বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলবো।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টে জানায়, নভেল করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর বিশ্বের মোট ৮০টি দেশ ও অঞ্চল মহামারি প্রতিরোধ সামগ্রী রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। তবে চীন এসব দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে নেই। গতকাল (রোববার) অনুষ্ঠিত চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের মহামারি যৌথ প্রতিরোধ প্রেস ব্রিফিংয়ে চীনা শুল্ক সাধারণ প্রশাসনের সমন্বিত সেবা বিভাগের পরিচালক চিন হাই বলেন, শুল্ক বিভাগের পরিসংখ্যান অনুসারে ১ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত, চীন ৫৫ বিলিয়ন ইউয়ানের মহামারি প্রতিরোধ সামগ্রী রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২১.১ বিলিয়ন মাস্ক, ১০.৯ কোটি প্রতিরক্ষামূলক পোশাক, ৩২.৯৪ মিলিয়ন প্রতিরক্ষামূলক চশমা, ৯.২৯ মিলিয়ন তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র, ৭৬৩ মিলিয়ন অস্ত্রোপচার গ্লোভস ও ১.১ লাখ পেশেন্ট মনিটর।
চিন হাই বলেন, চীনের মহামারি প্রতিরোধ সামগ্রী রপ্তানির মূল্য এপ্রিল মাসের শুরুতে প্রতিদিন গড়ে ১ বিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছায়। মধ্য-এপ্রিলে রপ্তানির মূল্য ২ বিলিয়ন ইউয়ান, আর সম্প্রতি তা ২.৫ বিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে। চীনের মহামারি প্রতিরোধ সামগ্রী রপ্তানির পরিমাণ অব্যাহতভাবে বাড়ছে।
চীনের নিজস্ব মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকাজ কঠিন হলেও চীন বিভিন্নভাবে আন্তর্জাতিক সমাজকে সম্ভাব্য সাহায্য ও সমর্থন দিয়ে যাবে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের পরিচালক লি সিং ছিয়ান বলেন, ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষ হচ্ছে অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি। মহামারি প্রতিরোধের যুদ্ধে সবাই এক পক্ষে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি দেশ কঠোর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। তাই চীন কখনো মহামারি প্রতিরোধ সামগ্রী রপ্তানি সীমাবদ্ধ করেনি; বরং বিভিন্ন দেশকে সামগ্রী কেনার জন্য সুবিধা দিয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য চীন থেকে মহামারি প্রতিরোধ সামগ্রী কেনার চ্যানেল উন্মুক্ত রয়েছে, তাদের আমদানির পরিমাণ বাড়ছে। শুল্ক বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩১ মার্চ চীন ২২৪ মিলিয়ন মাস্ক রপ্তানি করেছে, আর ২৪ এপ্রিল এ পরিমাণ ৩.৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১.০৬ বিলিয়ন ইউয়ানে উন্নীত হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৭৪টি দেশ ও অঞ্চল, ৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থা চীনের সঙ্গে মোট ১৯২টি চিকিৎসা সামগ্রী কেনার চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার মোট মূল্য ১.৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তা ছাড়া, আরো ৭২টি দেশ ও ৮টি আন্তর্জাতিক সংস্থা চীনের সঙ্গে চিকিৎসা সামগ্রী কেনার বিষয়ে আলোচনা করছে। চীনের ৩১টি প্রদেশ ১৯১টি দেশ ও অঞ্চলে মহামারি প্রতিরোধ সামগ্রী রপ্তানি করেছে।
লি সিং ছিয়ান বলেন, অনেক দেশ চীন থেকে কেনা সামগ্রীর উচ্চ মূল্যায়ন করেছে। বিভিন্ন দেশের সরকার চীনের চিকিৎসা সামগ্রীর মানের প্রশংসা করেছে এবং চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। তিনি বলেন, চিকিৎসা সামগ্রীর মান মানুষের প্রাণ রক্ষায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর চীন বিশেষ গুরুত্ব দেয়। ৩১ মার্চ চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শুল্ক সাধারণ প্রশাসন ও ওষুধ এডমিনিস্ট্রেশন যৌথভাবে এক বিবৃতি প্রকাশ করে। এতে চিকিৎসা সামগ্রীর গুণগত মান জোরদার করার কথা বলা হয়।
বর্তমানে নন-মেডিকেল মাস্ক বেশি রফতানি হচ্ছে। মাস্কের মান, ব্যবহার অভ্যাসসহ অনেক ক্ষেত্রে চীন ও বিদেশের পার্থক্য রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য চীন এক নির্দেশনায় চিকিৎসা সামগ্রীর উৎপাদন ও রপ্তানি তত্ত্বাবধান আরও জোরদার করার কথা বলেছে।
(তুহিনা/তৌহিদ/মুক্তা)