সংবাদ পর্যালোচনা:যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদরা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন
  2020-05-12 13:51:19  cri

মে ১২: 'নিউইয়র্ক টাইমস' গত রোববার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, এফবিআই এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ একটি গণ সতর্কতা জারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা বলছে, "নভেল করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন এবং নভেল করোনাভাইরাসের জন্য নতুন চিকিৎসা উন্নয়নে মার্কিন গবেষণার ফলাফল চুরি করার চেষ্টা করছে চীনা হ্যাকাররা। সিএনএন এর আগেও জানায় যে, মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা তাদের দেশের হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলিতে সাম্প্রতিক সাইবার হামলার জন্য চীনকে দোষারোপ করবে।।

সম্প্রতি কিছু মার্কিন রাজনীতিবিদ গুজব ছড়িয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, এটি দেশীয় গোয়েন্দা বিভাগকে মিথ্যা সংবাদ তৈরি করতে বাধ্য করা হয় যে, তথাকথিত "পাঁচ-চোখের জোট" গোপন ফাইল বানিয়েছিল এবং সাইবার চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য চীনকে অপবাদ দিয়েছিল। যদিও তাদের কাজগুলি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়। তবে তারা এখনও গুজব ছড়াচ্ছে।

আমেরিকান রাজনীতিবিদরা যে গুজব ছড়াচ্ছেন, তা থেকে দেখা যায় যে, তারা উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে, ভ্যাকসিন গবেষণায় চীন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে।

প্রাদুর্ভাবের পর যুক্তরাষ্ট্র কী করেছিল? গত মার্চের প্রথম দিকে, মার্কিন সরকার একটি জার্মান বায়োটেকনোলজি কোম্পানির ভ্যাকসিন ডেভলপমেন্ট প্রযুক্তি ১ বিলিয়ন ডলারে কেনার চেষ্টা করেছিল এবং এটি কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারের অনুমতি ছিল। এই সংবাদ ফাঁস হলে তা জার্মানিসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলো যৌথভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অনলাইন সম্মেলনে ভ্যাকসিন গবেষণা এবং উন্নয়ন, উৎপাদন এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে বিতরণের জন্য মোট ৭.৪ বিলিয়ন ইউরো অনুদান দেয়। তবে বিশ্বের এক নম্বর উন্নত দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে একটি পয়সাও অবদান রাখে নি। সাবেক মার্কিন স্বাস্থ্য অফিসার জেরেমি কোনেনডিক অভিযোগ করেন যে, বিশ্বব্যাপী সঙ্কট মোকাবিলা সম্মেলনে প্রথমের মত অনুপস্থিত মার্কিন সরকার!

জার্মানির টিভি স্টেশন নিন্দা জানিয়ে বলে যে, যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম ট্রান্স আটল্যান্টিক জোটের সম্পর্ক আরও শীতল করে তুলেছে।

গত রোববার কলম্বিয়া ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিখ্যাত আমেরিকান ভাইরোলজিস্ট দাসজাকের-এর নভেল করোনাভাইরাস গবেষণা সরকার কর্তৃক বন্ধ করা হয়। কারণ তাঁর গবেষণাটি জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটস এবং ভাইরাস গবেষণার উহান ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছিল।

তারপর ইন্টারনেট চুরির সমস্যা সম্পর্কে কথা বলা যাক। বিশ্বের কোনও দেশ আজ যুক্তরাষ্ট্রকে "ম্যাট্রিক্স" বলার উপযুক্ত নয় এবং চীন বারবার হ্যাকারের আক্রমণের শিকার হয়েছে। বহু বছর ধরে, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নিয়মগুলো সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করে আসছে এবং বিদেশি সরকার, উদ্যোগ ও ব্যক্তিদের উপর বড় আকারের, সংগঠিত, নির্বিচার সাইবার নজরদারি ও হামলা চালিয়েছে।

চীন সবসময় ভ্যাকসিন গবেষণা ও উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য উন্মুক্ত ছিল। প্রাদুর্ভাবের পর, চীন সময়মতো বিশ্বের দেশগুলির সঙ্গে নভেল করোনাভাইরাস জিনোমের তথ্য ভাগ করেছে, তথ্য ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফলগুলি ভাগাভাগির প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেছে এবং ভ্যাকসিন গবেষণা ও বিকাশে সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চালিয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন ও ওষুধ গবেষণা এবং উন্নয়নে চীন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। চীন সরকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে মোট পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে।

স্পষ্টতই, চীন নভেল করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের গবেষণা ও চিকিৎসায় অবিচ্ছিন্নভাবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং সবসময় উন্মুক্ত ছিল। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের তথ্য চুরি করা দরকার নেই।

(জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040