'চীনের দেওয়ানি আইনে জনগণের সদিচ্ছা, যৌগিক লক্ষণ ও চীনা বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে'
  2020-05-29 16:18:21  cri

মে ২৯: চীনের প্রথম দেওয়ানি আইন গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেসের তৃতীয় অধিবেশনে গৃহীত হয়। আগামী ২০২১ সালের পয়লা জানুয়ারি তা কার্যকর হবে। এ আইন গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর প্রথম দেওয়ানি আইন এবং ধারার সংখ্যার দিক দিয়ে এটি বৃহত্তম আইন। সিনিয়র আইনজীবীরা মনে করেন, চীনের দেওয়ানি আইন জনগণের সদিচ্ছা, যৌগিক লক্ষণ ও চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন।

দেওয়ানি আইনে ৭ অধ্যায়ে ১২৬০টি ধারা রয়েছে। এর মধ্যে এক অধ্যায়ে ব্যক্তির অধিকার লিপিবদ্ধ হয়েছে, যা আইনের অন্যতম মূল আকর্ষণ। দেওয়ানি আইন প্রণয়নে অংশগ্রহণকারী চীনের জাতীয় গণকংগ্রেসের প্রতিনিধি, জাতীয় গণকংগ্রেসের সংবিধান ও আইনী কমিশনের সদস্য সুন সিয়ান চুং বলেন, 'এবারের দেওয়ানি আইনে এক অধ্যায়জুড়ে ব্যক্তির অধিকার উল্লেখ করা হয়েছে। আর এর মধ্যে ১০৯ নম্বর ধারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এতে ব্যক্তির মর্যাদা ও ব্যক্তির স্বাধীনতার বিষয় জোরালোভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ধারায় একজন ব্যক্তি হিসেবে মানুষের চাহিদা ও অধিকারকে নতুন পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের স্থায়ী সদস্য, চীনের সর্বোচ্চ আদালতের ডেপুটি প্রধান লি শাও পিং মনে করেন, মানুষের ব্যক্তি অধিকারের কথা এক অধ্যায়জুড়ে লেখা হয়েছে। এর মানে চীনের দেওয়ানি আইনে জনগণের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। লি শাও পিং বলেন, 'ব্যক্তির অধিকার দেওয়ানি আইনে একটি বিস্তারিত ব্যবস্থা। তবে এক অধ্যায়জুড়ে তা উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যক্তির দেশ, মর্যাদা ও স্বীকৃতি নিয়ে বিস্তারিত বিধি তৈরি করা হয়েছে, যা জনগণের বৈধ স্বার্থ রক্ষার জন্য আইনী অস্ত্র প্রদান করেছে।'

দেওয়ানি আইনের বিশেষজ্ঞ স্যু সিয়ান চুং জোর দিয়ে বলেন, একজন মানুষের গোটা জীবন দেওয়ানি আইনের আওতায় রক্ষিত হবে।

ব্যক্তির স্বাধীনতা রক্ষার পাশাপাশি, কিছু নিশেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে আইনে। দেওয়ানি আইনে অধিকার ও দায়িত্ব সমানভাবে বর্ণিত হয়েছে। লি শাও পিং বলেন, 'আমাদের দেওয়ানি আইন মানসম্পন্ন, সামগ্রিক, বৈজ্ঞানিক হওয়ার পাশাপাশি, কার্যকারিতা ও বস্তনিষ্ঠতার সমন্বয়ে সমস্যা সমাধান করতে পারে। যেমন, উচুঁ ভবন থেকে জিনিস ফেলার সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায়? এ নিয়ে দেওয়ানি আইনে বিশেষ বিধান জারির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে তদন্ত করতে বাধ্য করা হয়েছে। তা ছাড়া, জিনিস ফেলার দায়ে দোষী ব্যক্তির আইনী শাস্তির বিষয়টিও আইনে নির্ধারণ করা হয়েছে।'

গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরপর চারবার দেওয়ানি আইন প্রণয়নের প্রচেষ্টা চালানো হয়। তবে নানান কারণে তা সম্পন্ন হয়নি। সিপিসি'র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর সিপিসি আইনানুগভাবে রাষ্ট্র প্রশাসনকে অতি অগ্রাধিকার দিয়ে, ৫ বছরে এ দেওয়ানি আইন প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন করে।

সুন সিয়ান চুং মনে করেন, দেওয়ানি আইন প্রবর্তিত হলে তা আইনানুগভাবে রাষ্ট্র প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার দক্ষতার আধুনিকায়নের জন্য হবে তাত্পর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, 'জনসাধারণ কিভাবে এ আইন মেনে চলবে, দেওয়ানি আইনে তা নিয়ে বিস্তারিত বিধি রয়েছে। জনসাধারণের কাজ সমাজের জন্য উপযোগী হতে হবে এবং আইন অনুযায়ী বেসামরিক কর্মকাণ্ড চালাতে হবে। এটি আইনানুগভাবে রাষ্ট্র প্রশাসনের প্রক্রিয়ায় বড় ভূমিকা পালন করবে।

মে ২৯, ২০২০

চায়না মিডিয়া গ্রুপ থেকে রুবি

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040