'ছাত্রছাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা ৩৭.৩ ডিগ্রির চেয়ে বেশি হলে অল্প সময়ের মধ্যে ক্লাসের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জানানো হবে এবং স্কুলে কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।'
চীনের শাংহাই শহরের অনেক শিক্ষার্থীও স্কুলে ফিরে গেছে। শাংহাই ইস্ট শিইয়ান স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী তুং ই জেন সংবাদদাতাকে জানায় যে, স্কুলে ফিরে প্রথম দিন সে সহপাঠীদের অনেক গল্প করতে চায়। তবে নিরাপত্তা বিবেচনায় সে কম কথা বলার চেষ্টা করবে।
'স্কুলে এসে মাস্ক পরা ও হাত ধোয়ার নিয়ম চালু হয়েছে। যদিও অনেক দিন ক্লাসের সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হয় নি, অনেক কথা জমে আছে; তবে পরস্পরের সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবো এবং আরো দুই মাস পর আমার স্নাতক পরীক্ষা শুরু হবে; সেজন্য পরিশ্রমের সঙ্গে পড়াশোনা করবো।'
শাংহাই শহরের নিয়ম অনুসারে দ্বাদশ শ্রেণী ও নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার সময় আলাদা করা হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ৭টা ২০ মিনিট থেকে ৭টা ৩০ মিনিটে আসবে। এরপর, সাড়ে ৭টা থেকে ৭টা ৪০ মিনিটে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা আসবে। স্কুলের মাটিতে প্রতি ১ মিটার দূরে চিহ্ন দেওয়া হয়েছে, যাতে লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে স্কুলে ঢোকা যায়। প্রবেশপথে শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
সাধারণত, স্কুলে শিক্ষার্থীদের ক্যান্টিন থেকে খাবার দেওয়া হয়। অন্য সময় খাবার নিতে সবাই একসঙ্গে দাঁড়াতো বলে জানান স্কুলের ভাইস প্রেসিডেন্ট লিলি। এবার নিয়ম ভিন্ন। তিনি বলেন,
'আগে আমাদের ক্যান্টিন দুই তলা ছিল; আগে প্রতি তলায় প্রায় ৫০০জন শিক্ষার্থী থাকত। মহামারীর কারণে এখন প্রতিটি ক্লাসে পরস্পরের মধ্যে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব থাকবে। তাই যেসব ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম, এমন ক্লাসগুলোকে খাবারের কক্ষ করা হয়েছে এবং অন্য শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনে বসে খাবার খেতে পারবে। আগের ৫০০জন বসার জায়গায় এখন শুধু ১০০জন বসবে।'
স্কুল পুনরায় খোলা এবং মহামারী ঠেকাতে কুয়াংচৌ শহরের বিভিন্ন স্কুলও শিক্ষার্থীদের জন্য 'স্কুলে ফিরে প্রথম ক্লাস' চালু করেছে। কুয়াংচৌ লিওয়ান এলাকার জিনতাও মাধ্যমিক স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী হুয়াং ওয়ে ইয়ান জানায়, বাসায় অনলাইনে পড়াশোনা করার চেয়ে স্কুলের ক্লাসে যেতে সে বেশি আগ্রহী।
'বাড়িতে পরিবেশ ভিন্ন, স্কুলে এসে সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করার চেষ্টা করবো। স্নাতক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেবো এবং আমার সহপাঠীদের মতো নিজের প্রিয় উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চেষ্টা চালাবো।'
জানা গেছে, জিনতাও মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য হাত পরিষ্কারের তরল-সহ বিভিন্ন প্রতিরোধক জিনিস দিয়েছে। এ সম্পর্কে স্কুলের প্রেসিডেন্ট থান তুং মিং বলেন, সুশৃঙ্খলভাবে ক্যাম্পাস পরিচালনা করা এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ভিন্ন সময়সূচি তৈরি করা হয়েছে। এতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা ও স্কুলে যাওয়া-আসা সুবিধাজনক হয়েছে।
এ স্কুলের নবম শ্রেণীর ৮টি ক্লাসে মোট ৪০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুলে শিক্ষার্থী-সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য এখন প্রতি ক্লাসে শুধু ২৫জন শিক্ষার্থী থাকবে এবং ক্লাসের সংখ্যাও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এটি শিক্ষকদের জন্য বড় চাপ হলেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
(সুবর্ণা/তৌহিদ/মুক্তা)