অনেকে ভেবেছিলেন যে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি হয়তো সঠিক পথে ফিরে আসবেন। তবে বর্তমানে কোভিড-১৯ মহামারির সংকট প্রমাণ করে যে, তাদের চিন্তা ভুল। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জাতীয় খ্যাতনামা ভাইরাস বিশেষজ্ঞ রিক ব্রাইটকে পদচ্যুত করার সিদ্ধান্ত জানান। কঠিন জনস্বাস্থ্য দুর্যোগের এসময় এমন সিদ্ধান্তে গোটা বিজ্ঞানমহল আতংক বোধ করেছে। ব্রাইট জাতীয় সংস্থার সদস্যদের নিয়ে টিকা গবেষণার কাজ করছিলেন। তবে গত মাসে ট্রাম্পের উত্থাপিত ঔষধের বাধ্যতামূলক প্রচার প্রত্যাখ্যানের কারণে তাকে পদচ্যুত করা হয়।
গত ৫ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, এটি খুব শক্তিশালী ও কার্যকর ঔষধ এবং তাতে মানুষ মারা যাবে না। আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালিয়েছে। এ ঔষধ ব্যবহারে আমাদের ক্ষতি হবে কেন?
তবে গবেষণা থেকে বোঝা যায়, এতে মৃত্যু ঝুঁকি আছে। মার্কিন সাবেক সেনা স্বাস্থ্য প্রশাসন ব্যুরোর গবেষণা থেকে জানা গেছে, কোভিড-১৯ প্রতিরোধে হাইড্রোক্সি ক্লোরোকুইন এবং সংশ্লিষ্ট ক্লোরোকুইন কার্যকর নয়। এ ধরনের ঔষধ কিছু রোগীর মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়।
সংসদে ব্রাইট বলেন, 'সে সময় আমি মতামত দিয়েছি। আজ আমি আবারও বলছি, ভাইরাস প্রতিরোধ বৈজ্ঞানিকভাবে করতে হবে, রাজনৈতিকভাবে নয়।
বস্তুত, ট্রাম্প এবারই প্রথম বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করেন নি; এর আগেও তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতামত উপেক্ষা করে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রথম গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন।
গত জানুয়ারিতে মার্কিন সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের ইমিউন ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বিভাগের পরিচালক ন্যান্সি মেসনিয়ার সতর্ক করে বলেন, করোনাভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রে নিশ্চিতভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। কেন্দ্রটি বিভিন্ন হাসপাতাল ও কমিউনিটিকে মহামারির বিস্তার রোধে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছে।
তবে ট্রাম্প মহামারি ছড়িয়ে পড়া-না পড়া বিবেচনা করেন নি। তিনি পুঁজি বাজারের পতনের কারণে ন্যান্সি মেসোনিয়ারকে পদচ্যুত করার হুঁশিয়ারি দেন এবং তার বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগ করেন। সে সময় থেকে হোয়াইট হাউসে ন্যান্সিকে খুব কমই দেখা যেত।
(রুবি/তৌহিদ/শিশির)