০ সাল হলো চীনের দারিদ্র্যমুক্তির গুরুত্বপূর্ণ বর্ষ। দুই অধিবেশনে নির্ধারিত সংশ্লিষ্ট নীতি থেকে দেখা যায়, পরবর্তী সময়ে চীনের দারিদ্র্যমুক্তির কর্তব্য হবে উন্নয়নের আঞ্চলিক ভারসাম্যহীনতার সমাধান করা। তিনি বলেন,

'সম্প্রতি চীন সরকার উন্নয়নের নীতি পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করে। বিশেষ করে দরিদ্র অঞ্চলে বা অনুন্নত অঞ্চলে সুবিধানজক নীতি জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাই আমি মনে করি, পরবর্তীতে দারিদ্র্য কমানোর বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ হলো অঞ্চলগুলোর মধ্যে বৈষম্য কমানো। এটি দারিদ্র্যবিমোচনের পরবর্তীকালীন উদ্দেশ্য হবে বলে আমি মনে করি।'

তিনি আরও বলেন, দারিদ্র্যবিমোচনের ক্ষেত্রে চীন বিশ্বের জন্য অনেক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা যুগিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কোনো কোনো অভিজ্ঞতা উন্নত দেশগুলোর কাছেও গ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন,

'যেমন, অর্থনীতির বিশেষ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরীক্ষা হলো ভালো একটি উদাহরণ। গত শতাব্দীর ৮০'র দশকে তেং সিয়াও পিংয়ের নেতৃত্বে চালানো হয় এ পরীক্ষা। তা ছাড়া, আমি মনে করি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে চীনের নেতৃত্ব দেওয়ার অনেক কারণ আছে। এর মধ্যে একটি কারণ হলো, অব্যাহত ও ব্যাপকভাবে উচ্চ মানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণার ক্ষেত্রে বরাদ্দ দেওয়া। এটি উন্নত দেশের কাছে শিক্ষণীয়।'

অধ্যাপক রানা মিত্তার আরও বলেন, চলতি বছর নভেল করোনাভাইরাস মহামারী একদিকে স্বল্প সময়ের মধ্যে চীনের অর্থনীতিতে কিছু নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে সুযোগও বয়ে এনেছে। এসবই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনীতির রূপান্তরের সঙ্গে সম্পর্কিত। সারা বিশ্বে সবচেয়ে আগে ই-কমার্সের উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম চীন। এবারের মহামারী চীনা জনগণের অর্থনীতি পরিবর্তন করেছে। তিনি বলেন,

'আমরা জানি, চীনে অনেক বড় আকারের ই-কমার্স শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে। আলিবাবা ও টেন সেন্ট প্রভৃতি। আরেকটি বিষয়ে খেয়াল করা উচিত যে, মহামারীর সময় মানুষ আরো বেশি করে অনলাইন লেনদেনের প্রতি দৃষ্টি দেয়। এই প্রবণতা অপরিবর্তিত থাকবে। মানুষ গভীরভাবে ই-কর্মাসের সুবিধা ও অসীম সম্ভাবনা অনুভব করতে পারছে। এই প্রবণতা অবশ্যই দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে এবং আরো দূরে যাবে বলে আমি মনে করি।'

অধ্যাপক রানা মিত্তার বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন অধিক থেকে অধিকতর হারে উচ্চ মূল্য সংযোজন শিল্পে পুঁজি বিনিয়োগ করে আসছে। সেগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হলো উচ্চ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিল্প। এসব শিল্প ব্যাপকভাবে মহামারীর শিকার হয়নি। তাই পরবর্তীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমের আরও সমন্বয় সম্ভব হবে। (লিলি/আলিম/শুয়ে)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040