৪৩ বছর বয়সী স্যু চিন হুয়া হলেন বেইজিং শহরের ফেংথাই এলাকার ইন্টিগ্রেটেড চাইনিজ অ্যান্ড ওয়েস্টার্ন মেডিসিন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একজন চিকিত্সক। এ বছরের বসন্ত উত্সবের আগে এ হাসপাতাল কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত চিকিত্সার বিশেষ হাসপাতালে পরিণত হয়। স্যু চিন হুয়া হলেন প্রথম দফায় আইসোলেশান ওয়ার্ডে প্রবেশকারী এবং আক্রান্তকে চিকিত্সাদানকারী প্রথম চিকিত্সক।
চিকিত্সকরা প্রতিদিন আইসোলেশান বা বিচ্ছিন্নতা ওয়ার্ডে চার ঘন্টার মতো টান কাজ করেন। প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরা ও সেটি পরে কাজ করা সহজ কাজ নয়। এ সম্পর্কে স্যু চিন হুয়া বলেন, "প্রথম ঘন্টায় শ্বাসকষ্ট হয়, গগলস ঝাপসা হয়ে থাকে। চিকিত্সকরা রোগীকে চিকিত্সা করা ছাড়াও আবর্জনা পরিষ্কার করেন, ঘর পরিষ্কার করেন, খাবার সরবরাহ করেন এবং জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দেন সর্বত্র। কিন্তু এসব কাজ প্রতিরোধমূলক পোষাক পরে করা খুব কঠিন। আমাদের ত্বকে ঘা হয়েছে, হাতে ফুসকুড়ি উঠেছে।"
বিচ্ছিন্নতা ওয়ার্ডে কাজ করা চিকিত্সাকর্মীরা প্রতিরোধমূলক পোষাক পরার পর পরস্পরকে চিনতে পারেন না। সেজন্য তাঁরা নিজেদের নাম ও পদ পোষাকের উপর লিখতেন, যাতে একে অপরকে চিনতে পারেন।
১৭ বছর আগে যখন চীনে সার্স ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন স্যু চিন হুয়াও সার্স প্রতিরোধের যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন। তিনি এর জন্য পদক লাভ করেছেন। এবারের কোভিড-১৯ প্রতিরোধযুদ্ধে তিনি নিজের প্রতিরোধমূলক পোষাকের বাইরে লিখেছেন 'ভয় পাবেন না'। তিনি বলেন, "আমার নাম গুরুত্বপূর্ণ না। আমি আশা করি, যখন রোগীরা আমার পোষাকের বাইরে 'ভয় পাই না' লেখা দেখেন, তখন তাঁরা উত্সাহিত হন। অচেনা রোগের মুখোমুখী যদি চিকিত্সাকর্মীদের ভয় লাগে, তাহলে রোগীদের আরো বেশি ভয় লাগবে। আমি আশা করি, তাঁরা আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন।"
স্যু জিন হুয়া'র বাবা-মা'র বয়স বেশি। তিনি বিচ্ছিন্নতা ওয়ার্ডে প্রবেশ করার আগে তাঁদেরকে জানাননি। তাঁর স্বামী নিজে তাঁদের সন্তানের যত্ন করেছেন।
স্যু সবসময় বলেন, "আমি একজন সিপিসি'র সদস্য হিসেবে নিজের কাজ ভালভাবে করবো। এটি আমার দায়িত্ব।"